চাঁদপুর প্রতিনিধি :
চাঁদপুরে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুতের সময় দুর্ঘটনায় অন্তত তিন শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু চাঁদপুর শহর এলাকাতেই দেড় শতাধিক মানুষ চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত একটানা আহতদের আগমন ঘটে। একই সঙ্গে জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে আরও অনেকে। অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন, তবে গুরুতর আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে এবং ১০ থেকে ১২ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতদের বেশিরভাগই ছুরি, চাপাতি বা অন্যান্য ধারালো সরঞ্জাম ব্যবহারে অসাবধানতাজনিত আঘাতে আক্রান্ত হয়েছেন। কারও আঙুল কেটে গেছে, কেউ গরুর লাথি বা গুঁতায় আহত হয়েছেন। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, কোরবানির সময় অনেকেই অপ্রশিক্ষিতভাবে কসাইয়ের কাজ করেন, ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। চাঁদপুর শহরের আহত শিমুল হাসান, আমিন, সাদেক ও জসিম মেহেদীসহ অনেকে বলেন, ছোট ছুরি দিয়ে মাংস কাটতে গিয়ে হাত কেটে গেছে।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান নোমান মিয়া জানান, ঈদের দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র চার ঘণ্টার ব্যবধানে শতাধিক রোগী হাসপাতালে আসেন। হাতে ও কব্জিতে কাটা এবং হাড়ভাঙা জাতীয় আঘাতই বেশি ছিল। বিকেল নাগাদ রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমে আসে। তবে রোববার সকাল থেকে মারামারির ঘটনাসহ নতুন রোগী আসতে শুরু করেছে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত অর্ধশতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন বলে জানান তিনি।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সমিষ্টা দে বলেন, “ঈদের দিনে যেসব রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন, তাদের কেউ ছুরি চালাতে গিয়ে নিজেই আঙুল কেটে ফেলেছেন, আবার কেউ গরুর শিংয়ের আঘাতে আহত হয়েছেন। চিকিৎসাপ্রাপ্তদের মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।”
চিকিৎসকরা বলেন, ঈদে কোরবানির সময় সুরক্ষিত ও প্রশিক্ষিত উপায়ে পশু জবাই এবং মাংস প্রস্তুতের বিষয়ে সচেতনতা জরুরি। স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ এই বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে।