শেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ শেরপুরে ঐতিহ্যবাহী সুগন্ধি তুলসীমালা চাল শেরপুর জেলার অন্যতম ঐতিহ্য। এই চালের পিঠা, খই-মুড়ি, ভাতের সুগন্ধ ও স্বাদ আশ্চর্যজনক। “পর্যটনের আনন্দ, তুলসীমালার সুগন্ধ”শেরপুর সদর, নালিতাবাড়ী, নকলা, শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে তুলসীমালা ধানের চাষ হয়। জেলার অর্ধশত স্বয়ংক্রিয় রাইস মিল তুলসীমালা চাল উৎপাদন করে এবং প্রতি বছর প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ও বিদেশে রপ্তানি হয়।
ফলে কৃষিনির্ভর শেরপুরের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে তুলসীমালা ধান।
তুলসীমালা চাল হল একটি মৃদু ও সুগন্ধযুক্ত চাল। উচ্চ মানের এই চাল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থে ভরপুর। ঈদ, পূজা-পার্বণ, বিয়ে, বর-কনেসহ বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠানে পোলাও, বিরিয়ানি, মিষ্টান্ন তৈরিতে তুলসীমালা চালের জুড়ি নেই।
এই ধান শেরপুর জেলার ঐতিহ্য। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে শেরপুরে সবচেয়ে বেশি সুগন্ধি ধান উৎপাদিত হয়। এ জেলার প্রায় ৫০ জন চালকল মালিক ঢাকার চাহিদার অর্ধেক এই জেলা থেকে সরবরাহ করেন। এছাড়া দেশের বড় বড় কয়েকটি কোম্পানির মাধ্যমে তুলসীমালা চাল বিদেশে রপ্তানি হয়।
জেলায় বছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকার তুলসীমালা চাল বিক্রি হয়। এ চাল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছে এবং কৃষিভিত্তিক শেরপুরের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
সম্প্রতি শেরপুর শহরের ঢাকালহাটি এলাকার নিউ শ্যামলী অটোমেটিক ড্রায়ার রাইস মিলে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে তুলসীমালা জাতের ধান থেকে চাল উৎপাদন করা হচ্ছে।
শেরপুর উৎপাদন মৌসুমের শুরুতে কৃষকরা সাধারণত প্রতি মণ ২ হাজার থেকে ২৫০০ টাকায় ধান বিক্রি করেন।