নির্দ্দিষ্ট নিয়মে খেলে যাওয়াই আমার কাজ : রোহিত শর্মা

খেলা

রোহিত শর্মার দুই ইনিংসে সেঞ্চুরিতে ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে জয়লাভ করেছে ভারত। এই জয়ের পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় ওপেনার শর্মা বলেন, তার চেষ্টা থাকে শুধু খেলে যাওয়া, ‘দলের চাহিদা মোতাবেক নিদ্দিষ্ট নিয়মে খেলে যাওয়া।’
প্রোটিয়াদের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে ৩২ বছর বয়সি শর্মা প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরিসহ ১৭৬ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত ব্যাট চালিয়ে সংগ্রহ করেন ১২৭ রান। ম্যাচে ২০৩ রানে জয়লাভ করে ভারত।
ম্যাচ সেরার পুরস্কার গ্রহণের পর মুম্বাইয়ের এই স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান বলেন, ‘এখানে আমার কাজ হচ্ছে নির্দ্দিষ্ট নিয়মে খেলে যাওয়া। এটিই হচ্ছে আমার কাছে দলীয় প্রত্যাশা। আর আমিও চেষ্টা করি সেটি পূরণের।’
সীমিত ওভারে ভারতীয় দলের এই সহ-অধিনায়ক বলেন, দীর্ঘ ভার্সনের ক্রিকেটে ওপেনিংয়ে ব্যাট করা তার জন্য আকস্মিক কিছু নয়, কারণ কয়েক বছর আগেই জানতেন তার যাত্রা পথে এমন একটি সুযোগ আসবে। রোহিত শর্মা বলেন, ‘কয়েক বছর আগেই আমি বলেছিলাম যে কোন এক সময় আমি ওপেনিং করতে নামব। দল আমার কাছ থেকে তেমনটাই প্রত্যাশা করেছিল। এমনকি নেটের অনুশীলনেও আমি নতুন বল ব্যবহার করতাম। তাই আমি এটিকে বিস্ময়কর বলব না। ওপেনিংয়ে ব্যাট করা আমার জন্য দারুণ একটি সুযোগ। এই সুযোগ দেয়ার জন্য এবং আগে যেটি করিনি সেটির জন্য আমাকে বিবেচনা করার জন্যও আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
সতর্কতার সঙ্গে আগ্রাসী ব্যাটিং করাটা নিজের সফলতার মূল মন্ত্র বলে মনে করেন শর্মা। এই ম্যাচে ১৩টি ছক্কা হাঁকিয়ে বিশ্ব রেকর্ডও গড়ে নিয়েছেন রোহিত শর্মা। ম্যাচের জন্য সচেতনতাও জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘লাল, নাকি সাদা, আপনি কোন বলে খেলছেন সেটি সেটি বিষয় নয়। শুরুতে আপনাকে সাবধান থাকতে হবে। মূল খেলার প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। বাইরের বল ছেড়ে দিতে হবে, মূল কাছের বলগুলোকে খেলতে হবে। মূলত পরিস্থিতি বিবেচনা করে খেলতে হবে। সতর্কতার সাথে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ই আমার মুলমন্ত্র।’
শর্মার দ্বিতীয় ইনিংসের সেঞ্চুরিটি এসেছে ১৪৯ বলের বিপরীতে। যেখানে ১০টি বাউন্ডারী ও সাতটি ছয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। রোহিত শর্মা বলেন, ‘দ্বিতীয় ইনিংসে আমি চেষ্টা করেছি কিছু শট খেলতে। কিছু কিছু ব্যাটে এসেছে আবার কিছু বল ব্যাটে আসেনি। এ সময় বোলাররাও কিছুটা বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বল করেছে। তবে আমি নিজেকে বুঝিয়েছি। মনে হয় ভাগ্য আমাকে সাহসী করেছে।’
ওই ইনিংসে তিনি গড়েছেন নতুন একটি রেকর্ড। প্রথমবারের মত টেস্টের ওপেনার হিসেবে তিনি দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। সেই সঙ্গে হাঁকিয়েছেন ১৩টি ছক্কা। এই রেকর্ড প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে রোহিত বলেন, ‘মজা করা এবং দলকে ভাল একটি অবস্থানে পৌঁছে দেয়ার দিকে মনোযোগী ছিলাম। আমার চেষ্টা ছিল সেরাটা খেলার প্রতি। আমার মনোযোগ ছিল এই টেস্টে দলকে জয়ী করা। আজ সবকিছুই যেন সঠিকভাবেই হয়েছে।’
এই ম্যাচ জয়ের আরেক কারিগর মোহাম্মদ সামি, যিনি প্রত্যাবর্তন করেই দ্বিতীয় ইনিংসে সংগ্রহ করেছেন ৫ উইকেট। তিনি বলেন, ‘উইকেট স্লো ও নীচু হওয়ায় এখানে ব্যাট করাটা কঠিন ছিল। আমাদের পরিকল্পনা ছিল দুই ফাস্ট বোলার যেন শুধু স্টাম্পকেই লক্ষ্যবস্তু বানায়। বিগত চার পাঁচ বছর ধরেই আমরা একে অপরকে এভাবেই সহযোগিতা করে আসছি। দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা বৈচিত্রময় বাউন্স ও রিভারর্স সুইপ থেকে সুবিধা পেয়েছি। আমরা অস্বস্তিতে থাকা ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে বল করেছি স্টাম্প লক্ষ্য করে। এর ফলও আমরা পেয়েছি।’
যত দ্রুত সম্ভব প্রতিপক্ষের চার পাঁচটি উইকেট সংগ্রহ করাটাও এই ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। প্রথম ইনিংসে অশ্বিন অবশ্যই আমাদের জন্য দারুণ কাজ করেছেন। আমরা যত বেশি স্টাম্পে বল করবো তত বেশি ব্যাটসম্যানকে শিকারে পরিণত করতে পারব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *