শাহীন আহমেদ
বন্দর নগরীর চট্টগ্রামের স্বনামধন্য পর্যটন স্পট পতেঙ্গা এলাকার আবাসিক হোটেল গুলোতে চলছে অবাধে দেহ ব্যবসা ও অনৈতিক সম্পর্কের মিলন মেলা। অভিযোগ রয়েছে, পতেঙ্গা থানাধীন এলাকার বেশ কিছু হোটেল, ও গেস্ট হাউজ নিয়ম নীতির বাইরে। সেখানে আগত অতিথিদের নানা রকম অবৈধ এবং অনৈতিক সুবিধা দিয়ে থাকে।
এই এলাকার আবাসিক হোটেলগুলোর অপকর্মের তালিকায় রয়েছে ,কাঠঘর থেকে সি বিচ রোড এবং সী বিচ এলাকায় অবস্থিত, হোটেল রয়েল, হোটেল সী কুইন , বিচ পয়েন্ট, হোটেল টার্নেল পয়েন্ট,হোটেল পতেঙ্গা টুডে, হোটেল টার্নেল ভিউ, হোটেল ডায়মন্ড, হোটেল বেলমন্ড,হোটেল বিএস এল,হোটেল পিএসপি,হোটেল সি বিচ ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল সাইমা, হোটেল সি কিং ,মিনি রিসোর্ট,সেকেন্দার রির্সোট, সহ একাধিক হোটেলে প্রতিদিন দেহ ব্যবসা ও নানান ধরনের অপকর্ম চলছে।
অনুসন্ধানে জামা যায়, অপ্রাপ্ত বয়স্ক যুগল, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, বিবাহ বহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্কে আবদ্ধসহ যে কোন বয়সের যে কেউ খুব সহজে পতেঙ্গা এলাকার এই হোটেল গুলোতে ,একান্তে সময় পার করতে পারে। এই সুবিধা নিতে কারোরই নুন্যতম তথ্য যাচাইকরণ ছাড়াই চড়া মূল্যে একান্তে সময় কাটানোর জন্য ঘন্টা অনুযায়ী ও সারা রাতের জন্য দেয়া হয় রুম ভাড়া। এছাড়াও সুযোগ বুঝে আবাসিক হোটেলে রুম নেয়া বিশেষ অতিথি ও দর্শনার্থীদের চাহিদামত জোগাড় করে দেয়া হয় মনোরঞ্জনের খোরাক মধু কন্যাদের।
সূত্রে আরো জানা যায়, মধু চক্রের সাথে রুম ভাড়া নিয়ে নির্ভয়ে মাদক সেবনের আস্থাশীল জায়গায় পরিনত হয়েছে পতেঙ্গা এলাকার এই হোটেল, ও গেস্ট হাউজগুলো। এতো সব অনৈতিক আয়োজনের কর্মকান্ড নির্বিঘ্নে করার সুযোগ করে দেয় এই হোটেলের দায়িত্বরত হোটেল বয় থেকে ম্যানেজার ও মালিক পক্ষের লোক পরিচয়দানকারী’রা।
এমন অস্বস্তিকর প্রস্তাবের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নগরীর পতেঙ্গা থানাধীন কাঠঘর থেকে সি বিচ রোড ও সি বিচ এলাকায় অবস্থিত কয়েকটি হোটেলে, দৈনিক চৌকস পত্রিকার একজন প্রতিবেদক কাস্টমার সেজে গেলে সেখানে দেখা যায়, ফ্রন্ট ডেস্কের দায়িত্বে থাকা লোকজন হোটেলে আগত যুগলদের পূর্নাঙ্গ তথ্য বিবরণী না নিয়ে খুব দ্রুত একটি ফরম পূরণ করে তাদের কন্ট্রাক্ট করা রুমে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এসময় নিরাপত্তা জনিত কারণে যুগলদের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং তারা বিবাহিত কিনা বা তারা কোন সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে সেখানে একান্তে সময় কাটাতে এসেছেন এমন নূন্যতম প্রশ্নও তাদের করা হয়না হোটেলের পক্ষ থেকে। প্রতিটি যুগল’র তথ্য বিবরনীতে (এন্ট্রি ফরম) মিথ্যা তথ্য ও অসংগতি দৃষ্টিগোচর হয়। হোটেলটিতে বেশিরভাগ যুগল বোর্ডারের সঠিকভাবে পরিচয় যাচাই না করে, জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা অফিসিয়াল আইডেন্টিফিকেশনের কপি ছাড়াই স্বল্প সময়ের জন্য একান্তে সময় কাটানোর জন্য রুম ভাড়া দেয়া হয়। এমনকি হোটেল রিসিপশনে প্রতিবেদক দাড়িয়ে থাকা অবস্থায়ও প্রতিবেদকদের সামনেই তিন জোড়া অবিবাহিত তরুণ-তরুণীকে মাত্র ২ থেকে ৩ ঘন্টার জন্য রুম ভাড়া দেয় হোটেল কর্তৃপক্ষ।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০-৬০ জন যুগল এভাবে একান্তে সময় কাটাতে আসেন এই হোটেল গুলোতে। সূত্রে জানা যায়, এই হোটেলে চাহিদা অনুযায়ী ব্যাচেলর খদ্দেরদের জন্য আলাদা করে স্মার্ট সুন্দরী পতিতাও রাখা হয়।
আবাসিক হোটেলের নামে অনৈতিক/অবৈধ কাজে সুযোগ করে দিয়ে হোটেলের মালিকগণ টাকার পাহাড় গড়ছেন । এসব আবাসিক হোটেলে কোনো সুশীল সমাজ কিংবা চট্টগ্রামের বাহির থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকগণ এসব হোটেলে উঠলে, তারা খুবই অস্বস্তিবোধ এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সম্মুখীন হতে হয়।
এ বিষয়ে পতেঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা এর আগেও অভিযান করেছি আবারও অভিযান করবো, এবং মামলা দিয়ে চালান দিব।
এ বিষয়ে বন্দর জোনের উপ পুলিশ কমিশনার শাকিলা সুলতানা বলেন, কখন বেশি লোক পাওয়া যায় ওই সময়টাকে যদি আমাদেরকে কেউ ইনফর্ম করে তাহলে অবশ্যই আমরা অভিযান করব, আমরা অনেক সময় অভিযানে গিয়ে দুই একজন কে পাই, কিন্তু বেশি লোক পাওয়া যায় না , কখন বেশি লোক থাকে জানালে আমরা অভিযান করতে সক্ষম হবে।