হেলাল শেখঃ
ঢাকার আশুলিয়ায় অবস্থিত নয়নজুলি খালটি প্রভাবশালীদের দখলে। প্রভাবশালীদের কাছ থেকে খালটি উদ্ধার না করলে
এলাকার বাসা বাড়ি, কলকারখানা ও রাস্তা-ঘাট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাড়াবে। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তায় হাটু পানি হয়,
এতে মানুষের বসবাস করতে নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে খালটি দখলমুক্ত
ও পূর্ণউদ্ধারের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এবং বিভিন্ন মহলের উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে শনিবার ১২
অক্টোবর ২০১৯ইং এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে মানববন্ধনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ
করবেন বলে স্থানীয়রা জানান।
তথ্যমতে, ঢাকার অতি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা শিল্পাঞ্চল সাভার উপজেলা। সাভারে রয়েছে ৩টি থানা, ট্রাফিক পুলিশের
ঢাকার ট্রাফিক জোন, শিল্প পুলিশ-১ এর কার্যালয়, র্যাব-৪ এর ক্যাম্প, ডিবি পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও
সেনাবাহিনী। এখানে শুধু আশুলিয়ায় সরকারি খাস জমি ও নয়নজলিসহ ৮টি খাল বেদখলে রয়েছে এবং ড্রেনেজ
ব্যবস্থা না করায় এলাকার শত শত শিল্পকারখানার ময়লা ও বিষাক্ত মেডিসিনের পানি রাস্তায় ফেলার কারণে পরিবেশ দূষণ
হচ্ছে, এতে এলাকার লাখ লাখ মানুষের রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে অনেকেরই
অভিযোগ। উক্ত এলাকায় জনস্বার্থে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র হস্তক্ষেপ কামনা করছেন
এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আশুলিয়ার বাইপাইল থেকে বগাবাড়ি, ইউনিক, শিমুলতলা, জামগড়া, বেরুণ
ছয়তলা, সরকার মার্কেট, নরসিংহপুর, জিরাবো, পুরাতন আশুলিয়া পর্যন্ত শত শত কারখানা ও বাসা বাড়ি রয়েছে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জামগড়া এলাকায় ফ্যান্টাসি কিংডম ও ষ্টারলিং গ্রæপ, শারমিন গ্রæপ, আই, ডি
এস, সিলভার স্টাইল এন্ড ডিজাইন লিঃসহ শত শত কারখানা। বেশিরভাগ এলাকায় ড্রেনে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা নেই,
অনেক এলাকায় ড্রেনই করা হয়নি, অপরিকল্পিত প্লানিং ছাড়া বাসা বাড়ি তৈরি করাসহ সরকারি নিয়মনীতির
তোয়াক্কা করছে না বেশিরভাগ বিল্ডিং মালিক। দেখা যায়, বাসা বাড়ির চেয়ে রাস্তা অনেকটা নিচু, সামান্য বৃষ্টি
হলেই রাস্তায় হাটু পানি হয়ে যায়। সেই সাথে বাসা বাড়ি ও কিছু কারখানার ময়লা আবর্জনা ফেলে রাস্তা নষ্ট
করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তথ্যমতে, ১। নয়নজুলি খাল-জামগড়া থেকে আশুলিয়া তুরাগ নদী পর্যন্ত ৭ কিঃ মিঃ, ২। নলীর খাল, সাভার ক্যান্টঃ হইহে
বংশাই নদী পর্যন্ত ৬ কিঃ মিঃ, ৩। ডসরতলীর খাল, ডসরতলী থেকে বারল খাল পর্যন্ত ৪কিঃ মিঃ, ৪। বারল খাল, চক্রবর্তী
থেকে বংশাই নদী পর্যন্ত ৬ কিঃ মিঃ, ৫। কহুার খাল, কন্ডা থেকে সুবন্দী পর্যন্ত ৩ কিঃ মিঃ, গাজীবাড়ি খাল,
নন্দনপার্ক থেকে সুবেদী পর্যন্ত ৫ কিঃ মিঃ, ভারারিয়ার খাল, শিমুলিয়া হইতে নলাম পর্যন্ত ৪ কিঃ মিঃ, গাজারিয়ার
খাল, ইয়ারপুর থেকে মনসন্তোষ তুরাগ পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার সরকারি খাল বেশিরভাগ জায়গা বেদখলে রয়েছে।
অনেকেই খালের দু’পাশের পাড় মাটি ফেলে স্থাপনা তৈরি করে রেখেছে। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট একাধিকবার ভ্রাম্যমান
আদালতের মাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযান চালালেও কোনো সুফল হয়নি।
উক্ত ব্যাপারে আবেদন করা হয়, ১, তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী, সওজ, ঢাকা সড়ক সার্কেল, এলেনবাড়ী, ঢাকা। ২, উপ-
বিভাগীয় প্রকৌশলী, সওজ, সড়ক উপ-বিভাগ কল্যাণপুর, ঢাকা। ১, ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয় (রাজস্ব শাখা)-
ফর্দ ২। নির্বাহী প্রকৌশলী সওজ ফর্দ ১। এবং বিজিএমই অফিসের অবগত করে সংযুক্ত কপি দেয়া হয়েছে
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোয়েন্দা সংবাদ সোসাইটি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থা’র
মাধ্যমে, সেই সাথে “ ন্যাশনাল জার্নালিস্ট ইউনিটি” (সাভার উপজেলা), বিভিন্ন টিভি মিডিয়া, প্রিন্ট
মিডিয়ার সংবাদিকগণ কাজ করছেন।
এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থার আশুলিয়া থানার শিমুলিয়া ইউনিয়নের সভাপতি
আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল করিম চিশতি (মেম্বার) বলেন, কিছু দুষ্টুলোক ও প্রভাবশালী ব্যক্ত্ধিসঢ়; সরকারি জায়গা জমি
এবং খাল বিল দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করে ফায়দা লুটছে। এসব প্রভাবশালীদের সন্ত্রাসী দাঙ্গা বাহিনী
রয়েছে। কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সাহস করেন না। এসব বাহিনীর বিরুদ্ধে থানায় একাধিক জিডি ও
অভিযোগ এবং মামলা রয়েছে। মামলা হলেও তারা আদালত থেকে জামিনে এসে আবার সেই অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে
থাকে বলে করিম চিশতি জানান। এ বিষয়ে “ন্যাশনাল জার্নালিস্ট ইউনিটি’র (সাভার উপজেলা) সাধারণ সম্পাদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম হেলাল শেখ জানান, সরকারি খাল, বিলসহ যেকোনো সম্পদ বেদখলকারীদেও আইনের আওতায়
আনতে হলে সকলের সহযোগিতা দরকার, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে প্রধানমন্ত্রী বলে দিলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া
সম্ভব। তাই এ ব্যাপারে সাভার ও আশুলিয়ার জনগণের ভোগান্তি থেকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র হস্তক্ষেপ
কামনা করছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে আশুলিয়ার সহকারি কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তাজাওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ
বলেন, নয়নজুলি খাল উদ্ধার করার জন্য সরকারিভাবে আমাদের সকল প্রকার প্রস্তুতি চলছে, অক্টোবর মাসের শেষের দিকে
নয়নজুলি খালটি উদ্ধারের জন্য অভিযান চালানো হবে। এ অভিযানের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে
গণমাধ্যম কর্মীরাসহ এলাকাবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন এই কর্মকর্তা।
উক্ত ব্যাপারে ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য, ত্রান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান
বলেছেন, আশুলিায়ার জনগণ ও এলাকাবাসী সহযোগিতা করলে নয়নজুলি খাল উদ্ধারসহ জনস্বার্থে প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নেয়া হবে।