মানবতার ফেরিওয়ালা,পুলিশ বাহিনীর গর্ব ও সাংবাদিকদের বন্ধু ডিআইজি হাবিবুর রহমান

সারাদেশ


হেলাল শেখঃ মানবতার ফেরিওয়ালা, মানবিক পুলিশের গর্ব ও প্রকৃত সাংবাদিকদের বন্ধু ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান। বিশেষ করে মাদকাসক্তদের সুস্থ জীবনে ফিরতে হবে বলে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মাদকাসক্তদের সুস্থ জীবনে ফিরতে ‘ওয়েসিস’ এক মরুদ্যান বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি (উপ মহাপরিদর্শক) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। মাদকাসক্তদের সু-চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ সুন্দর স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে মাদকাসক্তি নিরাময় ও মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ কেন্দ্র ‘ওয়েসিস’ মরুভূমিতে যেন এক মরুদ্যান বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেছেন, ‘মাদকের ভয়াবহ ছোবলে আমাদের তরুণ সমাজের অনেকে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। তাদেরকে মাদকমুক্ত করে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এজন্য মাদক নিরাময় ও পূনর্বাসন কেন্দ্র ‘ওয়েসিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সত্যিকার অর্থেই এ যেন মরুভূমিতে এক মরুদ্যান।’ এর আগে ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রকল্পে ‘ওয়েসিস’ এর উদ্বোধন করা হয়। মাদকাসক্তদের সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার প্রত্যয়ে বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করা হয়। ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান ‘ওয়েসিস’ এর পরিচালনা পরিষদের সভাপতি।
উক্ত ওয়েসিস উদ্বোধনকালে ডিআইজি হাবিবুর রহমান মাদককে একটি সামাজিক সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে সামাজিকভাবেই এর সমাধান করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রটি স্থাপনের পটভূমি তুলে ধরে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি বলেন, ‘মাদকের ভয়াবহ ছোবলে পড়ে আমাদের তরুণ সমাজের অনেকেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। তাদেরকে মাদকমুক্ত করে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আইজিপি মহোদয়ের সার্বিক দিকনির্দেশনা ও তত্ত¡াবধানে আমরা ওয়েসিস করেছি। ডিআইজি হাবিবুর রহমান আরও বলেন, ‘মাদকাসক্তদের চিকিৎসায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্বলিত সাততলা ভবনের ৬০ শযয্যার ওয়েসিস মনোরোগ চিকিৎসক, সাইকোলজিস্ট, সাইকোথেরাপিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্ট, ইয়োগা এক্সপোর্ট এবং অ্যাডিকশন কাউন্সেলরদের মাধ্যমে বিশ্বমানের সমম্বিত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। এখানে পুরুষ এবং মহিলা রোগীর জন্য পৃথক ভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া ওয়েসিস-এর চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক তদারকি, স্বতন্ত্র কাউন্সেলিং সেশন, উন্নতমানের শরীর চর্চা কেন্দ্র, বিনোদন সুবিধা, ইনডোর ও আউডডোর গেমস, কর্মমূখী প্রশিক্ষণ ও জীবনধর্মী শিক্ষামূলক নানা আয়োজনের ব্যবস্থা আছে সেখানে। মাদকাসক্তদের সু-চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ সুন্দর স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে ‘ওয়েসিস’ যেন সত্যিকার অর্থেই মরুভূমিতে এক মরুদ্যান।’ এর আগে দুপুরে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রটির উদ্বোধন করা হয়। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আরও উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আজিজুল ইসলামসহ আরও অনেকে। এই অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে মাদক তৈরি হয় না কিন্তু আমরা এর ভয়াবহতার শিকার। মাদক থেকে যদি যুবসমাজকে বিরত না রাখি তাহলে এর পরিণতি কী হবে তা আমরা দেখেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খা বাহিনীর চৌকস অফিসারদের অভিযান পরিচালনা করে আমরা মাদক সন্ত্রাস ও জঙ্গি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে যুদ্ধ করে সফল হচ্ছি। এখন মাদকের বিরুদ্ধেও আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, ‘যারা মাদকাসক্ত তাদের জীবনে কি হবে? আমরা তাদেরকে সুস্থ জীবনে ফিরাতে চিকিৎসা দিতে চাই। পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে ‘ওয়েসিস’ স্থাপনের উদ্যোগের প্রশংসা করেন মন্ত্রী।
এর আগে গত বছর শীতে ডিআইজি হাবিব তাঁর নিজস্ব অর্থায়নে উত্তরণ ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে ঢাকা বিভাগের রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনকর্মীদের মাঝে বিপুল পরিমাণ কম্বল বিতরণ করেন। (১৬জানুয়ারি ২০২১ইং) দুপুরে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান এর উপস্থিতিতে এসব কম্বল বিতরণ করা হয়। এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, অসহায় যৌনকর্মীদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলার দিন শেষ। তারা সুবিধা বি ত, তাদের এই দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে কেউ কোনো ফায়দা লুটতে চাইলে তার পরিণতি ভালো হবে না। তিনি সবাইকে সাবধান করে দেন, আরও বলেন, আপনারা সাবধান হোন। রাজবাড়ী জেলার সাধারণ মানুষদেরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখতে প্রয়োজনে সকল পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হবে, দুষ্টু প্রকৃতির অনেক মানুষ আছেন এই জেলায়, কিন্তু তাদেরকে আগে থেকেই সাবধান করে দিচ্ছি, “হয় আপনারা থাকবেন না হয় রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার থাকবে” সময় আছে এখনো আপনারা খারাপ পথ থেকে বের হয়ে এসে সাধারণ ভাবে জীবন যাপন করুন।
দৌলতদিয়ায় ১৩শ’ (১৩০০) শীতার্ত যৌনকর্মীকে কম্বল দেন ওইদিন। এই কম্বল বিতরণের সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি লাভলী চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সালাউদ্দিন, শেখ শরীফ-উজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ-আল তায়াবীর, দৌলতদিয়া পূর্বপাড়া অসহায় নারী ঐক্য সংগঠনের সভানেত্রী ঝুমুর বেগম, দৌলতদিয়া মুক্তি মহিলা সমিতির চেয়ারম্যান মর্জিনা বেগমসহ জেলা, থানা পুলিশ অফিসারগণসহ আরও উপস্থিত ছিলেন অর্ধশতাধিক পুলিশ সদস্য। এ সময় শীতার্ত যৌনকর্মীরা কম্বল হাতে পেয়ে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে সম্মান ও শ্রদ্ধা করেন। উল্লেখ্য যে, তিনি গোয়ালন্দ উপজেলার তেনাপচা ইউনিয়নে ইতি মধ্যে যৌন পল্লীর অসহায় মানুষদের আয় রোজগারহীন যৌনকর্মীদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেছেন। অনেকেই বলেন, ডিআইজি হাবিব পুলিশের গর্ব ও জনসাধারণের বন্ধু হিসেবে লাখ লাখ মানুষের কাছে সম্মান ও শ্রদ্ধার প্রিয় মানুষ। বেদে পল্লীর বেদে ও হিজড়াদের জন্য অনেক ভালো কাজ করে আসছেন তিনি।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান মানবতার কল্যাণে কাজ করেন বলেই তিনি লাখ লাখ মানুষের দোয়ায় অনেক ভালো আছেন বলে মন্তব্য করেছেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থা’র ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জয় (হেলাল শেখ)। তিনি বলেন, মানবিক পুলিশের গর্ব ও জনগণসহ প্রকৃত সাংবাদিকদের বন্ধু ডিআইজি হাবিবুর রহমান। তিনি বেদেদের ও হিজরাদের এবং পতিতাদের যেভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেন, অন্যরা কেউ এই সহযোগিতা করতে পারেন না। এখন মাদকাসক্তদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরাতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়ায় তাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানান হেলাল শেখ। পুলিশ কর্মকর্তা হয়েও ডিআইজি হাবিবুর রহমান সবসময় সামাজিক কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আসলেই পুলিশ বাহিনীর গর্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *