বিশেষ প্রতিনিধিঃ রাজধানী ঢাকা ও সাভার আশুলিয়াসহ যেসকল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও হত্যা মামলা অন্তর্বর্তী করা হয়েছে তা সরকারের স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিশ্রম্নতির লঙ্ঘন।
সাংবাদিকদের নামে এভাবে হত্যা মামলা দেওয়ার প্রবণতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করছে বলে মনে করেন সম্পাদক পরিষদ। গত শনিবার ১৪/০৯/২০২৪ইং এক বিবৃতিতে সম্পাদক পরিষদ এ কথা জানায়। এ ব্যাপারে দেশের শীর্ষ পত্রিকা প্রথম আলোসহ একাধিক সংবাদপত্রে এই বিবৃতি প্রকাশ হয়।
উক্ত বিবৃতিতে বলা হয়, ঢালাও অভিযোগের ভিত্তিতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার ঘটনা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সম্পাদক পরিষদ দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চায়, এ ধরণের মামলা প্রচলিত আইনের অপব্যবহারের শামিল। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিশ্রম্নতিরও লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সাংবাদিকেরা কোনো অপরাধ করে থাকলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ ধারা অনুসরণ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। সম্পাদক পরিষদ আরো জোর দিয়ে বলতে চায় যে, পেশাদারত্ব বাদ দিয়ে নীতিবিবর্জিত ও লেজুড়বৃত্তির সাংবাদিকতা বর্জনীয়। বিশেষ করে যে, সাংবাদিকেরা বিগত সময়ের সরকারের নানা নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ডে সাংবাদিকতার নামে অপপ্রচার বা এমন সমর্থন দিয়েছেন, এ বিষয়ে প্রেস কাউন্সিলে একটি কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও অনুসন্ধান হতে পারে। বিগত সরকারের সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ), সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ (সিএসএ) নিবর্তনমূলক বিভিন্ন আইন ও হয়রানিমূলক আটক—গ্রেফতারের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কন্ঠরোধের যে প্রয়াস চালানো হয়েছিলো, তা বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে অত্যন্ত নিন্দিত ও সমালোচিত হয়েছিলো। আর বর্তমানে সাংবাদিকদের নামে এভাবে ক্রামাগত হত্যা মামলা দেওয়ার প্রবণতাও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করছে বলে সম্পাদক পরিষদ মনে করে। এ অবস্থায় যথাযথভাবে যাচাই—বাছাই করে অভিযুক্ত সাংবাদিকদের কোনো সংশ্লিষ্টতা না পাওয়া গেলে এসব মামলা থেকে তাঁদেরকে অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানায় সম্পাদক পরিষদ।
উক্ত বিষয়ে দৈনিক চৌকস পত্রিকার সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থা’র চেয়ারম্যান এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, রাজধানী ঢাকা ও সাভার আশুলিয়ায় আন্দোলনে ছাত্র—জনতা ও পুলিশকে হত্যা এবং সরকারি অস্ত্রসহ মালামাল লুটের ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদেরকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক, যেসকল এলাকায় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সেইসব এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে এবং সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আটক করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। তবে হত্যা মামলায় যে সকল সাংবাদিকদেরকে আসামী করা হয়েছে তারা যদি জড়িত না থাকেন তবে তাঁদেরকে হয়রানি না করার জন্য দাবি জানাচ্ছি। ১৯৭১ সালের পর ২০২৪ সালে আবারও গণহত্যার মত ঘটনা বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। আমাদের যেসকল সাংবাদিক হত্যার সাথে জড়িত না, তাদেরকে কেন হত্যা মামলায় আসামী করে সম্মানহানী ও হয়রানি করা হচ্ছে? আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সাংবাদিকরা কোনো চোর, ডাকাত নয়, তাদেরকে যেন অসম্মান না হয় সেদিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে।