ধরা পড়েছিলেন গাঁজা সহ। এইজন্য দুজনকে জেলেও যেতে হয়। আদালতে ওই দুজনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে চার্জ শিটও জমা দেয় পুলিশ। কিন্তু সেই দুজনকে জামিন দিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আদালত। এই জামিন দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ শর্তর কথাও জানিয়েছে আদালত।
কী শর্ত?
আদালত জানিয়েছে, নাসির উদ্দীন ও সিয়াম আলী নামের ওই দুজন তরুণকে গাছ লাগাতে হবে। কোথায় এবং কীভাবে এই গাছ লাগাতে হবে তাও জানিয়েছে আদালত। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের ৫০টি গাছ রোপণ ও পরিচর্যা করতে হবে। এই শর্ত মানলেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের ওই দুই তরুণ জামিন পাবেন।
মামলা থেকে অব্যাহতি
আট মাস আগে গাঁজা সহ ব়্যাবের হাতে ধরা পড়েন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাসির ও সিয়াম। ১৮৫ গ্রাম গাঁজাসহ র্যায়বের হাতে ধরা পড়েন তাঁরা। গ্রেফতার করার এক মাস পর তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ৫০টি গাছ রোপণ ও পরিচর্যার শর্তে তাদেরকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
পাশাপাশি কাজটি ঠিকমতো করলে এক মাস পর তাঁদের মামলা থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে আদালত। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হুতমায়ূন কবীর বুধবার দুপুরে ওই রায় দেন।
কেন এই নির্দেশ?
বিশেষ শর্তে মাদক মামলায় কারামুক্ত হওয়া নাসির উদ্দীন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বারঘরিয়া ইউনিয়নের বারঘরিয়া বিশ্বাস পাড়ার বাসিন্দা। আর সিয়াম আলী বারঘরিয়া জামাদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের ২৯ অগাস্ট ব়্যাবের হাতে ধরা পড়েন নাসির উদ্দীন ও সিয়াম আলী। এরপর ব়্যাবের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের আধিকারিক ফখরুল ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী আধিকারিক মোহাম্মদ দারেশ আলী। আদালত দীর্ঘ শুনানির পর সংশোধনের উদ্দেশ্যে তাদের কারামুক্তির আদেশ দিয়েছে। তাদের আইনজীবী শাহীন আল মামুন বলেন, ‘ভবিষ্যতে এমন অপরাধ করবেন না বলে আলাদতকে জানিয়েছেন। আদালত তাদের সংশোধনের উদ্দেশ্যে এই রায় দিয়েছে।’
কী করতে হবে?
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ওই দুই তরুণকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দেখিয়ে দেওয়া জায়গায় ৫০টি ফলজ বা বনজ গাছ লাগাতে হবে। এরপর তারা গাছের পরিচর্যা করবেন। তাদের এই কাজের তদারক করবেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
এক মাস পর চেয়ারম্যান আদালতে একটি রিপোর্ট জমা দেবেন। কাজটি ঠিকমত হলে আদালত তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেবে। বারঘরিয়া ইউপির চেয়ারম্যান হারুনর রশীদ বলেন, ‘যেদিন থেকে তারা কাজ শুরু করবেন, সেদিন থেকেই গণনা শুরু হবে।’