1. sokalerbangla@gmail.com : admin :
রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কিশোরগঞ্জের তাড়াইল থানার শ্রেষ্ঠ ওসি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সাব্বির রহমান তাড়াইলে অপরেশন ডেভিল হান্টে ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ ঘোষিত নেতা আটক ঝর্ণা বেগম হত্যা মামলায় তানভীরকে আসামী করা একটি সাজানো নাটক আশুলিয়ায় আগষ্টে ছাত্র হত্যার ঘটনায় ৫টি মামলার আসামী সাফা ভুঁইয়াকে গ্রেফতার কিশোরগঞ্জের তাড়াইল থানা পুলিশের অভিযানে কুখ্যাত দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের সাথে বাংলাদেশ সূফিবাদী ঐক্য ফোরামের সৌজন্য স্বাক্ষাৎ সাংবাদিক আলহাজ্ব কলিম সাহেব খুব অসুস্থ্য—তার রোগমুক্তির জন্য সবার দোয়া কামনা পুলিশ ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছে একটি সুবিধাবাদী মহল তিতাস গ্যাসের হাজার হাজার অবৈধ সংযোগে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার গোয়াইনঘাটের গুরকচিতে আরেকটি শাপলা বিলের সন্ধান পাওয়া গেছে। 

ঝর্ণা বেগম হত্যা মামলায় তানভীরকে আসামী করা একটি সাজানো নাটক

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

রাসেল আহম্মেদ: মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড নাহাপাড়া গ্রামে ২০২৪ সালের ৪এপ্রিল গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত করার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ময়না তদন্তের সিপ্লল সংগ্রহ শেষে লাশ দাফন কাজ সম্পন্ন হয়।
ঘটনারপর অজ্ঞাত নামা আসামী করে মোঃ রাব্বী মোল্লা বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বাদীর মা ঝর্ণা বেগম (৪২) এর সাথে বাদীর নানী ছালেহা বেগম (৭০) মুন্সীগঞ্জ থানাধীন মধ্য নাহাপাড়া সাকিনস্থ বাদীর বাড়ীতে থাকতো এবং মাঝে মাঝে বাদীর বোন মীম আক্তার থাকতো। বাদীর নানী ছালেহা বেগম ০৩/০৪/২০২৪ তারিখ মুন্সীগঞ্জ থানাধীন রামপাল ইউনিয়নের কোদালধোয়া সাকিনস্থ তার বাবার বাড়ীতে যাওয়ায় বাদীর মা একাই বাড়ীতে ছিল। একই তারিখ রাত অনুমান ১১.২৫ ঘটিকার সময় বাদীর মা তার ব্যবহৃত মোবাইল ন¤^র হতে বাদীর বোন মীম আক্তার এর ব্যবহৃত মোবাইল ন¤^র এ কল করলে বাদীর বোন ফোন রিসিভ করে। বাদীর বোন ফোন রিসিভ করলে বাদীর মায়ের পাশ থেকে শুনতে পায় তার মা বলছে- “মীমেরে জিগাইয়া নেই” এই কথার পর ফোন কেটে যায়। তারপর বাদীর মায়ের সাথে তার পরিবার বা আত্মীয় স্বজন কারো সাথে কোন যোগাযোগ হয় নাই। ০৪/০৪/২০২৪ তারিখ বেলা অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় বাদীর বৃদ্ধ নানা জয়নাল আবেদীন কাজী (৮০) মুন্সীগঞ্জ থানাধীন মধ্য নাহাপাড়া সাকিনস্থ বাদীর বসত বাড়ীতে গিয়ে বাদীর দক্ষিণ দুয়ারী টিন কাঠের তৈরি দোচালা ঘরের দেওয়াল। দক্ষিণ পাশের দরজার সামনে ঘরের বাইরের ফাঁকা জায়গায় বাদীর মায়ের গলার সামনের অংশে কাটা (জবাই করা) রক্তাক্ত মৃতদেহ পরে আছে দেখতে পায়। বাদীর নানা বাদীর মায়ের মৃতদেহ দেখতে পেয়ে ডাক চিৎকার দিলে আশপাশের স্থানীয় লোকজনসহ আত্মীয় স্বজন ঘটনাস্থলে আসে। পার্শ্ববর্তী বাদীর আত্মীয় স্বজন বাদীর বোন মীম আক্তার, চাচা সহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজনকে সংবাদ দিলে তারাও ঘটনাস্থলে আসে।
