1. sokalerbangla@gmail.com : admin :
  2. dainikchoukos@gmail.com : jahid hasan : jahid hasan
শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ০১:৫০ পূর্বাহ্ন
সদ্য প্রাপ্ত:-

কেরাম বোর্ডের আড়ালে রমরমা জুয়া: প্রশাসনের নীরবতা, স্থানীয়দের উদ্বেগ

প্রতিবেদকের নামঃ
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫

শাহিন আলম 

 

 

ক্যারাম বোর্ড খেলা একটি জনপ্রিয় সামাজিক বিনোদন হলেও, মধ্যম হালিশহর আনন্দবাজার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে এই খেলাটি এখন পরিণত হয়েছে এক ধরনের জুয়ার আসরে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই এলাকায় প্রত্যেকটি চায়ের দোকানে কেরাম খেলার নামে টাকার বিনিময়ে চলছে অবাধ জুয়া বাণিজ্য। দিনের বেলায় সাধারণ চায়ের দোকান, আর রাতে যেন হয়ে ওঠে জুয়ার আড্ডা।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই এলাকায় কেরাম বোর্ডের সংখ্যা ২০০টিরও বেশি এবং মোট দোকানের সংখ্যা ৪৫ এর অধিক। এসব দোকানে প্রতিনিয়ত চলে জুয়ার আসর, যেখানে খেলোয়াড়রা নগদ টাকা বা বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী বাজি ধরে অংশ নেন খেলায়। রাত যত বাড়ে টাকার অঙ্কও বেশি বাড়ে। ৫০০ থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত বাজি ধরা হয় প্রতি খেলায়।

 

এই অবৈধ কার্যকলাপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খেটে খাওয়া দিনমজুর ও সাধারণ মানুষ। দিনের রোজগার রাতেই উড়ে যাচ্ছে কেরাম বোর্ডের টেবিলে। এর ফলে অনেক পরিবারে দেখা দিচ্ছে অশান্তি, আর্থিক টানাপোড়ন, এমনকি পারিবারিক ভাঙনের ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

 

স্থানীয় সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, এই অবৈধ জুয়া বন্ধ করতে আনন্দবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে একাধিকবার মৌখিকভাবে জানানো হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। বরং অভিযোগ উঠেছে, কিছু পুলিশের সোর্স পরিচয়ধারী ব্যক্তি এই অবৈধ কর্মকাণ্ডকে আরও উৎসাহিত করছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দোকানদার জানান, ‘মেহেদী’ ওরফে মন্টু’ নামের এক ব্যক্তি নিজেকে পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে কেরাম বোর্ড চালু দোকানগুলো থেকে প্রতিদিন ৮০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে। এই হার অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় ১৬ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে প্রায় ৫ লাখ টাকার মতো অর্থ সংগ্রহ হচ্ছে, এখন প্রশ্ন হল এই চাঁদার অংশ কাদের পকেটে ঢুকছে।

 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই চাঁদার অর্থের একটি অংশ যাচ্ছে কিছু নামধারী সাংবাদিক, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং মধ্যম হালিশহর পুলিশ ফাঁড়ির কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ সদস্যদের পকেটে। যদিও বন্দর থানার কিছু পুলিশ সদস্য বলেছেন, তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই এই কর্মকাণ্ডে।

 

এ বিষয়ে পুলিশের কথিত সোর্স মেহেদী ওরফে মন্টুর সাথে যোগাযোগ করলে সে প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং পরে বলেন, টাকাটা আমি উঠাই না, অন্য কেউ ওঠায়, আমি কিছুক্ষণের মধ্যে তার তথ্য দিচ্ছি আপনাকে, এই বলে ফোন কেটে দেন।

 

মধ্যম হালিশহর আনন্দবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নোমান বলেন, আমাদের কাছে এমন কোনো অভিযোগ আসেনি। যদি আসে, আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। আজই প্রথম জানলাম বিষয়টি।

 

এদিকে, বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আহসান জানান, তাস খেলার বিকল্প হিসেবে কেরাম বেছে নেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে, তবে তদন্ত করে আজকের মধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

স্থানীয়রা বলছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে যুবসমাজ আরও ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে। তাই প্রশাসনের দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছেন এলাকাবাসী ও সচেতন নাগরিক সমাজ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved dailychoukas.com 2014-2025
Theme Customized BY LatestNews