হেলাল শেখঃ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা—১৯ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা ও স্বতন্ত্র ঈগল এবং ট্রাক মার্কার প্রার্থীদের প্রচারণায় একজন অন্যজনের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ উঠেছে, গত তিনদিনে সরেজমিনে সাধারণ মানুষের জনমতে এগিয়ে ঈগল মার্কা।ঢাকা—১৯ আসনের আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে দুইজন এমপি প্রার্থীসহ ১০জন প্রার্থীর প্রচারণা চলছে। এই আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার সাথে (স্বতন্ত্র) ঈগল ও ট্রাক মার্কা ত্রি—মুখী ভোটের লড়াই এবং বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। এ আসনটিতে তিনজন প্রার্থীই শক্তিশালী, প্রচারণা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে। তবে গত ৪দিন আগে সরেজমিনে গিয়ে জনমতে নৌকা এগিয়ে থাকলেও গত তিনদিন ধরে সরেজমিনে গিয়ে জনমতে এগিয়ে আছে এই আসনের সাবেক এমপি আনোয়ার জংয়ের ছেলে আলহাজ্ব তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ সাবেক এমপি স্বতন্ত্র ঈগল মার্কা। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা ডাঃ এনামুর রহমান, অন্যদিকে (সাভার—আশুলিয়া) ঢাকা—১৯ এর আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল পাখি মার্কায় প্রচারণা চালাচ্ছেন সিস্টেমমত এবং জনগণের কাছে ভোট চাচ্ছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী আরো একজন আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ধামসোনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ট্রাক মার্কার প্রচারণা চালাচ্ছেন, সেই সাথে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মোঃ সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) নোঙর মার্কা, অন্যজন ঢাকা কোর্টের অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল হাসান (তুষার) মোল্লা (তৃনমূল বিএনপি) সোনালী আঁশ মার্কা। এ ছাড়া এই আসনে অন্যান্য আরো ১০জন এমপি প্রার্থীদের প্রচারণা চললেও তা চোখে পড়ার মতো না।সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ গণমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মোঃ তৌহিদ জং ওরফে মুরাদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। ২২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণার সময় আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্বতন্ত্র ট্রাক মার্কা প্রার্থী মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমের সামনে বলেন,আমার পোস্টার সাভার পৌরসভায় লাগানো হচ্ছিল। তখন (প্রতিমন্ত্রী) মহোদয় নিজে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। উনি গাড়ি থেকে নেমে একটি গালি দিয়ে উনার ক্যাডারদেরকে বলেছেন, এদের পিটাও এবং পোস্টার সব ছিঁড়ে ফেলো। উনি এটা নিজে করেছেন বলে স্বতন্ত্র এই প্রার্থী অভিযোগ করেন। ডাঃ এনামুর রহমানের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিলো। অনেকেই বলেন, এইবার নির্বাচনটা ভিন্নরকম ভাবে প্রচারণা চলছে, এতে জনমতে এগিয়ে আছেন তৌহিদ জং মুরাদ সাহেবের ঈগল মার্কা। ঢাকা—১৯ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি বর্তমানে (স্বতন্ত্র) ঈগল মার্কার প্রার্থী আলহাজ্ব তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে, রানা প্লাজা ভেঙে পড়েছে, আমি ওই ভবনের মালিক নয়, আমি ভবন তৈরিও করিনি, তাহলে আমার দোষ কোথায়?, সাভারের শিমুলতলা আমার ঈগল মার্কার অফিস উদ্বোধন করার দিন হাজার হাজার জনগণ আমাকে ভালোবেসে একনজর দেখার জন্য সেখানে আসেন, এখানে আমার কোনো দোষ ছিলো না আর গত দুই তিনদিন ধরে হাজার হাজার নেতা কর্মী আমাকে ভালোবেসে দলে দলে ঈগল মার্কায় যোগদান করছেন, আমি শতভাগ আশাবাদী যে, ঈগল মার্কা ৭ জানুয়ারি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে ইনশাহআল্লাহ।নৌকা মার্কার এমপি প্রার্থী ডাঃ এনামুর রহমান এনাম সাহেবের মোবাইল ফোন নাম্বারে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি। পুনরায় আবারও তার মোবাইলে কল দিলে তিনি তার গানম্যান পুলিশ অফিসার (এসআই) মুরাদ সাহেবকে দিয়ে ফোন রিসিভ করিয়ে কথা বলায় তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানান।ঢাকা—১৯ সংসদীয় আসনে শক্তিশালী ৩জন এমপি প্রার্থী, একজন চেয়ারম্যান ও একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ মোট ৮জনকে শোকজ করা হলেও এ ব্যাপারে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি? না। ৭ জানুয়ারি ভোটের লড়াই, প্রতিবেদন চলমান। সাভার থানা ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, এটি ১৯৮১ সালে একটি উপজেলা পরিণত হয়, বর্তমানে সাভার উপজেল—২টি থানায় বিভক্ত: যার একটি সাভার মডেল থানা এবং অন্যটি আশুলিয়া থানা। এ উপজেলার একটি মাত্র পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন। শিমুলিয়া ইউনিয়নের ভোটার সংখ্যা ৫৩,১৬০ জন। ধামসোনা ইউনিয়নে ১,৭১,৪৫৫ জন। পাথালিয়া ইউনিয়নে ৫৩,৫৬৮ জন। ইয়ারপুর ইউনিয়নে ৭৮, ২৪২ জন ভোটারসহ এই আসনে ৭ লাখ ৫৬ হাজার ৪১০ ভোট। তবে গত করোনাকালীন সময়ে এবং বিভিন্ন সময় এই এলাকা থেকে অনেক বহিরাগত ভোটার নিজ এলাকায় চলে গেছেন। এমপি প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি একজন অন্যজনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়াসহ বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং বিএনপি নির্বাচনে না আসায় দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা—১৯ আসনে ভোটারদের উপস্থিতি কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিএনপির অনেকে নেতা কর্মীদেরকে ঈগল মার্কায় ভোট চাওয়া বিষয়টি জনগণের মধ্যে জল্পনা—কল্পনা যে, এবার ঈগল মার্কা বিপুল ভোটে বিজয়ী হতে পারে।