শেখ আলী আকবর, মুন্সীগঞ্জ:
লৌহজংয়ে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট, পত্রিকার (সাংবাদিক) ক্যামেরাপাসনসহ ও মাইক্রোবাস চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের প্রত্যেককে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। রিমান্ড শুনানি না হওয়ায় বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের মুন্সীগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়। এরআগে গত ৯ সেপ্টম্বর সোমবার সন্ধ্যায় তাদেরকে উপজেলার নাগেরহাট বাজার থেকে গ্রেপ্তার করা
হয় এবং সোমবার রাতেই তাদের বিরুদ্ধে লৌহজং থানায় মামলা হয়। তাদের ব্যবহ্নত একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্টো-চ ১৫-১৬৯৮ ) জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট মো. লোকমান হোসেন (৫৮), গাড়ি চালক মো. কবীর হোসেন (২৮), ক্যামেরাম্যান মো. কবির (৪২), কথিত সাংবাদিক
নাজমুল হক (৩৬), সুমন শেখ (২২), মো. রাজ্জাক (৪০) ও শহিদুল ইসলাম সোহেল (৩৫)।
নাগেরহাট বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, তারা সাতজন একটি মাইক্রোবাস নিয়ে বাজারের কয়েকটি মিষ্টির দোকানে মিষ্টি খায় এবং ভেজাল বিরোধী অভিযান চালায়। মিষ্টিতে ভেজাল আছে বলে দোকান মালিকদেরকে জেল জরিমানার ভয় দেখায়।
দোকানিদের সন্দেহ হলে বাজারের লোকজন জড়ো হলে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক টিম পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলে দোকানদাররা তাদের আটক করে থানায় খবর দেয়।
লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসাইন জানান, একজন ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট ও কয়েকজন ভুয়া সাংবাদিকসহ ৭ জন মিষ্টির দোকানে গিয়ে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করলে দোকানিদের সন্দেহ করে আটক করে। খবর পেয়ে
পুলিশ গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসে। দৈনিক চৌকস পত্রিকার সাংবাদিক বলে তারা পরিচয় দেয়। পরে আদালত গত ১৮ই সেপ্টেম্বর ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বহুদিন থেকেই উক্ত ভূয়া সাংবাদিক ও ভূয়া ম্যাজিষ্ট্রেট টিমটি ঢাকা থেকে মাইক্রোবাস নিয়ে মুন্সীগঞ্জ শহরসহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে। এসব ভূয়া সাংবাদিক তাদের চাঁদাবাজির সুবিধার্থে সাথে একজন ভূয়া ম্যাজিষ্ট্রেট রাখে। এমনকি তারা মাঝে মাঝে বিভিন্ন থানায় গিয়েও চাঁদাবাজি করে থাকে। তবে ঐ সময় তারা সাথে কোন ম্যাজিষ্ট্রেট রাখে না। বেশ
কয়েক বছর আগে এমনি একটি ভূয়া সাংবাদিক টিম একটি মাইক্রোবাস নিয়ে বেলা আনুমানিক ১২টার দিকে সিরাজদিখান থানায় এসে তৎকালীন থানার ওসি (ইনচার্জ) এর খোঁজ করতে থাকে। কিন্তু ঐ সময় ওসি সাহেব থানায় উপস্থিত না থাকায় তারা তার জন্য অপেক্ষা করছিলো। ঐদিন সিরাজদিখান থানা
এলাকায় ধলেশ্বরী নদীতে ডাকাতিকালে একজন নৌ-ডাকাতকে এলাকার জনতার
হাতে নিহত হওয়ায় তার সংবাদ সংগ্রহের জন্য আমি সেখানে গেলে উক্ত ভূয়া সাংবাদিক টিমটি আমাকে দেখেই থানা থেকে তড়িঘড়ি বের হয়ে মাইক্রোতে উঠে চলে যাওয়ার সময় তাদের একজনের কাঁধে একটি বেশ বড় আকারের ক্যামেরা দেখে আমার মনে হলো তারা মনে হয় কোন পত্রিকার সাংবাদিক। আমি একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনারা কোথায় থেকে এসেছে? তখন সে আমাকে বলল যে, আমরা অপরাধ চিত্র পত্রিকার স্টাফ।