অন্তর আহম্মেদ নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
শিল্পীর রংতুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়ে উঠছে দেবীর রূপ।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে দেবী দুর্গা শক্তি ও সুন্দরের প্রতীক। প্রতিবছর অসুরের বিনাশ করতে মা দেবী দুর্গা এই ধরাধামে আবির্ভূত হয়। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, সমাজ থেকে অন্যায়-অবিচার ও গ্লানি দূর করার জন্যই এই পূজার আয়োজন। এই উদ্দেশ্য সামনে রেখে সারা দেশের মতো নওগাঁ শুরু হতে যাচ্ছে দুর্গাপূজা। আর এ পূজাকে কেন্দ্র করে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। এদিকে উপজেলার হিন্দুধর্মাবলম্বীরা দেবী দুর্গাকে বরণ করতে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ঘরে ঘরে চলছে আনন্দ উৎসব ও পূজার প্রস্তুতি। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ৩অক্টবর শুরু হবে পূজা। দশমীপূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ৮ অক্টোবর উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।
উপজেলার বিভিন্ন দুর্গামন্দির ঘুরে দেখা যায়, শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতিমূলক কাজ প্রায় শেষের দিকে। উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির তথ্যমতে, এবার উপজেলার ১২০টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
কথা হয় নওগাঁ পালপাড়া গ্রামের প্রতিমাশিল্পী সুভাষ চন্দ্রের সঙ্গে। ছোটবেলা থেকে কাদামাটি ও রংতুলির সঙ্গে বেড়ে ওঠা। প্রতিবছর তিনি ২৫ থেকে ৩০ সেট প্রতিমা তৈরির ফরমাশ নেন। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ইতিমধ্যে ৭ সেট প্রতিমা বিক্রি দিয়েছেন তিনি। প্রতি সেট প্রতিমা তৈরিতে ব্যয় হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। বিক্রি করেন ২৫ হাজার টাকায়।
নওগাঁ উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিভাষ মজুমদার ও সভাপতি, নির্মল কৃষ্ণ সাহা ‘আমরা পূজা উদ্যাপন পরিষদের পক্ষ থেকে দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন করতে প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।’ তাঁরা জানান, এবার উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে মোট ১২০টি মণ্ডপে পূজা উদ্যাপিত হবে। এর মধ্যে ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপকে বিশেষ নজরদারিতে রাখার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শষ্টিতলা রক্ষা কালি মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি অলিফ কুমার ঘোষের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার তাঁদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছে। তাই এবারের পূজায় তাঁদের আনন্দও বেশি হবে।
পূজা সামনে রেখে সম্ভাবনার কথা জানালেন নওগাঁ থানার ওসি সরোয়ারদ্দী । তিনি বলেন, হিন্দুধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সজাগ দৃষ্টি রাখছে। তাদের পক্ষ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী উপপরিদর্শকদের (এএসআই) বিভিন্ন মণ্ডপের দায়িত্ব দিয়ে নিয়মিত টহল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি সব কটি পূজামণ্ডপ গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। অন্য বছরের চেয়ে এবার জোরালো প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না এবারের পূজায়। তবে এ জন্য তিনি সব স্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন।