আব্দুল্লাহ সরদার, ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের ফকিরহাটে তেলজাতীয় ফসল সরিষার চাষে এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগের নানা পরামর্শ, সার ও বীজ সরবরাহ এবং চলতি মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়ার কারণে বিলগুলোতে সরিষার ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ মৌসুমে ফকিরহাটে ১৬০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছিল। ২০২৪-২৫ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬৪ হেক্টর, তবে অর্জিত হয়েছে ১৬৫.৫ হেক্টর।
উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ১,৬৫০ জন কৃষক সরিষা চাষ করেছেন। এর মধ্যে ৬৫০ জন কৃষককে কৃষি বিভাগ থেকে বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে, যার মধ্যে ২০০ জনকে প্রণোদনার আওতায় এ সহযোগিতা দেওয়া হয়। কর্মকর্তাদের মতে, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ এবং সার ও বীজসহ নানা সহযোগিতা প্রদান করছে।
এর ফলে বিভিন্ন বিল, পতিত জমি, ঘেরের পাড় এবং নদীর তীরেও সরিষার চাষ বাড়ছে।
স্থানীয় কৃষক আজহার আলী শেখ, বাবলু শেখ, নিজাম মোল্লা, রকমান মোল্লা, রফি শেখ এবং সাধন বিশ্বাস জানান, একই জমিতে বারবার একই ফসল চাষ করলে জমির উর্বরতা কমে যায়। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী তারা সরিষার চাষ শুরু করেছেন। কৃষক আজহার আলী শেখ বলেন, তিনি এবার বারি-১৪/৯ এবং রিনা-৯ জাতের বীজ ব্যবহার করে সরিষা চাষ করেছেন।আমন ধান থাকা অবস্থায় সরিষা বপন করায় একই জমিতে তিনি বোরো ধানও চাষ করবেন, ফলে বছরে একটি অতিরিক্ত ফসল তুলতে পারবেন।মৌভোগের কৃষক বাবলু শেখ জানান, তিনি দেড় বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন এবং জমিতে ভালো ফলন হয়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা জানান, ফকিরহাটে কৃষি ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য রয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে তারা আশাবাদী। বিনা চাষে আমন ধানের পাশাপাশি নভেম্বর মাসে সরিষা চাষ শুরু করা হয়।
জানুয়ারি মাসে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হওয়ায় কৃষকরা তেল, খৈলসহ নানা চাহিদা পূরণ করতে পারেন।ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অনুকূল আবহাওয়ার কারণে কৃষকরা ভালো ফলনের আশা করছেন। সরিষার সহজ চাষ পদ্ধতির কারণে দিন দিন এ চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। আমন ধান কাটার পর সরিষা চাষ করা হলে একই জমিতে বোরো ধানও চাষ করা যায়। যারা এই পদ্ধতি অনুসরণ করছেন, তারা বাড়তি ফলনের সুবিধা পাচ্ছেন। এ বছর অত্র উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আমরা আশাবাদী।তিনি আরও বলেন, তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে এক ইঞ্চি জমিও যেন ফেলে রাখা না হয়, সে জন্য সবার প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি।