সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় এ বছর এখনো নতুন বইয়ের ঘ্রান পায়নি প্রায় ২০হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে পাঠ্যবই ছাড়াই ক্লাস করছে শিশুরা। বছর ঘুরে নতুন শ্রেনীতে উঠেও নতুন বই প্রাপ্তীর আনন্দ বঞ্চিত শিশুরা ক্লাসে বসে শুধু শিক্ষকের মুখে আলোচনা শুনে পাঠ নিয়ে চলেছেন। কিন্তু নতুন বইয়ের অভাবে এ বছর এখনো বাড়ীতে অধ্যয়ন করার কোনো সুযোগ হয়নি শিক্ষার্থীদের। ফলে স্কুলে বই ছাড়া উৎসব বিমূখ পাঠদানে উপজেলার শিশুদের মধ্যে অনাগ্রহতা দেখা দিয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে।
উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের হাওলাদার ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বই ছাড়াই ক্লাসের শিশুদের পাঠদান দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকরা মুখে মুখে কোমলমতি শিশুদের মৌলিক শিক্ষা দিয়ে চলেছেন।
উক্ত বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এন ইউ প্রিন্স বলেন, এ বছর এখনও আমরা কোনো বই পাইনি। তবুও কিছু পুরাতন বই দিয়ে রীতিমত আমরা ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছি। নতুন বই না থাকায় ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেক কম। যদিও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছে কিন্তু পাঠগ্রহনে তাদের আগ্রহ কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একইসাথে আনন্দময় ও উপভোগ্য হচ্ছে না শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা।
উপজেলা সদরের সদরপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া জিতু বলেন, নতুন বই না হলে স্কুলে আসতে আনন্দ লাগে না। নতুন বইয়ের অপেক্ষায় আছি। পুরান ক্যালেন্ডার রেডি রেখেছি। নতুন বই হাতে পেলের ক্যালেন্ডার দিয়ে বই গুলো মালাট করবো।
এ বিষয়ে একজন অভিভাবক মাহবুব হোসেন অনিক বলেন, কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখনো নতুন বই হাতে না পাওয়ায় ঝিমিয়ে পড়েছে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষা ব্যবস্থা ঠিক রাখতে নতুন বই দেওয়ার বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহন করা জরুরী।
উপজেলার প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়াহিদ খান বলেন, উপজেলায় রয়েছে ১৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া প্রায় ২০টি কেজি স্কুল। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে পুরাতন কিছু বই সংগ্রহ করে কোন রকম ঢিলেঢালা ভাবে ক্লাস করছেন। আজ বৃহস্পতিবার আমরা ১ম শ্রেনীর বাংলা, ইংরেজি ও গনিত এবং ২য় শ্রেনীর বাংলা, ইংরেজি ও গনিত বিষয়ের ৩টি করে বই পেয়েছি, শীঘ্রই আমরা এসব বই বিদ্যালয় গুলোতে বিতরণ করবো। কবে নাগাদ বাকি বই গুলো পাবো সেটা এখন শিওর বলা সম্ভব হচ্ছে না তবে শীঘ্রই বাকি বই গুলো চলে আসবে।
উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো ২৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫টি মাদ্রাসার প্রায় ১২হাজার শিক্ষার্থীরাও এখনো সব বই পায়নি। আমরা ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ৩টি, ৭ম শ্রেনীর ৩টি, ৮ম শ্রেনীর ২টি, ও ১০ম শ্রেনীর ৩টি বিষয়ের বই পেয়েছি। এসব বই ইতিমধ্যে আমরা বিদ্যালয় গুলোতে বিতরণ করেছি। মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বাকি বইয়ের অপেক্ষায় রয়েছেন।