রাজশাহীতে ১৮ মাস পর ক্লাসে ফিরলো সাড়ে চারলক্ষ শিক্ষার্থী

শিক্ষা

মাসুদ রানা রাজশাহীঃ রাজশাহীতে শিক্ষার্থীরা অবশেষে দেড় বছর পর শ্রেণিকক্ষে ফিরলো। দিনের হিসেবে ৫৪৪ দিন পর। দিনের শুরুতে রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন  এলাকাতেই দেখা গেছে পথে পথে ছেলেমেয়েরা হেঁটে যাচ্ছে। কেউ অভিভাবকের সাথে। কেউ সহপাঠীদের সাথে দল বেঁধে। কেউবা একাকী। তাদের পরনে স্কুলপোশাক। পিঠে ব্যাগ।
রাজশাহী শিক্ষা অফিস সূত্র বলছে- রাজশাহীতে সরকারি প্রথামকি বিদ্যালয় রয়েছে ১ হাজার ৫৮টি। এই সব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী দুই লাখ ৫৮ হাজার ৯০৬ জন। এছাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৫৪৭টি। এর শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ। সবমিলে প্রায় চার লাখ ৫৮ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী স্কুল যাচ্ছে।
রাজশাহী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানান, বিদ্যালয়ের পরিবেশ ঠিক আছে। শিক্ষার্থীর উপস্থিতিও ভালো। অনেক শিক্ষার্থীর সাথে অভিভাবকও এসেছেন। তারা দেখছে- তাদের ছেলে-মেয়েরা কেমন পরিবেশে ক্লাসে বসছে। অভিভাবকরা সন্তষ প্রকাশ করেছে।
রাবিয়া ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমাদের স্কুল নয়টার পর থেকে ক্লাস শুরু হবার কথা। কিন্তু আটটার আগেই অনেক শিক্ষার্থী এসেছে। স্কুলের অনেক ছাত্রছাত্রী এসে ঘুরে যাচ্ছিল, সত্যিই স্কুল খুলছে কী না সেটা দেখতে।’
যে সব শর্তে স্কুল খুলেছে:গত ৩রা সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ১২ই সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশের সব স্কুল কলেজ খুলে দেয়ার ঘোষণা দেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ থেকে মূলত প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক ও মাদ্রাসাসহ সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই খুলে দেয়া হচ্ছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগামী ১৫ই অক্টোবর থেকে খুলে দেয়ার কথা রয়েছে।
তবে, স্কুল খোলার ১৯ দফা শর্ত জুড়ে দেয় সরকার। এসব শর্ত ঠিক মতো পালিত হচ্ছে কিনা বা স্কুল খোলার পর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি কেমন হয় তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে কর্তৃপক্ষ। এসব শর্ত অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানের সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাইকে সবসময় মাস্ক পরতে হবে।
শিক্ষার্থীদের তিন ফুট শারীরিক দূরত্বে রাখা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিদিন নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করার কথা আছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রেণি কক্ষে ৫ ফুটের চেয়ে ছোট আকারের বেঞ্চিতে একজন ও এর চেয়ে বড় আকারের বেঞ্চিতে দুজন শিক্ষার্থী বসানো যাবে।
কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম দিকে পাবলিক পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরাই বেশি আসবে। বাকিদের স্কুলে আসার জন্য রোটেশন সিস্টেম অর্থাৎ আজ যারা আসবে তারা কাল আসবে না-এই নীতি অনুসরণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আর এভাবেই চলবে শিক্ষিত প্রতিষ্ঠান। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *