
একটা অন্যায় এবং একজন ভূমিদস্যুর পক্ষ অবলম্বন করে গোটা পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে চলেছেন। সচেতন মহলের প্রশ্ন? ওসি জাকির হোসেনের ক্ষমতা বা খুটির জোর কোথায়? ওসি জাকির হোসেন অর্থের মোহে ভূমিদস্যু আলমগীর সরদারকে রক্ষার জন্য যে মিশন বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন তার সে চেষ্টা কখনো সফল হবে না। কারণ সেই ভূমিদস্যুর ভিডিও ক্লিপ এখন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থা হাতে।
সরোজমিনে গিয়ে ভূমিদস্যু আলমগীরের সাক্ষাৎকার নিয়েছিল মানবাধিকারের প্রতিনিধি দল। দখলবাজ আলমগীর স্বীকার করেছে সে অবৈধভাবে তার ভাইয়ের তিন তলা বাড়ির পুরো ফ্লাটটি দখল করে রেখেছে। সে তার স্বপক্ষে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তার স্বীকারোক্তি মূলক আরো একটি ভিডিও ক্লিপ মানবাধিকার সংস্থার হাতে আছে।

এখন প্রশ্ন? ওসি জাকির হোসেন কেন তাকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন? কেন তিনি খুলনা জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশ মানছেন না। এসপি সাহেব লিখিতভাবে বলেছেন যার বৈধ কাগজপত্র আছে সেই বাড়ির মালিক। অথচ ওসি জাকির হোসেন সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে জামাত শিবিরের সাবেক চেয়ারম্যান খান বজলুর রহমানকে সাথে নিয়ে ভূমিদস্যু জামাত নেতা আলমগীরের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় এবং বিষয়টি চাউর হয়ে পড়ায়
গোটা পুলিশ বিভাগে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
রবিবার ১৫ সেপ্টেম্বর খুলনা জেলা পুলিশ সুপার এস, এম, শফিউল্লাহ সাথে
মানবাধিকারের একটি প্রতিনিধি দল দেখা করেন এবং দখলবাজ ভূমিদস্যু আলমগীরের ভিডিও ক্লিপটি তাকে দেখান। এরপর এসপি সাহেব তাৎক্ষণিকভাবে ওসি জাকির হোসেনের কাছে মোবাইল করেন এবং তাকে বলেন
বৈধ কাগজপত্র যার আছে সেই থাকবে যার নেই সে সেখানে থাকতে পারবেনা। কিন্তু ওসি জাকির হোসেন এসপিকে বিভিন্ন ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন।ঐসময় মানবাধিকারের প্রতিনিধি দল এসপির সামনে বসা ছিলেন। এসপি তাকে বললেন, আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগের পড়াশোনা করেছেন আজ রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। ন্যায় আর অন্যায় কোনটি বোঝার ক্ষমতা আপনার রয়েছে। আপনি কেন একজন অন্যায়কারী দখলবাজ কে প্রশ্রয় দিচ্ছেন? আপনি কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। উদাহরণসহ বললেন, আপনার বাড়ির ভাড়াটিয়া যদি একই পরিস্থিতির সৃষ্টি করত তাহলে তো আপনি তাকে মাজায় দড়ি বেঁধে টানতে টানতে থানায় নিয়ে যেতেন। অথচ আপনারই থানায় একজন অন্যায়কারী মাসের-পর-মাস বছরের-পর-বছর ভাড়া না দিয়ে জবর দখল করে রয়েছে তার বিরুদ্ধে আপনি কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। অথচ ভিকটিম আপনার থানায় জিডি করেছে। এমনকি আমি নিজেও লিখিতভাবে নির্দেশ দিয়েছি। অথচ আপনি সে বিষয়ে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এসপি সাহেব আরো বললেন, আপনার ভাই আমার দপ্তরে এসে আপনার পক্ষে সুপারিশ করেছিল রূপসা থানায় আপনাকে রাখার জন্য। আপনি নাকি সৎ আপনি মানুষের উপকার করেন। অথচ দেখুন, অসহায় মানুষের ন্যায় সঙ্গত দাবীর পক্ষে আপনি কোন ভূমিকা রাখছেন না। বরং ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় ব্যক্তির কাছে আপনি অবৈধভাবে টাকা দাবি করেছেন যা পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। তিনি এইভাবে বলছিলেন, কিছু পুলিশের কারণে গোটা পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। সেটা বর্তমান সরকার চায় না। তিনি তাকে এই বলে সতর্ক করে দেন। আপনি যদি ন্যায় সঙ্গত কাজ করতে না পারেন তা’হলে সেখানে অন্য কাউকে দিয়ে পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষা করা হবে। তিনি উদাহরণস্বরূপ আরো বলেন, ডুমুরিয়া থানার ওসি আমিনুল ইসলাম সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করছেন। আপনি কেন পারছেন না। অসহায় মানুষ বিপদে পড়ে পুলিশের কাছে যায়। আর আপনি তাদেরকে সহযোগিতা না করে বরং তাদেরকে হয়রানি করছেন। এটা কোন অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না। আপনার কারণে গোটা পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে এটা সরকার বা পুলিশ বিভাগ মেনে নেবে না। তিনি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, আমি আপনার থানায় গিয়ে কখনো ভালো-মন্দ খেয়েছি। আমি কি আপনার কাছে কোনো অবৈধ অর্থ দাবি করেছি। আমি আর আমার ডিআইজি স্যার অবৈধ কোন অর্থ আপনাদের নিকট থেকে খায় না। অতএব আমার জেলায় সব পুলিশ অফিসার কে আমি সৎ দেখতে চাই। গোটা পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে চাই। অবশেষে ওসি তাকে আশ্বস্ত করলেন। আর এসপি সাহেব তাকে বললেন, সাত দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি চাই।
এসপি সাহেবের সত্তিকারের এই ভূমিকায় আমরা আস্বস্ত হয়েছি। এবং বিশ্বাস করেছি ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে একজন এসপি গোটা জেলার আমূল পরিবর্তন ঘটাতে পারেন। ফিরিয়ে আনতে পারেন আইন-শৃংখলা। পুলিশ জনগণের বন্ধু, সেবাই পুলিশের ধর্ম এই মহান ব্রত একজন এসপি এস, এম, শফিউল্লাহ এই ভূমিকা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, খুলনাবাসীর অন্তরে। এখন দেখার বিষয় ওসি জাকির হোসেন এসপি সাহেবের শেষ নির্দেশটি মানেন কিনা?