মোঃ রাশিদুল ইসলাম, মাগুরা প্রতিনিধিঃ
মাগুরার শ্রীপুরে প্রেম ঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করে একজন নিহত ও দুইজন আহত।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৪-জুন)মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ছোনগাছা গ্রামের দিদার মন্ডলের স্কুল পড়ুয়া কন্যা লিমার সাথে একই উপজেলার বরিশাট গ্রামের আজ্জাত জোয়াদ্দারের পুত্র মঞ্জুরুল জোয়াদ্দার (২৫) এর সাথে দীর্ঘ দিন যাবত ছোন গাছা গ্রামের দিদার মন্ডলের কন্যা লিমার প্রেমের সম্পর্ক্য চলছিল। এ বিষয়টি মেয়ের পিতা দিদার মন্ডল জানতে পেরে মেয়ের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এরই এক পযার্য়ে গত ১৪ জুন দিদার মন্ডলের মেয়ে লিমা তার প্রেমিক মন্জিরুলকে তার বন্ধুর মাধ্যামে জানায় তার বিয়ে ঠিক করেছে আগামীকাল বুধবার বিবাহের দিন ধায্য করেছে তার পরিবার আমাকে তুমি যদি না নিয়ে যাও তাহলে আমি বিষ পানে আত্ম হত্যা করবো। এ সময় মন্জিরুল তার বন্ধু বরিশাট গ্রামের আব্দুল জলিলের পুত্র রাসেল(২৮) একই গ্রামের রাজা মৃধার পুত্র রাজু (২২) সহ আরো দুইজনকে নিয়ে দুটি মটর সাইকেল যোগে ছোন গাছা গ্রামে দিদার মন্ডলের বাড়িতে সন্ধা ৭ টার দিকে পৌছায়। এ সময় মন্জিরুল ও তার বন্ধুরা কিছু বুঝে উঠার আগেই লিমার পিতা দিদার মন্ডল ও কাকা মিজান মন্ডলসহ তার লোকজন মন্জিরুল ও তার বন্ধুদের উপর হামলা করে। এক পযার্য়ে হামলার শিকার হয়ে মন্জিরুল ও তার দুই বন্ধু পালিয়ে গেলেও রাসেল শেখ ও রাজু মৃধা হামলায় গুরুতর আহত হয়ে হামলা কারীদের হাতে ধরা পড়ে। হামলায় রাসেলের মাথায় গুরুতর জখম হয়। এক দেড় ঘন্টা আটকে রাখার এক পর্যায়ে উপজেলা আওয়ালীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজি তারিকুল ইসলামের সহযোগিতায় রাসেল ও রাজু মৃধাকে তার পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়।সেখানে রাজুকে ভর্তি করলেও রাসেলের অবস্থার অবনতি দেখে ডাক্তার তাকে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে রিপার্ট করে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠায়। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে বুধবার ভোরে পৌছালে সেখানে কতর্ব্যরত চিকিৎসক রাসেলকে মৃত ঘোষনা করে।
এ বিষয়ে নিহতের পিতা আব্দুল জলিল শেখ জানান, আমার ছেলে রাসেল ইজি বাইক চালায় মঙ্গলবার সন্ধায় মঞ্জুরুল আমার ছেলেকে ছোনগাছা গ্রামে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর ওই গ্রামের লোকজন আমার ছেলেকে মারধর করে মারাত্মক আহত করে। আহতবস্থায় রাসেল ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। যারা আমার ছেলে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে তাদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করি।
ছোনগাছা গ্রামের স্কুল ছাত্রী লিমা খাতুনের মা আয়েশা খাতুন জানান, আমার মেয়ে খামারপাড়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়ে। সে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে বরিশাট গ্রামের মঞ্জুরুলসহ কয়েকজন বখাটে যুবক প্রায়ই তাকে বিরক্ত করতো। বিষয়টি আমরা পরিবার থেকে জানতে পেরে প্রায় ৫ মাস তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে রাখি এবং তার দ্রুত বিয়ের বিষয়ে চেষ্টা করি। ১৫-জুন বুধবার মেয়েটির বিয়ের দিন ধার্য করা হয়। মঞ্জুরুলসহ তার বন্ধুরা বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে (১৪-জুন) মঙ্গলবার সন্ধার দিকে আমার বাড়িতে ঢুকে আমার কন্যাকে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে আমার মেয়েকে রক্ষা করতে আত্মচিৎকার দিলে প্রতিবেশিসহ গ্রামবাসি ছুটে এসে বখাটেদের হাত থেকে আমার মেয়েকে রক্ষা করে। এরপর অন্ধকার রাতে কি ঘটনা ঘটেছে আমরা তা কিছুই জানি না।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ প্রিটন সরকার জানান, ছোনগাছা গ্রামে একটি প্রেমঘটিত ঘটনায় বরিশাট গ্রামের ৬ জন যুবক মঙ্গলবার রাতে লিমা নামে একটি মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য টানাহেচড়া করে। এ সময় তার মা-বাবার চিৎকার শুনে এলাকার লোকজন এসে তাদের মারধর করে আহত করে। আহতের মধ্যে রাসেল চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায় । থানায় এখনও কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি । অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে । উক্ত ঘটনায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।