আশুলিয়ার শ্রীপুরের গেদুরাজ বাহিনীর কাছে এলাকার সাধারণ মানুষ জিম্মী!

ক্রাইম রিপোর্ট

বিশেষ প্রতিনিধি-হেলাল শেখঃ
ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার শ্রীপুর ও শিমুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ এখন ভয়ে মাদক ব্যবসায়ী ও
চাঁদাবাজ সন্ত্রাস বাহিনীর কাছে জিম্মী হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানা শিল্পাঞ্চল হওয়ায় পোশাক শ্রমিক ও কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার
মানুষ দেশের মফস্বল এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে আসেন, এখানে বেশিরভাগ মানুষ বহিরাগত। এ এলাকায় বাসা
বাড়ি ও হাট-বাজার, মার্কেটের দোকানসহ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কৌশলে চাঁদাবাজি করছে গেদুরাজ
বাহিনীর লোকজন। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, প্রায়ই আশুলিয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষের লাশ উদ্ধার করেন
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। খুনি সন্ত্রাসীদের সিন্ডিকেট শক্তিশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউ কোনো
প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না বলে স্থানীয়দের দাবি।
২৩-০৯-২০১৯ইং সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার শ্রীপুর বাজার হইতে আশেপাশের
এলাকা গাজীপুর জেলার সীমান্ত পর্যন্ত ১ আঃ আলিম ওরফে যুবরাজ, ওরফে গেদুরাজ সন্ত্রাস বাহিনীর কাছে
এলাকাবাসী জিম্মী হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে পুরাতন আশুলিয়া হইতে ঘোষবাগ, জিরাবো এবং কাঠগড়া,
নরসিংহপুর, বেরণ ছয়তালা, জামগড়া, শিমুলতলা, ইউনিক বাজার, বগাবাড়ি, বাইপাইল, ভাদাইল, বলিভদ্র বাজার,
(শ্রীপুর) জিরানী বাজার থেকে শিমুলিয়া ইউনিয়নের শেষ সীমান্ত ছনটেকী পর্যন্ত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী
চাঁদাবাজরা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে বলে অনেকেই জানান। কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না ও কেউ
প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে থানা ও কোটে মামলা এবং সাধারণ মানুষের উপর হামলা করা হয়। অনেকেই জানান,
হয়রানিমূলক ভাবে মামলা করাসহ জমি দখল এবং বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতি করা হয় সাধারণ মানূষের। জানা গেছে, জমি দখল,
চাঁদাবাজি, খুন, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করাচ্ছে যুবরাজ ওরফে
গেদুরাজ বাহিনীর অনুসারীরা। স্থানীয়রা জানায়, এসব অবৈধ কাজে বহিরাগত যুবকদেরকে ব্যবহার করা হয়।
গেদুরাজ কারাগারে থাকলে তার বাহিনীর লোকজন কাজ চালিয়ে যায়।
মামলা সুত্র ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, রুবেল, নাদিমসহ স্থানীয় অনেক যুবক বিভিন্ন হামলা, মামলার শিকার হয়ে
এষনও অনেকেই কারাগারে বন্দী আছেন। স্থানীয়রা জানান, এলাকায় কোনো অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলেই দোষী করা হয়
স্থানীয় যুবকদেরকে। একটি মামলায় আসামী করা হয়, ইমরুল, স্বপন, আসাদ, তমাল তারেকসহ কয়েকজনকে, এই
মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আশুলিয়ার সীমান্তে জয়দেবপুর থানার মামলা নং-১২৬ তারিখ ২৬/০৮/২০১৬ ইং
ধারা ৩০২/৩৪ দঃ বিঃ। স্থানীয়দের দাবী-এ মামলায় প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক, আর যারা দোষী নয়
তাদেরকে এ মামলায় হয়রানি না করে অব্যাহতি দেওয়া হোক। আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের ছনটেকী এলাকার
আলমাছ হোসেন জানান, কয়েকদিন আগে তার একমাত্র মেয়েকে হত্যার চেষ্টা করে এলাকার সন্ত্রাসী মাসুদ রানা। এ
ব্যাপারে আশুলিয়া থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা করা হয়েছে, মামলা নং ১।,তারিখঃ ১/০৭/২০১৯ ইং। এ মামলা হওয়ার পর
আশুলিয়া থানার এসআই রামকৃষ্ণ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ছনটেকী এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাসুদ রানাকে
গ্রেফতার করেন। তিনি জানান, মাসুদ রানার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে, এবং তাকে গ্রেফতার করার পর
আদালতে ৭দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়, আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে আসামী মাসুদ রানাকে জামিন দিয়েছেন।
তথ্যমতে আশুলিয়া ও গাজীপুর সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আস্তানা-সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাদক, জুয়া ও
দেহ ব্যবসা জমজমাট ভাবে চলছে। আইনশৃখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অভিযানে কিছু অপরাধী আটক হলেও
আদালত থেকে তারা আবার জামিনে এসে ওই অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে করছে। উল্লেখ্য গত ৯ জানুয়ারি ২০১৭ ইং
সোমবার একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় দেখা গেছে, “ডেথ জোন আশুলিয়া” শিরোনামে কিছু তথ্য রয়েছে যা
প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আশুলিয়া নিরাপদ “ক্রাইম জোন”-এ পরিণত হয়েছে। রাজধানীর নিকটবর্তী শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া
এলাকা, সে সময়ে ১১ মাসে পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে ১২৩টি লাশ উদ্ধার করেছেন। বর্তমানে হিসাব করলে আরও
বৃদ্ধি পাবে বলে অনেকেরই অভিমত। উক্ত ব্যাপারে একজন পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনা করে জানা যায়, কিছু দুষ্টু

লোকের কারণে সমাজ, দেশ ও জাতির ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। দোষী ব্যক্তি সে যেই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে
আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ জানায়, অপরাধী সে যে রাজ হয় হোক তাকে আটক করা হবে। আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, এসব অপরাধীদেরকে আটক করার বিষয়ে সকলের সহযোগিতা
দরকার আছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *