জেলায় ১৩টি উপজেলার কৃষকরা ইরি-বোরোর পাকা ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া গতকাল শুক্রবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন গত এক সপ্তাহে জেলার ১৩ টি উপজেলায় ইরি-বোরো মৌসুমের শেষ পর্যায়ে ফসলের অবস্থা পরিদর্শন করেছেন।
তিনি আরো জানান, চলতি বছর ইরি-বোরো ধান মাঠে প্রায় অর্ধেক পেকেছে। কৃষকরা ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটার আগেই মাঠের ধার কর্তন করে ঘরে তুলতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২/৪ দিনের মধ্যেই বোরো আগাম জাতের ধান কর্তন শুরু হবে ।
ধান কাটার জন্য জেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় কৃষি বিভাগ ভর্তুকির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ধান কাটার আধুনিক মেশিন কৃষকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। গত ৩ বছরে জেলার ১৩ টি উপজেলার ১০৩ টি ইউনিয়নে প্রায় ১২০০ বিভিন্ন ধরনের ধান কাট মাড়ায়ের আধুনিক মেশিন কৃষি বিভাগ কৃষকদের কাছে সরবরাহ করেছে। অত্যাধুনিক মেশিনে একই সাথে ধান কাটা ও মাড়াই হয়। ফলে এখন আর ধান কাটা শ্রমিকের জন্য কৃষকদের অপেক্ষা করতে হয় না। তিনি বলেন, কৃষরো এ পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে ঝড় বৃষ্টির শুরু হওয়ার পূর্বেই ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবে। কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীরা কৃষকদের ধান কাটার জন্য পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছেন।
কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক বলেন, এবার দিনাজপুর জেলার ইরি- বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
দিনাজপুর সদর উপজেলার কমলপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদ ও রফিকুল ইসলাম জানান, মাঠের ধান পেকেছে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে ধান কাটার ।
জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলায় কৃষি কর্মকর্তা রফিকুজ্জঅন জানান, ইরি, বোরো ধানের মাঠগুলো ঘুরে দেখো যায়, কারো বোরো ধান পেকেছে । তারা ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ওই কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, চলতি মৌসুমে জেলার ১৩ টি উপজেলায় ১ লাখ ৭২ হাজার ২০০হেক্টর জমিতে ইরি- বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অতিরিক্ত ২ হাজার ৫০০ হেক্টরে ধান চাষ অর্জিত হয়ে মোট এক লাখ ৭৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে ধানের ফলন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৮ লাখ মেট্রিক টন চাল।
এবার ঘোড়াঘাট উপজেলায় ৯ হাজার ১২৬ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো দুর্যোগ বা পোকা মাকড়ের আক্রমণ দেখা যায়নি। আশা করা যাচ্ছে গত বছরের চেয়ে এ বছর বোরো ধান উৎপাদন বেশি হবে।