পরবর্তীতে অজ্ঞাতনামায় ১৪৯২(৩)/১, ০৫/০৪/২৪ ন¤^রের মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলা রুজু করা হয়। এ মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান মুন্সীগঞ্জ সদর থানার এসআই হাসান। হাসান বদলি হওয়ার পর মামলাটির তদন্ত করেন এসআই রুবেল। পাশাপাশি আসামী গ্রেফতার ও সঠিক তথ্য উদঘাটনে মাঠে নামেন জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। প্রথমে ডিবি এ মামলায় ইসলাম বেপারীর ছেলে মোঃ রাসেল বেপারীকে আটক করে। ১দিন পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অতপর মনির হোসেন কাজী, আনোয়ার হোসেন কাজী ও রায়হানকে আটক করা হয়। আটকের তিনদিন পর বাদী মোহাম্মদ রাব্বী মোল্লা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তাদের ছাড়িয়ে আনেন। ডিবির এসআই ইয়াসিন এ মামলায় রাকিব শেখকে রিকাবীবাজার সেফটি ফাস্ট অফিস থেকে আটক করে। আটকের পর মারধর করে এ মামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু রাকিব শেখ কোনভাবেই তা স্বীকার করে না এবং জড়িত থাকার বিষয়টি ডিবি খুজে না পেয়ে পরে তাকে ৭৫হাজার টাকার বিনিময়ে ডিবি কার্যালয় থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর আগে আটক করে ঝর্ণা বেগমের মেয়ের জামাই জাহিদ হাসান তানভীরকে। বিভিন্ন কৌশলে ডিবি এসআই ইয়াসিন তানভীরের কাছ থেকে ৫লক্ষ টাকা দাবী করেন। অপরদিকে তানভীরের পরিবারের লোকজনও ডিবি অফিসে যোগাযোগ করেন। এসআই ইয়াসিন তানভীরের বোনকে ডেকে নিয়ে কুপ্রস্তাব দেন। কিন্তু তানভীরের বোন কুপ্রস্তাবে ও পরিবার টাকা দিতে রাজী না হওয়ায় নাটকীয়ভাবে এ হত্যা মামলায় জাহিদ হাসান তানভীরকে আসামী করা হয়। এরপর ডিবি ইয়াসিন তিনটি টিপ ছোড়া (সুইজ গিয়ার) টেবিলে রেখে তানভীরকে পছন্দ করতে বলেন। এরপর তানভীর একটি সুইজ গিয়ার পছন্দ করেন। সেই পছন্দের সুইজ গিয়ার সঙ্গে নিয়ে আলামত উদ্ধারে নামে ডিবি টিম। পুকুরে সুইজ গিয়ারটি উদ্ধারে নামেন মান্নান কাজী। সে সময় তার কাছে ডিবি সুজই গিয়ারটি সঙ্গে দিয়ে দেন বলে জানান তানভীর। এদিকে এ ঘটনার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেন ডিবি শিমুল। যেখানে দেখা যায় এক ডুবেই মান্নান কাজী সুইজ গিয়ারটি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। উদ্ধার করে ৩দিন ডিবি কার্যালয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয় তানভীরকে। কিন্তু আদালতে ১দিনের রিমান্ড দেখানো হয়। অসামঞ্জস্য প্রশ্নের মাধ্যমে আসামীর ¯স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক লিপিবদ্ধ করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। এই অসামঞ্জস্য জবানবন্দির প্রেক্ষিতে আমলি আদালত-১ এর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জশিতা ইসলাম জাহিদ হাসান তানভীরকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এদিকে ডিবি ইয়াসিন মামলার সম্পূর্ণ তদন্ত শেষ না করেই মোটা অঙ্কের অর্থ বাণিজ্য করে তড়িঘড়ি করে ৫ মাসে এ হত্যা মামলার ফাইনাল চার্জশিট আদালতে প্রেরণ করেন। যেটি ১৭বছর আওয়ামী দুশাসনের একটি দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ। হত্যার বিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঝর্ণা বেগম হত্যা মামলায় জাহিদ হাসান তানভীরকে অজ্ঞাত নামা মামলায় আসামী করে জেল হাজতে পাঠানো হয়। এ মামলায় প্রথমে কয়েকজনকে ডিবি পুলিশ আটক করলেও তাদেরকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। জাহিদ হাসান তানভীর ঝর্ণা বেগমের মেয়ে মীমের স্বামী। মুলত মীম আক্তার ও জাহিদ হাসান তানভীর দুজনে প্রেমের সম্পর্কের বিয়ে হয়। এই বিষয়টি মীমের ভাই ও মামলার বাদী মোহাম্মদ রাব্বী মোল্লা মেনে নিতে পারেনি। তাই মীমের স্বামী জাহিদ হাসান তানভীরকে এ হত্যা মামলায় ফাসানানো হয়েছে বলে জানান মীম। যেদিন এ হত্যা কান্ড সংঘঠিত হয় এবং মামলায় যে সময় উল্লেখ করা হয়েছে। সেই দিন ও সময়ে তানভীর ও মীম এক সাথে রাত্রি যাপন করেছে। ঝর্ণা বেগমের ফোন থেমে যখন মীমের কাছে ফোন আসে ঠিক সে সময়ও মীমের সাথেই ছিল জাহিদ হাসান তানভীর। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে ১০ হাজার টাকার জন্য জাহিদ হাসান তানভীর ঝর্ণা বেগমকে হত্যা করেছে এবং ফোনের মাধ্যমে মীমকে বলেছে ”মীমকে জিগাইয়া লই”। মীম ও এলাকাবাসীর তথ্য মতে, জাহিদ হাসান তানভীর তার শ্বাশুরী ঝর্ণা বেগমের সাথে সুসম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটানোর কোন ক্লু ছিল না। এছাড়াও তানভীরদের বাসা থেকে ঝর্ণা বেগমের বাড়িতে যেতে হলে তিনটি রাস্তায় প্রায় ৯টি সিসি ক্যামেরা অতিক্রম করে যেতে হয়। এ হত্যা কান্ড সংগঠিত হওয়ার পরে প্রত্যেকটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করে দেখা হয়েছে। সেই ফুটেজে তানভীরকে দৃশ্যমান দেখা যায়নি। সরেজমিনে আরো জানা গেছে, ঝর্ণা বেগমের বাড়ির পাশেই ব্লিডিংয়ের খোলা ছাদে নেশা খোরদের আস্তানা ছিল। তারা নিয়মিতই এখানে আড্ডা মারত ও নেশা সেবন করতো। সেক্ষেত্রে নেশা খোরদের হাতেও ঝর্ণা বেগম হত্যা হওয়ার বিষয়টি ছিল। নেশা খোরদের আক্রমন বা টাকা দাবীর প্রেক্ষিতেও মীমের মা ফোনে হয়ত বলেছিল মীমেরে জিগাইয়া লই। অন্যদিকে মীম যখন বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করত সে তিন তিনটি প্রেম করেছিল। সে সুবাদে মীমের সাবেক প্রেমিকগণ তাকে না পাওয়ার প্রেক্ষিতে প্রতিশোধ মুলক আচরণ থেকে হয়ত তার মাকে আক্রমন করেছিল। সেক্ষেত্রে মীমের মা বলেছিল মীমরে জিগাইয়া লই। অন্যদিকে মীম তার মায়ের সকল খবর জানতো। মীমের বাবা মৃত্যুর পর থেকে মা ও মেয়ের বুঝা পড়ায়ই সংসার চলতো। সেক্ষেত্রে সংসারের ভালো মন্দ মীম জানতো। মীমের মামা মনির হোসেন কাজী ও আনোয়ার হোসেন কাজীর সাথে বাড়ির জায়গা জমিন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। সেই সুবাদে মনির হোসেন কাজী ও আনোয়ার হোসেন কাজী তার বোনের কাছ থেকে জমি লিখে নেওয়ার বিষয়টিও এ উদ্বৃত্তির সাথে জড়িত হতে পারে বলে অনেকেরই প্রশ্ন। মৃত্যুর পূর্বে ঝর্ণা বেগমকে মান্নান কাজী কুপ্রস্তাব দিয়েছিল। যার কারণে তাকে বটি দা দিয়ে দৌড়ানি দিয়েছিল ঝর্ণা বেগম। তার প্রতিশোধের কারণেও মীমরে জিগাইয়া লই এ কথাটি আসতে পারে। এতো গুলো ক্লুকে উপেক্ষা করে একটি ক্লুকে প্রাধান্য নিয়ে ডিবি এসআই ইয়াসিন এ মামলাটি এক তরফা ভাবে তড়িঘড়ি করে