বেনাপোল স্হল পথ দিয়ে ভিসা জটিলতায় পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত কম হয়ে গেছে।

অর্থনীতি

আনোয়ার হোসেন।নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বেনাপোল যশোর থেকে।

বেনাপোল স্হল পথ দিয়ে ভিসা জটিলতায় পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত কম হয়ে গেছে করোনার নতুন ধরন। ওমিক্রনের সংক্রমণ রোধ ব্যবস্থা নেওয়ার পর বেনাপোল স্থল পথ বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারত এর মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াতে বিভিন্ন শর্তআরোপে করে ভারত। বর্তমানে ওমিক্রনের প্রকোপ কমলেও যাত্রীরা সড়ক পথে ভারত যেতে ভিসার আবেদন করলেও দূতাবাস দিচ্ছে আকাশ পথে।

গত বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ ) সকাল থেকে সারাদিন বেনাপোল স্থল পথ বন্দর দিয়ে ভারত  গেছে ৬৭৭ জন পাসপোর্ট যাত্রী। আর ভারত থেকে  দেশে এসেছে ৪৯৮ জন । ওমিক্রন সংক্রমণ রোধে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য সুরক্ষা জোরদার রয়েছে বেনাপোল স্হল পথ বন্দরে।

বাংলাদেশী যেসব যাত্রী ভারত যান তারা অধিকাংশই রোগী। বিমানে ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করায় অনেকের পক্ষেই আকাশ পথে আসা অসম্ভব হয়। বর্তমানে আকাশ পথে বিমান ভাড়া ৩ গুণেরও বেশি তারপরও এক সপ্তাহের পর মিলছে না কোনো টিকিট। এতে করে জরুরি প্রয়োজনে সময় মতো যাতা য়াত করতে না পেরে চিকিৎসা ও ব্যবস্তা খরচ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে । গত মাসে প্রতিদিন যাত্রী যাতা য়াত ছিল প্রায় দুই হাজারের মতো। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজারের নিচে। সংকটময় এই মুহূর্ত মোকাবেলায় সরকার কে এসব খাত কে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার  জন্য আহ্বান জানান সচেতন মহল।

জানা গেছে, চিকিৎসা, ব্যবস্তা, শিক্ষা আর ভ্রমণ খাতে স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর বেনাপোল  স্হল পথে বন্দর দিয়ে প্রায় ২০ লাক্ষ পাসপোর্ট যাত্রী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করে। ভারতে করোনা সংক্রমণ দেখা দিলে ২০২০ সালের ১৩ই মার্চ থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। এতে করে জরুরি প্রয়োজনে ভারতে যেতে না পেরে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যাত্রী গন। এখনও পিছু ছাড়েনি করোনা। সব সময় এক এক টি নতুন ধরন জড়িয়ে চলেছেতো চলছে ।

অবশেষে নতুন ধরণ ওমিক্রন ছড়িয়েছে বিশ্বের ১৩৫টির বেশি দেশে। ইতিমধ্যে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ। গত মাসে বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের ৮০% ছিল ওমিক্রনের ধরণ। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও আক্রান্তের অধিকাংশই ছিল ওমিক্রনের ধরণ। ভারতে অনেক রাজ্যে ও বন্ধ করা হয়েছিল স্কুল কলেজ ওদোকান। ভারতওবাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন প্রয়োজনে বর্তমান পরিস্থিতি মধ্যে  ব্যাবসা বাণিজ্য ও চিকিৎসায় যাত্রী যাতায়াত চালু রয়েছে।করোনা প্রাদূর্ভাব সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ও যাত্রী যাতায়াত নিরুৎসাহিত করতে দেখা গেছে ভারতীয় দূতাবাস কে। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের ব্যবসা, চিকিৎসা ও শিক্ষা গ্রহণের জন্য ভারত যাত্রী কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চিকিৎসা ভিসায় ভারতে গমনে ইচ্ছুক পাসপোর্ট যাত্রী পূর্ণিমা জানায়, ভিসার জন্য সড়ক পথে আবেদন করলে দূতাবাস ভিসা দিচ্ছে আকাশ পথে ।তার পর তিন গুণ বেড়েছে খরচ বিমান ভাড়ায়। এক সপ্তাহ পর ১০ দিনের আগে মিলছে না কোনো টিকিট। এতে করে টাকা খরচ করেও সাধারণ যাত্রী ভারত যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আমার দেশে যদি চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত থাকতো তাহলে এতো টাকা খরচ করে ভারত যাওয়ার  কোন দরকার হয় না।

যাত্রী অঞ্জনা আক্তার জানায়, এক বার ভারত যেতে দুই বার করোনা পরীক্ষা করাতে হয় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। বেড়েছে নানা ভোগান্তিও। পরীক্ষা খরচ কমলে সাধারণ যাত্রীগন উপকৃত হয়।

ব্যবসায়ী লতিফ মিয়া জানায়, ব্যবসায়ী কাজে মাঝে মধ্যে ভারত যেতে হয়। এখন ভারতীয় ইমিগ্রেশনের কড়াকড়িতে ইচ্ছে মত যাওয়া যাচ্ছে না। এতে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ইউছুপ আলী জানায়, ওমিক্রন সংক্রমণ রোধে ভারত ফেরত সন্দেহ ভাজন যাত্রীদের করোনার র‌্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত ১৫ দিনে ভারত ফেরত সন্দেহ ভাজন ৬৪ জন বাংলাদেশিকে পরীক্ষা করার পর ৪ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের রাখা হয়েছে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা রেড জোনে এ।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল বলেন, বর্তমানে ভারতও বাংলাদেশ এর মধ্যে স্থলপথে যাত্রী সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে।ভিসা জটিলতায় সমাধান বিধি নিষেধ প্রত্যাহার না করলে যাত্রী যাতায়াত কমার আশঙ্কা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *