মাদক সন্ত্রাস, জুয়া ও দেহ ব্যবসা থেকে বাড়ছে অপরাধমূলক কর্মকান্ড-র‌্যাব

ক্রাইম রিপোর্ট


হেলাল শেখঃ
সঠিক সময় সঠিক কাজ করছে বর্তমান সরকার। গত দুই তিন দিন ধরে অবৈধ জুয়ার আড্ডা বা ক্যাসিনো নিয়ে
আলোচনা সবখানে। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে চলছে এসব জুয়া ও মাদক এবং দেহ ব্যবসা, আর এখন ডিএমপি
কমিশনারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ দলীয় নেতাদের অনেকেই বলছেন যে,এসব আর চলতে দেয়া হবে না!
আবার কেউ কেউ বলছেন, যারা এখন এসব বন্ধ নিয়ে ব্যস্ততা দেখাচ্ছেন, এতোদিন তারা কোথায় ছিলেন? দেশের অর্থ
বিদেশে পাচার ও মানুষের সর্বনাশ করে ভিটা মাটি কেড়ে নিয়ে এখন কি লোক দেখানো হচ্ছে ? র‌্যাব জানায়, মাদক
সন্ত্রাস, জুয়া ও দেহ ব্যবসা থেকেই বাড়ছে অপরাধমূলক কর্মকান্ড।
বিশেষ করে থানা পুলিশসহ উপর মহলে শত শত বার জানালেও এসব কেউ বন্ধ করতে পারেনি বলে অনেকেরই অভিমত। বর্তমানে
সংবাদপত্রের প্রথম সংবাদ শিরোনাম হচ্ছে জুয়া, তবে লাখ লাখ মানুষ ধন্যবাদ জানাচ্ছেন র‌্যাব বাহিনীকে। রাজধানীর
বিভিন্ন এলাকায় ও ঢাকা জেলার সাভার, আশুলিয়া এবং গাজীপুর, উত্তরা, মিরপুরসহ প্রায় সারা দেশের জেলা উপজেলার
ইউনিয়ন পর্যায়ে উঠতি বয়সের ছেলে মেয়ে মিলিত কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হয়েছে। মাদক সন্ত্রাস, জুয়া ও দেহ ভোগ
করতে জড়িত হচ্ছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে যুবসমাজ, এসব নেশায় নষ্ট হচ্ছে অনেকেরই জীবন। এসবের টাকা
জোগার করতে জড়িতরা বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, চাঁদাবাজি, প্রতারণাসহ বিভিন্ন
অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে।
র‌্যাব-১ এর বিশেষ অভিযানে এরই মধ্যে ভাই-ব্রাদার্স গ্রæপের ৬ সদস্য, ছিনতাইকারী, ডাকাত ও হত্যা মামলার
আসামীদেরকে আটক করেছেন। বর্তমানে যারা বেশি (ক্রাইম) অপরাধমূল কর্মকান্ড করছে তারা বেশিরভাগই কিশোর গ্যাং
গ্রæপের সদস্য বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান। এর সাথে যোগ হয়েছে প্রেমঘটিত বিষয়ঃ ১২
থেকে ১৮ বছরের ছেলে মেয়ে, ছাত্র ও ছাত্রীর হাতে মোবাইল থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে, তারা খুব সহজেই
অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংঘটিত করতে পারছে। গত ২৮ আগস্ট ২০১৯ইং কিশোর গ্যাং কর্তৃক আশুলিয়ার জামগড়া উত্তর
পাড়া থেকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৯ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে অপহরণ করে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলে এ ব্যাপারে আশুলিয়া
থানায় মামলা করার জন্য ওই ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে অভিযোগ করেন, থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আসামী
পক্ষ ও বাদী পক্ষকে থানায় হাজির হতে বলেন, বিষয়টি রহস্যজনক। এর পরে র‌্যাব-১ এর একটি বিশেষ টিম ডিজিটাল প্রযুক্তি
মোবাইল ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে মোঃ আরমান হোসেন (২০) কে আটক করেন এবং ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। আটককৃত
আরমান হোসেন, জামগড়ার আমিনুর ও আকলিমা বেগমের ছেলে বলে র‌্যাব জানায়।
গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ইং আশুলিয়ার জামগড়ার বটতলা এলাকা থেকে ৪র্থ শ্রেণীর (১১) বছরের এক ছাত্রীকেঅপহরণ করে
রাজবাড়ি এলাকায় নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে নারী লোভী কিশোর গ্যাং এর এক সদস্য, এরপর আশুলিয়ার শাহজাহান মার্কেট
এলাকা থেকে তাকে আটক করে স্থানীয়রা এবং ভিকটিম ছাত্রীকে উদ্ধার করেন। ১১ সেপ্টেম্বর মেয়েটির স্বাস্থ্য পরিক্ষা
করানো হলে, ধর্ষণের প্রমান পাওয়া গেছে বলে তার মা জানান। উক্ত আটককৃত আসামী হলো, কুষ্টিয়া জেলার কমলাপুর
এলাকার মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিবের ছেলে মোঃ হৃদয় হোসেন (১৯), হৃদয় শাহজাহান মার্কেট এলাকার স্থানীয় মামুনের
সালক, অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত হৃদয় কিশোর গ্যাং এর সদস্য, এর আগেও একাধিক মেয়ের সর্বনাশ করেছে এবং একটি
মেয়েকে ধর্ষণ করার পর বিয়ে করে ৩মাস রেখে তাকে তালাক দেয় বলে স্থানীয়রা জানান। হৃদয় বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত
আছে বলে শাহজাহান মার্কেট এলাকার লোকজন জানায়। গত এক মাসে এরকম অনেক ঘটনা ঘটিয়েছে কিশোর গ্যাং এর
সদস্যরা। পত্রিকার পাতায় প্রায়ই দেখা যায় যে, দেশের কোনো না কোনো এলাকায় নারী ও শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা
ঘটছে। সেই সাথে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, চাঁদাবাজি, খুনসহ বিভিন্ন অপরাধ করছে কিশোর গ্যাং এর
সদস্যরা। মাদক, জুয়া ও দৈহিক চাহিদার টাকা জোগাড় করতেই কম বয়সের ছেলে মেয়েরা (ক্রাইম) অপরাধমূলক কর্মকান্ড
করছে বলে অভিমত অনেকেরই।
এদিকে যুবলীগের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে
শামীমকে আটক করেছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ইং) শামীমকে নিকেতনের ১১৩
নম্বার বাসা থেকে আটক করা হয়। শামীম আটকের পর ঢাকার বেশিরভাগ ভিক্ষকদের ভিক্ষা বন্ধ করে তারা বিক্ষোভ করতে
যাচ্ছে। কে এই শামীম? কিসের কারণে ভিক্ষকরা তার জন্য বিক্ষোভ করতে চায়? সারা দেশে অনেক ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতা
আছেন, তারা গরীব অসহায় ও সাধারণ মানুষের ভালোবাসেন, মানুষও ওনসকল নেতাদের খুবই ভালোবাসেন বলে অনেকেরই
অভিমত। অনেকেরই দাবি, প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের আটক করে সাজা দেয়া হোক আর যারা দোষী নয় তাদেরকে যেন হয়রানি

না করা হয়। এদিকে খালেদ গ্রেফতার দল ও যুবলীগকে পঙ্গু করার ষড়যন্ত্র বলে অভিমত প্রকাশ করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর
ফারুক চৌধুরী। র‌্যাব কর্মকর্তা লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেমসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান,
অপরাধী সে যেই হোক না কেন তাদেরকে আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। র‌্যাবের কর্মকর্তাদের দাবি মাদক
সনত্রাস, জুয়া খেলা ও দেহ ব্যবসার কারণে অপরাধমূলক কর্মকান্ড বাড়ছে, এখনই সঠিক সময়, এসবের সাথে যারা জড়িত
কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।###

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *