সাইফুল ইসলাম জয়ঃ সারাদেশে ভুয়া ডিবি পুলিশসহ প্রতারক চক্র সক্রিয় হওয়ায় বাড়ছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড। গাজীপুর ও ঢাকার সাভার, আশুলিয়ায় প্রতারক চক্রের ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে এর আগে ১০জনকে গ্রেফতার করে র্যাব-৪। অনেকেই আদালত থেকে জামিনে এসে আবারও সেই অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে বলে সূত্র জানায়।
জানা গেছে, এর আগে র্যাব-৪ এর বিশেষ একটি দল আশুলিয়া ও কালিয়াকৈর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০জন প্রতারক ভুয়া ডিবি পুলিশকে গ্রেফতার করে। ঘটনার দিন রবিবার বিকেলে সাভারের নবীনগর সিপিসি-২, র্যাব-৪ এর কার্যালয়ে ১০জন ভুয়া ডিবি পুলিশকে গ্রেফতারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন কোম্পানি কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খাঁন। এরপর তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
র্যাব-৪ এর কোম্পানী কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খাঁন জানান, আশুলিয়া ও গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় এই চক্রটি ভুয়া ডিবি পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বাসা বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানসহ গাড়িতে ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছিলো। র্যাব-জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনার দিন রবিবার ভোর রাতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আশুলিয়া ও কালিয়াকৈর পৃথক অভিযান চালিয়ে ১০জনকে আটক করা হয়। এসময় ডাকাতি কাজে ব্যবহত ১টি প্রাইভেটকার, একটি অটোরিক্সা, তিনটি ওয়াকিটকি, এক জোড়া হ্যান্ডকাফ, এটি বেতের লাঠি, ১২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, বগুড়ার আশরাফুল (৩২), শেরপুরের রুবেল (৩০), কিশোরগঞ্জের আরিফুজ্জামান শরিফ (৩৮), নেত্রকোণার রফিকুল ইসলাম (৩০), নড়াইল জেলার রুবেল মুন্সী (৩২), শেরপুর জেলার সাকিব (১৯), জামালপুরের ইউসুফ (২৫), কুষ্টিয়ার আবু তাহের (৩৮), টাঙ্গাইলের সুমন মিয়া (২৩)। জানা গেছে, সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, উত্তরা, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ৭-৮টি গ্রæপ রয়েছে এই প্রতারক চক্রের। তারা কখনো ভুয়া ডিবি পুলিশ, কখনো ভুয়া কথিত সাংবাদিক, কখনো ভুয়া উকিল, কখনো ভুয়া মানবাধিকার কর্মকর্তা সেজে ফিটিংবাজি, চাঁদাবাজি, অপহরণ, ছিনতাই, ডাকাতি, প্রতারণাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে এরূপ ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয়দানকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর জোড়ালো সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। জানা গেছে, কাশিমপুরের বাগবাড়ি ও আশুলিয়ায় আরও একটি চক্র রয়েছে, এই চক্রের সদস্যরা প্রাইভেটকার ও বিভিন্ন গাড়ি দিয়ে র্যাব, ডিবি ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ডাকাতি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে আসছে। এই সিন্ডিকেটের সাথে অনেকেই জড়িত আছে বলে সূত্র জানায়। এই চক্রের বিভিন্ন গ্রæপ ও বাহিনী রয়েছে, তারা বিভিন্ন কৌশলে মানুষকে জিম্মি করে স্বর্ণ ও নগদ অর্থসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে রিজাউল নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, তার কাজ থেকে একটি প্রতারক চক্র প্রায় ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। উক্ত প্রতিবেদন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে। আগামী পর্বে কিছু সন্ত্রাসী ছিনতাইকারী ও প্রতারকের নামসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
