ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে রোববার (২৬ মে) রাত থেকে টানা বর্ষণে পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছে চট্টগ্রাম নগরী। সোমবার (২৭ মে) দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিগত ১২ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ২৩৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস।
দুই দিনের টানা বৃষ্টির ফলে হাঁটু থেকে বুক পরিমাণ পানিতে তলিয়ে গেছে বেশিরভাগ এলাকা। এদিকে, পানিতে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় গণপরিবহনের সংখ্যা একেবারেই কম। ফলে রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া গুনে অর্ধভেজা হয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। এছাড়া ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া চলমান থাকায় নগরের অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।
সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, বাদুরতলা, চকবাজার, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, হালিশহর, জিইসি মোড়, পুরাতন চান্দগাঁও থানাসহ নগরীর বেশিরভাগ এলাকা হাঁটু থেকে গলা সমান পানিতে তলিয়ে গেছে। সকাল থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে একাধিক সড়কে। হাজার হাজার যানবাহন সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছে।
কামাল হোসেন নামের হালিশহর শ্যামলী আবাসিক এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘হাঁটু সমান পানি মূল সড়কে। আবাসিকের ভেতরে এটি কোমর সমান।’ পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকা কিংবা প্রতিবন্ধকতার কারণে নিচু সড়কে পানি এভাবে জমে গেছে। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নগরবাসী।
বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা খাইরুল মিয়া জানান, পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় নগরী ডুবে গেছে। বহদ্দারহাট এলাকার মূল সড়ক থেকে শুরু করে ডুবেছে অলি-গলি। অনেক বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকেছে। বাসার রান্না ঘরের চুলাও জ্বলছে না।
এবং তিনি আরো বলেন,সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামী ও শ্রমজীবীরা। বন্ধের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না থাকায় নগরীতে অনেক স্কুল-কলেজ খোলা আছে। শিশুদের স্কুলে পৌঁছাতে গিয়ে অভিভাবকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা এমএইচএম মোসাদ্দেক জানান, সকাল ৯টা ২২ মিনিটে জোয়ার শুরু হয়। ভাটা শুরু হবে বিকেল ৩টা ১৬ মিনিটে।গত ২৪ ঘন্টায় ২০৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আরও তিন থেকে চার ঘণ্টা এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানান আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা।
সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা লতিফুল হক কাজমি বলেন, ‘৪১টি ওয়ার্ডে জমে থাকা পানি যাতে দ্রুত নেমে যায়, এ জন্য ছোট ছোট টিম গঠন করে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চলছে৷
চলতি মাসের ৬ তারিখেও নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল। ওই দিন বিকেলের টানা এক ঘণ্টা বৃষ্টিতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নিচু এলাকাসহ অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে যায় সড়ক।