মোঃ রফিকুল ইসলাম, শ্রীপুর, গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর গ্রামের মানিকজানের উপর গত ০৬/১০/২৪ ইং তারিখে পূর্ব সূত্র তার জের ধরে অতর্কিত এক হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় মানিকজানকে তার স্বামী বাবুল হোসেন শ্রীপুর উপজেলা মেডিকেল হাসপাতলে চিকিৎসা নেয়। এবং শ্রীপুর মডেল থানায় বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। আজ ৩০ শে অক্টোবর। এখন পর্যন্ত এই অভিযোগের তদন্ত না হওয়ার কারণে ভুক্তভোগীরা উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে জীবনযাপন করে যাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী মানিক জান সকালের বাংলাকে/ চৌকসকে বলেন – বিগত ৬ অক্টোবর সকাল অনুমান ৮:৩০ মিনিটের সময় প্রতিবেশী মোঃ হালিম মন্ডল (৫০),পিতা মৃত হাসেম মন্ডল, মোঃ মোতালেব (৫৫),পিতা নূর হোসেন, তারেক হোসেন (২০), সোহাগ উভয়ের পিতা মোঃ মোতালেব, মোছাম্মৎ সাবিনা আক্তার (৪০) স্বামী মোঃ হালিম মন্ডল তার ওপর অতর্কিত হামলা করে। মোঃ হালিম তার দলবল নিয়ে ভুক্তভোগী মানিকজনের বসত বাড়িতে এসে অকথ্য ভাষায় তাকে গালিগালাজ করে যাচ্ছে। এক পর্যায়ে হালিম তার লোকজন নিয়ে মানিকজনের ঘরের ভেতর ঢুকে তাকে টেনে হেচরে ওঠানে এনে এলো পাথারি মারপিট শুরু করে। তার চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন দৌড়ে এসে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য শ্রীপুর উপজেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। মানিকজান বলেন হালিম মন্ডল ও তার স্ত্রী দুজনে আমাকে ঘর থেকে টেনে এনে তার লোকজন নিয়ে আমার উপর এলোপাথাড়ি পিটাতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। মানিকজান আরো বলেন আমার বাড়িতে আমি একাই ছিলাম। আমার স্বামী সকালেই কাজের জন্য বাড়ি থেকে বাহির হয়ে যায়। এই সুযোগে তারা আমার বসত বাড়িতে ঢুকে আমাকে এভাবে মারপিট করে।
মানিকজানের স্বামী মোহাম্মদ বাবুল (৫০) সকালের বাংলাকে /চৌকসকে বলেন – ৬ অক্টোবর রবিবার দিন সকালে খাওয়া দাওয়া করে কাজের জন্য আমি বাড়ি থেকে বের হই। কিছুদূর যাওয়ার পর আমার নাতিন আমাকে ফোন দেয়। ফোনে বলে হালিম ও তার বউ নানিরে মাইরে ফেলছে। এই খবর শুনে আমি দৌড়ে বাড়িতে এসে দেখি লোকজনের ভিত। আমি লোকের ভিড় ভেঙে দেখি আমার স্ত্রী মানিকজান মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। আর ওখানে যারা ছিল তারা তার মাথায় পানি ঢালতে ছিল। আমি ওইখানে গিয়ে দেখি আমার স্ত্রী প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় আছে। তারপর আমি দেরি না করে শ্রীপুর উপজেলা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা করি। এবং শ্রীপুর উপজেলা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। আজ ২৪ দিন পার হতে চলেছে এখন পর্যন্ত অভিযুগের তদন্ত না হওয়াতে আমি খুব উৎকণ্ঠার মধ্যে আছি। অভিযুগের তদন্ত না হওয়ার কারণে হালিম মন্ডল ও তার লোকজন বিভিন্ন সময় আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েকদিন পূর্বে অনুমান রাত দশটা সাড়ে দশটার সময় কিছু লোকজন আমার বসতবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য বাড়ির পাশে অবস্থান করছিল। আমি টের পেয়ে তাৎক্ষণিক শ্রীপুর মডেল থানার ওসি স্যার কে জানাই, আমাদের ওয়ার্ড মেম্বারকেও জানাই, উপায়ান্তর না দেখে ৩৩৩ নাম্বারে ফোনে কথা বলার সময় হালিম ও তার লোকজন টের পেয়ে এখান থেকে চলে যায়। মোঃ বাবুল হোসেন বলেন এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা মডেল থানার ওসি বলেন আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানোক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লুকোবলের অভাবে তদন্ত করতে আমাদের দেরী হচ্ছে। ওয়ার্ড মেম্বার বলেন এমন একটি ঘটনা ঘটেছে আমরা শুনেছি এবং মানিকজানের স্বামী এ বিষয়ে আমাকে অবহিত করেছেন।
ভুক্তভোগী মানিকজান বলেন, হালিম ও তার স্ত্রী তাদের লোকজন নিয়ে আমাকে মারার সময় আমার বাবার দেয়া আটানী ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন আমার গলা থেকে ছিনিয়ে নেয়। মোহাম্মদ বাবুল হোসেন বলেন আমি অটোরিকশা কেনার জন্য এক লক্ষ টাকা ঘরে জমা করে রেখেছিলাম। আমার জমাকৃত টাকাগুলিও ওরা নিয়ে যায়। বর্তমানে আমরা অত্যন্ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগিতেছি। মোঃ বাবুল হোসেন আরো বলেন যারা বাড়িতে এসে আমার স্ত্রীকে বিবস্ত্র করে মারপিট করলো আমি তাদের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি। একজনের বাড়িতে ঢুকে কেউ যেন অন্যায় ভাবে আর কাউকে এভাবে মারপিট এবং টাকা পয়সা লুটপাট করে নিতে না পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক বলেন – বাবুল এবং হালিমদের মধ্যে জমি- জমা এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে কলহ লেগেই থাকতো। জনৈক আরো বলেন এর একটা ন্যায় বিচার হওয়া উচিত।