কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় বাকপ্রতিবন্ধী দুই শিশুকন্যাকে কীটনাশক খাইয়ে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তাদের বাবা মনু মিয়া (৪৫)। সোমবার (৯ জুন) সকালে উপজেলার তুলাকান্দি গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
নিহত দুই শিশু হলো—মনু মিয়ার বড় মেয়ে মনিরা আক্তার (১০) ও ছোট মেয়ে ফাতিহা আক্তার (৬)। উভয়েই বাকপ্রতিবন্ধী ছিলেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন মনু মিয়া পরিবারে দারিদ্র্য ও প্রতিবন্ধী সন্তানদের যত্ন নিয়ে মানসিক চাপে ছিলেন। এতে তার মধ্যে হতাশা বাড়তে থাকে।
সোমবার সকালে তার স্ত্রী হাসিনা বেগম রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকার সময়, মনু মিয়া মাঠে ব্যবহৃত কীটনাশক দুই মেয়েকে খাইয়ে দেন। পরে মেয়েদের মৃত্যুর পর নিজেও একই বিষ পান করেন। স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝতে পেরে দ্রুত তিনজনকেই উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু দুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সরফরাজ হোসেন খান জানান, “সকাল ৮টার দিকে মনু মিয়া ও তার মেয়েদের হাসপাতালে আনা হয়। তবে শিশু দুটি আগেই মারা গিয়েছিল।”
তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদ উল্লাহ বলেন, “দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে চরম আর্থিক সংকটে ছিল এবং প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে তাদের জীবন ছিল জটিল ও চাপপূর্ণ। পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগ ঘটনার সব দিক খতিয়ে দেখছে।