1. sokalerbangla@gmail.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:০৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের সাথে বাংলাদেশ সূফিবাদী ঐক্য ফোরামের সৌজন্য স্বাক্ষাৎ সাংবাদিক আলহাজ্ব কলিম সাহেব খুব অসুস্থ্য—তার রোগমুক্তির জন্য সবার দোয়া কামনা পুলিশ ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছে একটি সুবিধাবাদী মহল তিতাস গ্যাসের হাজার হাজার অবৈধ সংযোগে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার গোয়াইনঘাটের গুরকচিতে আরেকটি শাপলা বিলের সন্ধান পাওয়া গেছে।  ” স্বপ্নবাজ “এর উদ্যোগে টি১০ ক্রিকেট টুনামেন্ট- ২০২৫ সদরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সদানন্দ পাল এর বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ সাবেক কাউন্সিলর “অমিয় সরকার গোরা’র” ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। পিরোজপুরে উপ-সচিবের গ্রাম আদালত পরিদর্শন শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে শীত উপলক্ষে পিঠা খাওয়ার ধুম

বিয়ে পাগল লঞ্চ মালিকের নির্যাতন ও যৌতুকের বলি ৮ নারী

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

রাকিব হোসেনঃ সন্ত্রাসের জনপদ ঢাকার কেরানীগঞ্জে বিয়ে পাগল আওয়ামী লীগ নেতা ও লঞ্চ মালিক জাহিদ মেলকারের নির্যাতন ও যৌতুকের বলি হয়েছেন ৮জন নারী। বিয়ে করেছেন ১০ বছরে ১২ টি। কোন স্ত্রী ই স্থায়ীভাবে সংসার করতে পারেনি। সবাইকে যৌতুক দাবি ও নির্যাতন চালিয়ে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে।

যৌতুক ও নির্যাতনের একাধিক মামলা রয়েছে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। দক্ষিণ ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র তাপস, শুভাঢ্যা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের একজন নেতার সাথে ঘনিষ্ঠতা থাকার কারণে গত ১৫ বছর তিনি রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ অভিযোগ করেছেন ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মিম আক্তার। জানা যায়, নাম তার আশরাফুল আলম জাহিদ। পিতা মৃত আব্দুল ওহাব মেলকার। তিনি একজন লঞ্চ মালিক। মেসার্স এ ওহাব মেরিন নেভিগেশন ব্যানারে বুড়িগঙ্গা নদীতে জাহিদ ১ থেকে ৮ পর্যন্ত তার কয়েকটি যাত্রীবাহী লঞ্চ রয়েছে। লঞ্চগুলো ঢাকার সদরঘাট থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলাচল করে। রাজনৈতিকভাবে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। সখ্যতা রয়েছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র তাপস, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মজিবুর রহমান ওরফে জিনের বাদশা ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এবং শুভাঢ্যা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেনের সাথে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে, ব্যক্তিগত জীবনে এ পর্যন্ত জাহিদ গত ১০ বছরে ১২ টি বিয়ে করছেন। লঞ্চ ব্যবসায়ীদের কাছে তিনি বিয়ে পাগল জাহিদ মেলকার নামে পরিচিত।এলাকাবাসী জানায়, আওয়ামী লীগের মেয়র ও কয়েকজন নেতার সাথে ঘনিষ্ঠতা থাকায় তিনি একাধিক বিয়ে, নারী নির্যাতন সহ একের পর এক অন্যায় করেছেন। এসব অপরাধে গণধোলাইয়ের ও স্বীকার হয়েছেন। আওয়ামী লীগের শাসনামলে সদরঘাটে লঞ্চ ব্যবসায়ীদের কাছে জাহিদ মেলকার মূর্তিমান আতঙ্ক ছিলেন বলে অনেকে জানায়।অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৪ সালে জাহিদ মেলকার প্রথম বিয়ে করেন চরকালিগঞ্জ নিবাসী মৃত আব্দুল জব্বারের মেয়ে জাকিয়া জব্বার সোনিয়াকে। সোনিয়া জানায় ২০১৪ সালের ১৯ মে১ লক্ষ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে হয়। তার ঘরে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে জাহিদ তাকে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এ ব্যাপারে তিনি ২০১৭ সালের ১৯জানুয়ারি আদালতে মামলা করেন। মামলা নাম্বার ১৭। যার এখনো শুরাহা হয়নি। সোনিয়া বর্তমান থাকা অবস্থায় জাহিদ দ্বিতীয় বিয়ে করেন কেরানীগঞ্জ উপজেলার আব্দুল্লাহপুরের দক্ষিণ বাঘাপুর গ্রামের মৃত মোস্তফা কামালের মেয়ে মাহবুবা আক্তার কে। ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি তাদের বিয়ে হয়। জাহিদ মাহবুবার ঘরে ফুটফুটে ৩টি কন্যা সন্তান রয়েছে। মাহবুবা জানায়, জাহিদ মাহবুবার পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে এবং তাকে টাকা না দেওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে। তাকে নির্যাতন করার অপরাধে এলাকাবাসী তাকে একবার গণ ধোলাই দিয়েছে। পরে তিনি ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে জাহিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, যা এখনো চলমান। সোনিয়া ও মাহাবুবা কে রেখেই ২০২১ সালের১ জানুয়ারি বিয়ে করেন ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের বিএ অনার্স পরীক্ষার্থী মীম আক্তার কে। মিম আক্তার কেরানীগঞ্জ উপজেলার চর মীরেরবাগ এলাকার ব্যবসায়ী, সমাজসেবক এবং বায়তুল আমান মসজিদ ও মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো: মিনজু ঢালীর মেয়ে। সুচতুর নারী লিপসু ও বিয়ে পাগল জাহিদ তার ভাগ্নি ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের ছাত্রী বৃষ্টির সাথে মিম আক্তার কে দেখে বিয়ের জন্য পাগল হয়ে যায়। সুকৌশলে মিমদের বাসায় আসা-যাওয়া করে সখ্যতা গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে মীম আক্তারের মা-বাবাকে বলেন, তিনি এতিম তার কোন গার্ডিয়ান নাই। জাহিদ তাদের মেয়েকে বিয়ে করে সন্তান হয়ে থাকতে চান। মিম আক্তারের গার্ডিয়ান এ বিয়েতে অমত পোষণ করলে জাহিদ মিম আক্তারের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য জাহিদ ৮ নামক লঞ্চটি মিম আক্তারের নামে লিখে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তার প্রতিশ্রুতিতে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি পারিবারিকভাবে স্থানীয় মসজিদের ইমাম সাহেব কর্তৃক সরার মাধ্যমে বিয়ে হয়। যা পরে একই বছরের ২০ মার্চ ১০ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে কামিননামা সম্পন্ন হয়। জাহিদ তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গত ১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে বিয়ে পড়ানোর পর ৭ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মিম আক্তারের নামে জাহিদ ৮ নামক লঞ্চটি ৩শ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে দানপত্র দলিল নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে লিখে দেন। কিছুদিন সংসার করার পর জাহিদ তার স্ত্রী মিমের মাধ্যমে মিমের বাবা মিঞ্জু ঢালির নিকট ৩০ লক্ষ টাকা ব্যবসার জন্য যৌতুক দাবি করে। মিমের বাবা টাকা দিতে অস্বীকার করলে মিমের উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। নির্যাতন ও ৩০লক্ষ টাকা যৌতুক চাওয়ায় জাহিদের বিরুদ্ধে মিম বাদী হয়ে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে গত ৪ জানুয়ারি ২০২২ সালে মামলা করেন। এরপর গত চার বছর ধরে মিম তার পিত্রালয় রয়েছেন।