এস, এম, জুবায়ের:
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক যাত্রীর অস্বাভাবিক আচরণের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি নিয়ে জনমনে নানা প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, এক যুবক তার লাগেজ আছাড় মেরে ফেলছেন এবং পরপর লাথি মারছেন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা মন্তব্য উঠে আসে, যেখানে কেউ কেউ বিমানবন্দরে প্রবাসীর সঙ্গে অসদাচরণ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
তবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এ বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। ৪ জুন রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বেবিচক জানায়, ঘটনার মূল প্রেক্ষাপট ভিন্ন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ৪ জুন রাত ১টা ৩৬ মিনিটে বোর্ডিং ব্রিজ ৬-এ নিরাপত্তা রাউন্ড চলাকালে মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের এক যাত্রী মো. তুহিন আলী উচ্চস্বরে চিৎকার ও অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করছিলেন। মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের দুই প্রতিনিধি তাকে শান্ত করতে এবং তার পাসপোর্ট ও মালামাল বুঝিয়ে দিতে চেষ্টা করলেও তিনি সহযোগিতা করেননি।
পরবর্তীতে তিনি তার ব্যাগ, পাসপোর্ট ও কিছু অর্থ বোর্ডিং ব্রিজ এলাকায় ছুঁড়ে ফেলেন এবং পারিবারিক বিষয়েও অশালীন মন্তব্য করেন। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং আশপাশে লোকজন জড়ো হওয়ায় অন্য একটি ফ্লাইটের স্ক্যানিং কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, নিরাপত্তা টিম এবং এয়ারলাইনস প্রতিনিধিরা তাকে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ব্যাগেজ বেল্ট এলাকায় নিয়ে যেতে চাইলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং বেল্ট ১-এর দিকে চলে যান। এ সময় তার আচরণকে “অস্বাভাবিক ও আক্রমণাত্মক” বলে উল্লেখ করা হয়।
পরিস্থিতি শান্ত হলে যাত্রীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা জানান, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আগে মাদকাসক্ত অবস্থায় এমন আচরণ করেছেন এবং সেদিন রাতে বৈরী আবহাওয়ায় তারা বিমানবন্দরে আসতে পারেননি। ভোর ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে যাত্রী স্বাভাবিক হয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন বলে জানায় বেবিচক।
ঘটনার সময় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, সিভিল এভিয়েশন এবং সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনস প্রতিনিধি দল পেশাদারিত্ব ও ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
বেবিচক আরও জানায়, ঘটনার কিছু অংশ সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচারিত হয়েছে, যা জনমনে ভুল ধারণা তৈরি করেছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার সংবাদ পরিবেশনের আগে যথাযথ তথ্য যাচাইয়ের অনুরোধ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ, যাতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন থাকে।