হাসান আলী (নাটোর প্রতিনিধি) — কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করতে এসে নাটোরের আড়তগুলোতে দাম না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
সরকার চলতি বছরে ঢাকার বাইরে প্রতি পিস গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করলেও নাটোরের চক বৈদ্যনাথ এলাকার আড়তগুলোতে বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। বিক্রেতাদের অভিযোগ, এই দামে বিক্রি করলে খরচই ওঠে না।
রাজশাহী থেকে আসা মৌসুমি ব্যবসায়ী রাজু আহমেদ জানান, ছাগলের চামড়া গ্রামাঞ্চল থেকে ২৫-৩০ টাকা দরে কিনে এনে ৪০ টাকায় বিক্রি করেও খুব অল্প লাভ হয়েছে। অন্যদিকে, গরুর চামড়া নিয়ে বিক্রিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
সিংড়া উপজেলার পুটিমারি মাদ্রাসার শিক্ষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, “সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে, সে দামে কেউ কিনছে না। ষাঁড় গরুর চামড়া ৫০০-৬০০ টাকা, গাভীর চামড়া ২৫০-৪০০ টাকায় নিতে চাইছে। এতে করে পরিবহন খরচই ওঠে না।”
তবে আড়তদাররা বলছেন, চামড়ার গুণমান ও লবণের সংকটের কারণে দাম কিছুটা কম হতে পারে। নাটোর চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপ সমিতির সহ-সভাপতি নাসিম খান বলেন, “সরকারি নির্দেশনা অনুসারে দাম নির্ধারণের চেষ্টা চলছে। তবে লবণের দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছু প্রভাব পড়েছে।”
আরেক আড়তদার রওশন জানান, “কিছু চামড়ায় ‘লাম্পি স্কিন’ রোগ দেখা দেওয়ায় সেগুলো কম দামে নেওয়া হচ্ছে। তবে অন্যান্য বছরগুলোর তুলনায় এবার বাজার ভালো।”
চামড়ার বাজার তদারকি করতে সন্ধ্যায় আড়ত এলাকায় যান নাটোর জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুল ইসলাম। তিনি বলেন, “চামড়ার সরকারি দাম প্রতি পিস ১ হাজার ১৫০ টাকা। আড়তে বেশ ভিড় থাকলেও পরিস্থিতি উৎসবমুখর। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।”
চামড়া সংরক্ষণ, মান নিয়ন্ত্রণ এবং বাজার ব্যবস্থাপনা আরও স্বচ্ছ রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও সাধারণ বিক্রেতারা।