মিমা আখতার জানায়, ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি লঞ্চ মালিক আশরাফুল ইসলাম জাহিদের সাথে আমার পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। তখন আমি ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের বিএ অনার্স পরীক্ষার্থী। জাহিদের ভাগ্নি বৃষ্টি আক্তার আমার সহপাঠী। জাহিদ তার ভাগ্নি বৃষ্টির সাথে আমাকে দেখে পছন্দ করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। আমার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠালে আমি সহ আমার পরিবারের কেউই এই বিয়েতে রাজি হয়নি। তখন আমার পরিবারের সবাই জানতো জাহিদ বিবাহিত এবং তার একটি সন্তান রয়েছে। এজন্য এ বিয়েতে আমি সহ আমার পরিবারের কারোই সম্মতি ছিল না। জাহিদ তখন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ইকবাল চেয়ারম্যান ও জিনের বাদশা মজিবর কে দিয়ে আমার বাবাকে চাপ প্রয়োগ করে আমার বাবা-মো. মিঞ্জু ঢালিকে বিয়ে দিতে রাজি করানো হয়। বিয়েতে আমার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা হিসেবে জাহিদ ৮ নামক লঞ্চটি আমার নামে লিখে দেওয়ার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করেন। অতঃপর ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক স্থানীয় মাওলানার মাধ্যমে বিবাহ পড়ানো হয় যা একই বছরের ২০মার্চ ১০ লক্ষ টাকা দেনমোহর পরিষদ করার লক্ষ্যে কামিন রেজিস্ট্রি হয়েছে। বিয়ের পর আমার বাবা ১০ লক্ষ টাকার ফার্নিচার ও তিন লক্ষ টাকার স্বর্ণালংকার দিয়ে ধুমধাম করে আমাকে বিয়ে দিয়েছেন। বিয়ের পরে জানতে পারি আমার স্বামীর আরো একাধিক বিয়ে হয়েছে। তিনি বলেন, আমি ছাড়াও জাহিদের ১১ টি বিয়ের প্রমাণ তার কাছে রয়েছে। যার মধ্যে মাদারীপুরের স্ত্রীর নাম একা, বরিশালের সুমাইয়া আক্তার, বিক্রমপুরের দুইজন যথাক্রমে শোহা ও সোনিয়া, কেরানীগঞ্জে আমি ছাড়াও দুজন রয়েছে যথাক্রমে মাহাবুবা ও জাকিয়া জব্বার। রয়েছে লঞ্চকর্মচারীর স্ত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক। মিমের বাবা মোঃ মিঞ্জু ঢালী এ প্রতিবেদককে বলেন, তিনি জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় জামাই জাহিদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেনি। তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় ইতিমধ্যে তাকে জেলে যেতে হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র তাপসকে দিয়ে হয়রানি করিয়েছে। আমার মেয়ের নামের লঞ্চ জাহিদ গোপনে বিক্রির পায়তারা করছে। বিষয়টি আমার মেয়ে জানার পরে লঞ্চটি নিয়ে আসায় জাহির আমার বিরুদ্ধে লঞ্চ ছিনতাইয়ের অভিযোগ আনছে। আমি তার বিচার চাই।সদরঘাট লঞ্চ মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ রিভার অয়েল এসোসিয়েশনের কয়েকজন কর্মকর্তা নাম না বলা শর্তে বলেন, জাহিদের পিতা আব্দুল ওয়াহাব মেলকার আমাদের সাথে লঞ্চ ব্যবসায়ী ছিল। সে হিসেবে জাহিদ ভাতিজা। তার মৃত্যুর পর ছেলে জাহিদ বাবার সুনাম ধরে রাখতে পারেনি। বিপথে চলে গেছে। ১০/১২টি বিয়ে করে মামলায় জর্জরিত হয়ে আদালতের বারান্দায় দৌড়াচ্ছে।এ ব্যাপারে লঞ্চ মালিক আশরাফুল আলম জাহিদের সাথে যোগাযোগ করে ১২ বিয়ে ও নির্যাতনের কথা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, তার কয়টা বিয়ে ? তার একাধিক বিয়ে হয়েছে। জাহিদ বলেন, আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও কাউকে হয়রানি করি নাই। মিঞ্জু ঢালী আমার বিরুদ্ধে ১১টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। লঞ্চ ছিনতাইয়ের অভিযোগের ব্যাপারে বলেন, মিম এখন আমার স্ত্রীর নয়। তার কাছে ২০২২ সালে তালাকনামা পাঠিয়েছি। তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন,আমি যদি লঞ্চ আমার স্ত্রীর নামে দিয়েও থাকি আমার স্ত্রী লঞ্চ নিয়ে আসেনি। আনছেন তার ভাইয়েরা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved dailychoukas.com 2014
Theme Customized BY LatestNews