ক্রাইম রিপোর্টারঃ রাজীব খাঁন
রাজশাহীর রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মোখলেসুর রহমান মুকুলকে বালিঘাট ইজারা দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এই ইজারা প্রদান নিয়ে নানা প্রশ্ন এবং অভিযোগ উঠে এসেছে। রবিবার রাজশাহী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি, যুবদল এবং অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী, বালিঘাট ব্যবসায়ী এবং সাধারণ জনগণ।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন হড়গ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও বালিঘাট ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নাফ মুন্নাফ। তিনি বলেন, মোখলেসুর রহমান মুকুল, যিনি একাধিক মামলার আসামি এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে পরিচিত, তাকে ইজারা দেওয়া প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের উদাহরণ।
বক্তারা জানান, পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ সালে গোদাগাড়ী জোনের পাঁচটি বালিঘাট — দক্ষিণ নির্মল চর, শেখেরপাড়া, এলাহীনগর, চরবার্নিশ, এবং পদ্মানদী — মুকুলকে ইজারা দেওয়া হয়। মুকুলের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানায় বিস্ফোরক আইনসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ৩৭ নম্বর কেস, যেখানে তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনের ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি হত্যা মামলা থাকার পরও তিনি কীভাবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ইজারার টাকা জমা দেন এবং স্বাক্ষর করেন, তা নিয়ে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, মুকুল একজন মাস্তান, খুনি এবং ৫ আগস্টের সহিংসতার অর্থ যোগানদাতা। এত কিছুর পরও তার ইজারা প্রদান, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তারা বলেন, মুকুল কেবল রাজনৈতিক আশ্রয়ে এমন সুযোগ পাচ্ছেন, যা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।
মানববন্ধনে বক্তারা জেলা প্রশাসকের কাছে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে মুকুলের ইজারা বাতিলের দাবি জানান। তারা বলেন, যদি এই সময়ের মধ্যে ইজারা বাতিল না করা হয়, তাহলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে। সেই সঙ্গে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। বক্তারা আওয়ামী লীগের সহযোগীদের পুনর্বাসন এবং তাদের সহযোগীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানান।
এই পরিস্থিতি প্রশাসনের জবাবদিহিতা এবং কার্যকর পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তাকে সামনে নিয়ে এসেছে। জনমনে প্রশ্ন, কীভাবে একজন পলাতক আসামি প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ইজারা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারলেন। এই ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।