মোঃ আলতাফ হোসেন বাবু, বিভাগীয় চিফ, রাজশাহীঃ সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা থানাধীন রশিদপুর পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুস সালাম শেখ এর ছোট ছেলে মোঃ সবুজ শেখ (২৮)কে পূর্ব শত্রুতার জেরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একই গ্রামের রুবেল এর নেতৃত্বে কতিপয় সন্ত্রাসী গত ২০ শে সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার সময় আসামীদের পূর্ব ঘোষণা ও পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নৃসংসভাবে হত্যা করে। মামলার বর্ণনামতে নিহতের বড়ভাই বাদী নুরনবী (ফিরোজ)এর পরিবর্তে বাদীর এজাহারে বর্নিত ঘটনার স্থান, তারিখ ও সময়ে বাদীর নিজের ছোটভাই সবুজ শেখকে রোডের দেখভাল করার দায়িত্ব দেয় বড়ভাই নুরনবী ফিরোজ। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ০১ ও ০২ নং আসামীর নেতৃত্বে অন্যান্য আসামিরা সবুজ শেখকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘটনাস্থলে রোডের দক্ষিণ পাশে ফাঁকা জায়গায় ফেলে রাখে,এ বিষয়ে নিহত সবুজ শেখের নিজের চাচী লাভলী বেগম জানান, তাৎক্ষণিক বাদী ফিরোজ সহ স্বাক্ষীগণ নিহত সবুজের মৃত্যু দেহ দেখার পরে সলঙ্গা থানা পুলিশকে খবর দিলে উক্ত থানা পুলিশ নিহত সবুজ শেখের লাশ উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠান, পরবর্তীতে নিহত সবুজের মৃত্যু দেহ কবর দেয়া হয়েছে, কিন্তু সবুজ হত্যার প্রায় দুই মাস হতে চললেও সলঙ্গা থানা পুলিশ কোন আসামী গ্রেফতার করেনাই, যাতে করে নিহতের পরিবারের লোকজন হতাশার প়হর গুনছে! লাভলী বেগম আরো জানান, আসামীরা অস্ত্র স্ব শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সবুজকে মারধর করছিল, ফিরোজ সহ স্বাক্ষীগন ভয়ে সেখানে উপস্থিত হওয়ার সাহস পাইনি কিন্তু সবুজের মারধরের ঘটনা স্বচক্ষে দেখেছেন বলেও দাবী জানান। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে বাদীকে এবং তার পরিবারের লোকজনের সাথে মোবাইলে কথা বলে এবং ভিডিও সাক্ষাৎকার গ্রহন করা হলে নিহত সবুজ শেখের গর্ভধারিণী মা ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, এজাহার নামীয় আসামীরা একই গ্রামের এবং এলাকায় বসবাস করে,আসামীরা অর্থশালী ও প্রভাবশালী হওয়ায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। আসামীদের সাথে জমিজমার বিরোধের জের থাকায় মামলা মোকদ্দমা চলছিল এবং চলছে যে, কারণেই মাঝে মধ্যেই এক ও দুই নং আসামীর নেতৃত্বে আমাদের পরিবারের লোকজনকে শাসন গর্জন ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিলো এবং মাঝে মধ্যেই আমার দুই ছেলেকে সুযোগ পেলেই যেকোনো জায়গায় মেরে লাশ করে রাখবে, নিহতের মা ও পরিবারের লোকজন আরও জানান, সবুজ শেখকে হত্যার পূর্বের দিন প্রকাশ্যে ০১ ও ০২ নং আসামী সহ অন্যান্য আসামীরা বলেন, তোর দুই ছেলের মধ্যে যাকে সুযোগে পাবো অথবা তোদের পরিবারের লোকজন যাকেই সুযোগে পাবো তাঁকেই হত্যা করা হবে, সেদিনই দিবাগত রাতে আমাদের সবুজকে হত্যা করেছে। মামলার বাদী নুরনবী ফিরোজ ও নিহত সবুজ শেখের মা আরও জানান, আমার ছেলে সবুজ শেখকে হত্যার বিষয়ে সলঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে থানার তৎকালীন ও বর্তমান অফিসার ইনচার্জ মোঃ রবিউল ইসলাম আমাদের মামলা নেননি, পরবর্তীতে সিরাজগঞ্জ আমলী আদালতে আমার বড় ছেলে,নুরনবী (ফিরোজ) বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন এবং মাননীয় আদালত মামলা আমলে নিয়ে অফিসার ইনচার্জ সলঙ্গা থানাকে দায়িত্ব দেন,কিন্তু আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও সলঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আসামীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। নিহত সবুজ শেখের পরিবারের লোকজন আরও জানান, সলঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ রবিউল ইসলাম সহ তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীদের নিকট থেকে বড় ধরনের উৎকোচ নিয়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট রিপোর্ট পরিবর্তন সহ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে সবুজ শেখ হত্যা মামলাকে অন্য খাতে প্রভাবিত করার প্রক্রিয়া চলমান রেখেছেন, যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মামলার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বাদী ফিরোজ মোবাইলে বলেন, আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করাই তারা প্রকাশ্যে আমি ও আমার পরিবারের লোকজনকে হত্যা সহ বিভিন্ন প্রকাশ্যে হুমকি প্রদর্শন করছে। বাদী ফিরোজ এবং নিহত সবুজের এইচএসসি পড়ুয়া বোন ফাতেমা জানাই, আমাকে পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন সহ অকথ্য ভাষায় ও আমার বাবাকে বিভিন্ন সময় মারধর করার জন্য লাঠি সোটা নিয়ে তেড়ে মারতে আসছে, আমরা বর্তমানে ব্যাপক আতঙ্কিত ও বিপদগ্রস্ত। নিহত সবুজ শেখের মা, বাবা,তার ভাই বাদী ফিরোজ, তার ছোট বোন ফাতেমা সহ সকলেই আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে তাদের বিচারের পাশাপাশি সঠিক শাস্তির দাবী জানিয়ে আসামীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের হাত থেকে রক্ষার দাবী জানিয়েছেন। সবুজ শেখ হত্যার ঘটনা সম্পর্কে সলঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ রবিউল ইসলাম এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি মামলা বিষয়ে জানেন এবং আসামীদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে মামলাটিকে তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বলে মনে করছেন। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে অফিসার ইনচার্জ রবিউল ইসলাম বলেন, আমি বাদী এবং আসামীদের বিষয়ে অনেক কিছু জানি,তারপরও আসামিরা বাড়াবাড়ি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জনাব, মোঃ ফারুক হোসেনের সাথে কথা বলা হলে তিনি আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।