ফাইনাল চার্জশিট প্রদান করেছে। সরেজমিনে তথ্য সূত্রে আরো জানা যায়, জাহিদ হাসান তানভীর হত্যা কান্ডের প্রায় দুই মাস পরে যখন ডিবি হেফাজতে রিমান্ডে ছিল সেই সময়ে তানভীরকে তিনটি সুইজ গিয়ার দেখানো হয়েছিল। তানভীরকে বলা হয়েছিল কোন সুইজ গিয়ারটি তোর পছন্দ হয় একটি বেচে নে। নির্যাতনের প্রেক্ষিতে একটি সুইজ গিয়ার সে দেখিয়েছিল এবং সেই সুইজ গিয়ারটি নিয়েই ডিবি টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। ঘটনা স্থলে গিয়ে পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে তানভীরকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কিভাবে কোথায় সুইজ গিয়ারটি ফেলেছিস? সেই সময় তানভীর ডিবির হাতে আটক ও হাতকড়া পড়া অবস্থায় ইশারায় বলেছিল পুকুরে ঐখানে ফেলেছি। যেটি সাধারণ মানুষকে এবং ভিকটিমের আপনজনদের ঘটনাটি তানভীরই ঘটিয়েছে বুঝানোর জন্যই এমন নাটক সাজানো হয়েছে। যদি তাই না হতো তাহলে পানি ভরপুর পুকুরে দুই মাস পূর্বে হত্যার পরে ফেলানো অক্ষত ও চকচকে পরিষ্কার সুইজ গিয়ার এক ডুবে উদ্ধার করা যেতে পারে না। যেটি কোন পেশাদার ডুবুড়ির মাধ্যমেও এতো সহজে পানির নিচ থেকে সুইজ গিয়ার উদ্ধার করা সম্ভব নয়। আর এই সুইজ গিয়ার দিয়েই যে তানভীর তার শাশুড়ীকে হত্যা করা হয়েছে এটি নিশ্চিত করার জন্য কোন ধরণের ফরেনসিক রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়নি। এ হত্যার ঘটনায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে ভিকটিমের পাশে থেকেই মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। সে মোবাইলটিও কোন ধরণের ফরেনসিক রিপোর্ট আদালতে প্রেরণ করা হয়নি। এছাড়া এ হত্যা কান্ডে তানভীরই যে হত্যা করেছে সে ক্ষেত্রে ভিকটিমের শরীরে কোন অংশের ফরেনসিক রিপোর্টও প্রদান করা হয়নি। শুধুমাত্র ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়েছে ভিকটিমের গলা ধারালো অস্ত্রের মাধ্যমে জবাই করা হয়েছে। তাহলে এই সুইজ গিয়ার দিয়েই হত্যা করা হয়েছে কি না তা জনমনে একটি প্রশ্ন রয়ে গেছে। জেলখানায় বসে জাহিদ হাসান তানভীর যে চিরকুট লিখে পাঠিয়েছেন তা হুবহু তুলে ধরা হলো: আমি যে হত্যা মামলায় জেল এর ভিতরে আছি তার সাথে আমি কোনো প্রকারে জরিত নই। ডিবি অফিসার আমিনুল, ইয়াসিন, শিমুল, মেহেদী এবং জামাল তারা আমার ভাসা থেকে জোর পূর্বক আমাকে তুলে আনে তারপর মাঝ রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে তারা আমাকে মারধর করে। এরপর তারা আমাকে চোখ বেধে পেটে পিস্তল ঠেকিয়ে আমাকে (ঝচ) অফিসে নিয়ে আসে। তারা এই পাঁচজন এবং তাদের সঙ্গে থাকা আরো সহপাঠিরা মিলে আমাকে ৩দিন পর্যন্ত মারধর এবং অন্যায় অত্যাচার করে তারা আমাকে বলে তুই যদি না শিকার করছ যে এই হত্যা তুই করেছিস তাহলে তোর পরিবারের সকল সদস্যকে গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলবো। তারা আমার কাছে ২বার টাকা দাবি করে আমি দিতে রাজি না হওয়াতে তারা বলে আমরা যে ভাবে বলবো ঠিক সেভাবে কবি। ডিবি ইয়াসিন আমার সামনে ৩টি সুইচ গিয়ার রাখে। তারপর বলে এইখান থেকে ১টি পছন্দ কর। আমি জানতে চাইলে সে বলে কোনো কথা বলবি না। তার পরের দিন ১জুন আমাকে নিয়ে ঘটনা স্থলে যায় পাশে থাকা পুকুরে মান্নান