আগামী চার বছরের পরিকল্পনা গ্রহণের এখনই সেরা সময় : সাকিব

খেলা

 বাংলাদেশের ক্রিকেটকে নতুন করে জাগিয়ে তোলার জন্য ভাল কিছু পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সদ্য সমাপ্ত তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিক শ্রীলংকার কাছে হোয়াইট ওয়াশ হয়ে ফিরেছে তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন টাইগাররা।
সিরিজে এমন ফলাফলে দারুনভাবে হতাশ সাকিব বলেন, সেখানে অন্তত একটি ম্যাচে জয় পেলেও হতাশা কিছুটা কাটানো যেত।

আজ বনানী বিদ্যা নিকেতনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা মুলক কার্যক্রমে অংশ নিতে গিয়ে বিশ্বসেরা এই অল রাউন্ডার বলেন, ‘এখানো লুকোচুরির কিছু নেই। এটি আসলেই হতাশার। বিশ্বকাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে আমাদের ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে বাতিল হয়ে গিয়েছিল। অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন ওই ম্যাচটি হলে আমরা জয় পেতাম। তবে এই সিরিজটি প্রমান করেছে বিশ্বকাপে আমাদের জয় নিশ্চিত ছিল না।’
সাকিব বলেন, ‘এই সিরিজে আমরা যদি একটি ম্যাচে অন্তত জয় পেতাম, তাহলে কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতাম। কিন্তু তা হয়নি। আগামী চার বছরের পরিকল্পনা প্রণয়নের এটাই সেরা সময়।

আমি নিশ্চিত বিসিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা বিষয়টি ভেবে দেখবেন।
বোর্ড ইতোমধ্যে দুইজন কোচ নিয়োগ দিয়েছে। সব কোচ নিয়োগ দেয়া হয়ে গেলে, তারা হয়তো এ বিষয়ে একটি পরিকল্পনা বিসিবি’র কাছে দিতে পারবেন। আমি মনে করি এখান থেকে যদি আমরা সঠিকভাবে কাজ শুরু করতে পারি, তাহলে গত চার বছর ধরে আমরা যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি সেভাবে দল এগিয়ে যেতে পারবে।’
তবে শ্রীলংকায় এই বাজে ফলাফলের কারন সম্পর্কে মন্তব্য করতে অনীহা প্রকাশ করেছেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘এই ব্যর্থতার কারণ কি তা আমি বলতে চাই না। এটি খেলোয়াড় ও টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনার বিষয়। মিডিয়ার সঙ্গে নয়।’
দলে থাকলে বাংলাদেশ এই সিরিজটি জয়লাভ করতে পারতো বলে যে দাবী করা হয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘আপনি সেটি বলতে পারেন না। ক্রিকেট হচ্ছে একটি বলের খেলা। সুতরাং আমি যদি তিন ম্যাচে তিন বলেই আউট হয়ে যাই, তাহলে দলকে কিছুই দিতে পারব না।’


অবসন্নতার কারণে এই সিরিজ থেকে বিশ্রাম পেতে চেয়েছিলেন সাকিব, বোর্ড তার ছুটি মঞ্জুর করে। তবে তার সতীর্থরা ইনজুরি গোপন করে এই সিরিজ খেলতে গিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে টাইগার অলরাউন্ডার বলেন, একজন খেলোয়াড়ের তখনই ক্রিকেট খেলা উচিত যখন তিনি মানসিক এবং শারিরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ থাকেন।
সাকিব বলেন, ‘ভাল খেলার জন্য ফিটনেস হচ্ছে প্রধান অনুষঙ্গ। কোন খেলোয়াড় যদি শারিরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ না থাকেন, তাহলে তার ক্রিকেট খেলা উচিত নয় বলেই আমি বিশ্বাস করি। ওই খেলোয়াড়দের উচিত ফিজিও, ট্রেইনার এবং টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করে নিজের অবস্থা পর্যালোচনা করা। মানসিকভাবে চাঙ্গা হবার জন্য ক্রিকেট থেকে বিরতি নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’


সাকিবের মতে, নিজের অবস্থার জন্য একজন খেলোয়াড় নিজেই দায়ী। তিনিই নিজের অবস্থা সবচেয়ে বেশি বুঝতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘একজন খেলোয়াড় নিজেই প্রথমে নিজের অবস্থা বুঝতে পারবে। এরপর সে এ বিষয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলবেন। যখন একজন খেলোয়াড় বলবেন যে, তার বিশ্রামের দরকার, তখন কোচিং স্টাফ এবং টিম ম্যানেজমেন্টও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবে।’
পরে ডেঙ্গু মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘আমি নিজেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলাম। তাই জানি এটি কতটা ভযঙ্কর। এর কারণে অনেকের প্রাণও গেছে। আশা করি সবাই এ বিষয়ে সচেতনতায় এগিয়ে আসবেন। আমরা সবাই আমাদের বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *