হেলাল শেখঃ নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন এবং ডিজেলের দামও বৃদ্ধির কারণে কৃষকের জমিতে পানি নেই। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, কৃষকের জমিতে ফসল না হলে মানুষ খাবে কি? বৃষ্টি নেই, একদিকে জমিতে পানি নেই। অন্যদিকে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে কৃষিতে। নতুন ফসল ফলনে বিঘাপ্রতি জমিতে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে দেড় থেকে ২হাজার টাকা পর্যন্ত। সেই সাথে প্রায় ৩০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে টিলার ব্যবহারের খরচ ও কৃষি শ্রমিকদের মজুরিও বাড়ছে। এ নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষকদের দাবি-বীজ, কীটনাশকের বাড়তি দামের কারণে উৎপাদন খরচ আগের চেয়ে বেশ বেড়েছে কিন্তু মৌসুমে তারা ফসলের নায্যমূল্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই। এতে তাদের অনেক বেশি লোকসান গুনতে হচ্ছে। কৃষকরা বলেন, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কৃষি জমিতে ফসল না হলে মানুষ কি খেয়ে বাঁচবে এমননি প্রশ্ন করেন অনেক কৃষক।
উত্তরের প্রায় জেলাগুলোতে চলছে রবি মৌসুমের চাষাবাদ। নতুন ফসলে ভরে উঠেছে উত্তরের জেলাগুলোর মাঠ থেকে। আলু, গম, সরিষা বুনছেন অনেক কৃষক তাদের জমিতে। উৎপাদন হচ্ছে, হরেক রকমের সবজি। দেখা যায়, ফলন ভালো হলেও মলিন কৃষকের মুখ। সার, বীজ ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধির কারণে চাষাবাদ করতে এমনিতেই হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা, সেখানে মৌসুমের শুরুতেই ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি কৃষকের জন্য মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ডিজেলের বাড়তি দামে বেড়েছে উৎপাদন ব্যয়। তাই অনেক বর্গা চাষি মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ফসল আবাদ করা থেকে। অনেক কৃষি কর্মকর্তাও মনে করেন যে, ডিজিলের দাম বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে আবাদি ফসলের ওপর। বেড়েই চলেছে কৃষকের খরচ। এর সাথে কৃষি শ্রমিক ও টিলারের মালিকরা বাড়িয়ে দিয়েছেন মজুরি ও খরচ। কয়েক মাস আগেও (৩৩ শতাংশ) এক বিঘা জমিতে খরচ হত ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা, যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার থেকে ১৫০০টাকা। এমন পরিস্থিতিতে কৃষি পণ্যের নায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।
এ বিষয়ে সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, কিছু কৃষক আছেন যে, তারা এক বিঘা জমি বন্দকী হিসেবে এক বছরের ফসল ভোগ করার জন্য ৫ হাজার টাকা দিয়ে জমির মালিকের কাছ থেকে নিয়ে সার, বীজ ও কীটনাশক কিনে জমিতে দিয়ে ফসল আবাদ করেন, জমি চাষাবাদ করাসহ এক বিঘায় তাদের খরচ হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা, অনেক ফসল আবাদ করে কৃষকের লোকসান হয়। কারো আবার এর চেয়ে বেশি বা কম খরচ হয়। কৃষকরা অনেকেই বলেন, কোনো কারণে এক বছর ফসল নষ্ট হলে, অনেক সময় না খেয়ে থাকতে হয় তাদেরকে। অনেক কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় বলে অনেকেই জানান। শুধু তাই নয়, এক ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে প্রতিটি সেক্টরেই এর প্রভাব পড়েছে। এতে দেশের জনগণের মরার ওপর খাড়ার ঘা বলে অভিমত প্রকাশ করেন সচেতন মহল।