কাজী নামে এক বয়স্ক লোক এর হাতে ১টি সুইচ গিয়ার দিয়ে তাকে পানিতে নামায় এবং সে ১ ডোব দিয়ে সেটি নিয়ে আসে। তারপর আমাকে ম্যাজিস্টেট এর কাছে নিয়ে আসে। তিনি জানতে চান আমি ভালো আছি। খাবার খেয়েছি কিনা আমি বলি হে। তারপর তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করে আইয়ু কে আমি বলি আমার পিছনে তিনি। তারপর আইয়ু একটি কাগজ দিল তাকে তিনি আমাকে বলে তুমি বাহিরে যাও তোমাকে পরে ডাকবো। তারপর ২০-২৫ মিনিট পর আমাকে ডাকা হয়। ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে বলে আমার হাতে কোনো হত্যা মামলা ফাঁসি হয় নাই। এই নাও এইখানে কয়টা স্বাক্ষর দাও ১৫-২০ দিন পর তোমার জামিন হয়ে যাবে। তারপর আমাকে গারদে রেখে তারা চলে যায়। আমি নিজের মুখে কোনো সিকারোক্তি দেই নাই। মীম যা বললেন, জাহিদ হাসান তানভীর আমার স্বামী। আমার মায়ের হত্যা কান্ডের ২মাস পর যখন তাকে ডিবি পুলিশ আটক করে তখন আমি ৪মাসের অন্ত:সত্বা ছিলাম। ডিবি অফিসে যখন আমার স্বামীকে দেখতে যাই তখন আমার খুব কষ্ট হতো। আমার মাকে হত্যার ঘটনার দিন রাতে যখন আমার মোবাইলে ফোন আসে তখন শুধু এই কথাটাই শুনতে পাই মিমরে জিগাইয়া লই। এরপর অনেকবার আমার মায়ের মোবাইলে ফোন দেই কিন্তু ফোন রিসিভ হয়নি। সেই সময়ে আমার স্বামী আমার সাথেই ছিলো। মায়ের মোবাইলে না পেয়ে আমার মামাত ভাইয়ের বউয়ের ফোনেও ফোন করি। কিন্তু তারা ফোন ধরেননি কেটে দিয়েছে। কল কেটে দিয়ে শুধু এই ম্যাসেজ টুকু করেছে কি লো কি হইছে। অথচ অন্যদিন আমার মামাতো ভাইয়ের বউ রাত ১২টা কিংবা ১টার পরও কথা বলতো। এছাড়াও আমার বড় মামা মনির কাজীর ফোনেও ফোন দিয়েছি কিন্তু সে রিসিভ করেনি। পরদিন সকাল বেলা আমার মামাতো ভাইয়ের বউ শ্রাবন্তি ফোন দিয়ে বলে তোর মায়ের গলাকাটা লাশ পাওয়া গেছে। এই খবর শুনে আমার স্বামী জাহিদ হাসান তানভীর, শশুড়, শাশুড়ী ও ননাশ আমাদের বাড়িতে যাই। পরে ৯৯৯ এ ফোন দেওয়া হলে পুলিশ এসে আমার মায়ের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ময়নাতদন্ত শেষে মাকে দাফন করা হয়। মীম আরোও বলেন, আমার মায়ের আগেও আমার বড় খালাকে আমার নানা ও মামারা বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছিল। জায়গা সম্পত্তির বিষয় নিয়ে আমার মামা মনির হোসেন কাজী প্রায়ই আমার মাকে মারত। যার কারণে সে কানে আঘাত পেয়ে কানে কম শুনতো। এছাড়া জমি নিয়ে আমার মামা আনোয়ার কাজীর সাথে প্রায়ই বাকবিতর্ক হতো। আমার স্বামীর সাথে আমার সুসম্পর্ক ছিল এবং প্রেমের বিয়েকে মেনে নিতে পারেনি আমার বড় ভাই রাব্বি মোল্লা। এই সুযোগে আমার মামারা আমার বড় ভাইকে প্রভাবিত করে তাদের নিয়ন্ত্রনেই রাখার চেষ্টা করত। সর্বশেষ ভাইয়ের অর্থেই ডিবি অফিস থেকে আমার মামা মনির হোসেন কাজী, আনোয়ার হোসেন কাজী ও রায়হান কাজীকে ছাড়িয়ে আনে। বাবা মারা যাওয়ার পর বড় ভাই সংসারের খরচ বহন করলেও আমার মা মারা যাওয়ার পূর্বে ভরণ পোষণ বন্ধ করে দেয়। মাকে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করতে হয়েছে। আমার শ্বশুর কৃষি কাজের সাথে জড়িত। সেই সুবাদে শ্বশুড় বাড়িতে দুধ ও খাবারের কোন কষ্ট নেই। আমার মা সর্বশেষ যে খাবারটি খেয়েছে তা আমার শ্বশুড়ের জমির কাচা সবজি ও গরুর