রোমান আহমেদঃ শ্রীপুর গাজীপুর
গত বছরের ৮ মার্চ ২০২০ইং বাংলাদেশে এক অদৃশ্য ঘাতক করােনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়। অতপর ১৮ই মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য জানায় রােগতত্ত্ব , রােগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ( আইইডিসিআর ) । মরণঘাতী ভাইরাসটির বিস্তার রােধে ওই বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘােষণা করে সরকার । এরপর সংক্রমণ পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি না হওয়ায় দফায় দফায় ছুটি বাড়ানাে হয় । চলতি বছরের শুরুর দিকে সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে কয়েক দফা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি ।
গত ০৫ই সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এক প্রজ্ঞাপনে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমে আসায় দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার নির্দেশনা মোতাবেক সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য ১৯ টি নির্দেশনা প্রদান করেন যেখানে আছে সকল প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথসহ অন্যান্য স্থানে কভিড-১৯ অতিমারি সম্পর্কিত সরকার কর্তৃক স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয় সমুহ ব্যানার বা অন্য কিছুর মাধ্যমে প্রদর্শন করতে হবে।
সর্বোচ্চ নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য শিক্ষকদের খেয়াল রাখতে হবে।মাস্ক,স্যানিটাইজার ও শরীরের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের কমানোর জন্য যে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশপথ একটি সে স্থানে দুইটি বা প্রয়োজন অনুযায়ী বৃদ্ধি করা।প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথমদিনে শিক্ষার্থীদের আনন্দ-ফুর্তি নিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানাতে হবে।এছাড়াও আরও অনেক কিছু।
আজ সারাদেশের ন্যায় গাজীপুর জেলার স্কুল, কলেজ গুলোতে ফিরেছে সতেজতা, ফিরেছে শ্রেণিকক্ষে বসে শিক্ষার্থীদের প্রাণচাঞ্চল্য হাসি। দেখে যেনো বুঝা যাচ্ছে শ্রেণিকক্ষগুলো তালা খুলার পর ঘন্টার টুংটাং আওয়াজে প্রাণ ফিরে পেয়েছে শিক্ষাব্যবস্থা মুক্ত হয়েছে শিক্ষা জীবন। সরকার স্কুল – কলেজ খােলার সিদ্ধান্ত জানানাের পর ঢাকাসহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রস্তুতি শুরু হয় । তারি ধারাবাহিকতায় গাজীপুরের শ্রীপুরের সকল স্কুলগুলোতে নেয়া হয় প্রস্তুতি। সরকারের নির্দেশনা মােতাবেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলােতে শুরু হয় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম । দেয়ালে বসানো হয়েছে বিভিন্ন ধিক নির্দেশনা। রুমের বাহিরে ডাস্টবিন। ক্লাস রুমে রাখা হয় হেন্ডসেনিটাইজার।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় আজ গাজীপুরের শ্রীপুর বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে আনন্দের ছোয়া লেগে আছে অনেক শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায় তার অনেকেই স্কুল খুলা হবে বলে গতকাল রাতে অনেক তারাতাড়ি ঘুমাতে গিয়েছে কারণ রাত পোহালেই স্কুলে যাবে। উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিশুতোষ বিদ্যাঘর ঘুরে দেখাযায় রুটিন অনুযায়ী চলছে শ্রেণি কক্ষের পাঠদান কার্যক্রম। মানা হয়েছে আসন বিন্যাস সহ সকল স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিশ্চিত করা হয়েছে মাস্ক ব্যবহার। শিক্ষার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপার জন্য থার্মোমিটার সহ স্যানিটাইজারের সু – ব্যবস্থা করা হয়। এতে অভিভাবক মহলও অনেক আনন্দিত উৎফুল্ল। অন্যদিকে শ্রীপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের গেটের সামনে শ্রীপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পধান শিক্ষক মনিরুল হাসান মন্ডল ছাত্র,ছাত্রীদের নিরাপদ দূরত্তে সারি করে দার করিয়ে টেম্পারেচার মেপে ক্লাস রুমে প্রবেশ করাচ্ছেন। তার আগে তিনি ছাত্র, ছাত্রীদের সেনিটাইজ সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেন।এদিকে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে ইকবাল সিদ্দিকী স্কুলএন্ড কলেজে সশরীরে ক্লাসে উপস্থিত হতে পেয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আনন্দ-ফুর্তি।ক্যাম্পাস মুখরিত বর্ণীল ব্যানারে! যেখানে ভিন্ন ভিন্ন স্বাস্থ্য সুরক্ষার ম্যাসেজ। সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য বিধি স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে চলছে শ্রেণি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রমএদিকে শ্রীপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা একি ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। ছয় ফুটের বেঞ্চে দুজন করে বসানাে হয় । সরকারি নিয়ম মােতাবেক প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দুটি বিষয়ে ক্লাস নেওয়া হয়। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে কেনা হয়েছে সুরক্ষা সামগ্রী । নিয়মিত বিদ্যালয়ের ভেতর ও বাইরে পরিষ্কার – পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হয় । করােনা ও ডেঙ্গু থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়।