দুধ ছিল। আমার নির্দোষ স্বামীকে ডিবি এ হত্যা মামলায় আসামী বানিয়ে জেল খানায় পাঠিয়েছে যা বানোয়াট একটি নাটক। আমার একটি ছেলে বাচ্চা হয়েছে। ছেলেটি তার বাবাকে এ পর্যন্ত দেখতে পায়নি। ছেলেটি বাবার আদর ও স্নেহ থেকে বঞ্চিত। আমাকেও অনেক কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে। একদিকে বাবা হারা অন্য দিকে মা। আবার যদি স্বামীকেও হারাতে হয় সেক্ষেত্রে এ পৃথিবীতে আর বেঁচে থেকে কি হবে? আমি এ মামলার সুষ্টু তদন্তের মাধ্যমে দেশ বাসীর কাছে আমার মায়ের সঠিক বিচার চাই এবং আমার স্বামীর মুক্তি চাই। এ বিষয়ে জাহিদ হাসান তানভীরের বোন তামান্না আক্তার বলেন, আমাদের বাড়ি থেকে নাহাপাড়া শ্বশুর বাড়িতে যেতে হলে আমার ভাইকে ৯টি সিসি ক্যামেরা অতিক্রম করে যেতে হবে। সে যেদিক দিয়েই যাক না কেন। হত্যা মামলার তদন্তের স্বার্থে ঐ সময়ে বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ৯টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজই চেক করেছিলেন। চেক করার পর তিনি বলেছিলেন সেই ফুটেজের মধ্যে কাউকে দেখা যায়নি ও জাহিদ হাসান তানভীরও ছিল না। ডিবি স্বাক্ষী হিসেবে নাহা পাড়ার বিপ্লবকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করতে গেলে মনির কাজীর ঘনিষ্ঠ লোক বিপ্লব বলেন, ঘটনা সংগঠিত হওয়া কালীন সময়ে সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। মনির কাজী ঘটনার দিন রাতে রাস্তার সৌরবিদ্যুৎ লাইটের নিচে ৪জন যুবককে দেখতে পান। কিন্তু সেখানে সে তানভীরকে দেখেনি বলে ডিবির কাছে বলেছেন। কিন্তু তাহলে দেশ বাসীর কাছে আমার প্রশ্ন ঐ ছেলেগুলো কারা ছিল আর তাদের দেখে সে কেন সামনে গেল না। সে জানতো তার বোন বাড়িতে একা আছে। আর এতো রাতে সে ঐখানে কি করছিল? এছাড়াও এই মামলায় যখন আমার ভাইকে আসামী করা হয়। তখন আমাদের কাছে ৫ লক্ষ টাকা দাবী করে এবং টাকা দিতে না পারলে কুপ্রস্তাবে রাজী হওয়াার জন্য বলেন ডিবি এসআই মোঃ ইয়াসিন। পুকুর থেকে সুইজ গিয়ার উদ্ধারকারী মান্নান কাজীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পুকুরে কয়েকটি ডুব দেওয়ার পর সুইজ গিয়ারটি উদ্ধার করেছি। কিন্তু ভিডিওতে এক ডুবে সুইজ গিয়ার উদ্ধারের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমি যা বলার ডিবির কাছে বলেছি। আপনাদের কাছে কিছু বলার নাই। এ বিষয়ে ডিবির এসআই মোঃ ইয়াসিন জানান, ঝর্ণা বেগম হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমিই ছিলাম। এ মামলার চার্জশিটও দেওয়া হয়েছে। মামলার আলামত সুইজ গিয়ার উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মান্নান কাজী আমাদের পরিচিত কেউ নয়। আসামী আলামত সুনির্দিষ্ট জায়গা দেখিয়ে দেওয়ার পরই মান্নান কাজী এক ডুবে আলামত উদ্ধার করেন। যেখানে শতশত লোক উপস্থিত ছিল। এছাড়া ১৬৪ ও অন্যান্য বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি এসআই মোঃ ইয়াসিন ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে আবার ফোন দিলে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজী নন বলে জানান।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved dailychoukas.com 2014
Theme Customized BY LatestNews