শাহীন আহমেদ
চট্টগ্রামে নগরীর ইপিজেড থানা আক্রমণ ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট এর ঘটনায় অজ্ঞাত ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ২২ আগস্ট ইপিজেড থানার এসআই শাকিলুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
থানায় আক্রমণ ও লুটপাট অগ্নিসংযোগের মামলায় ক্ষতির পরিমাণ এক কোটি ২৯ লাখ ৪০ হাজার টাকার উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় এক কোটি ৪৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার মালামাল লুট করা হয়েছে বলেও উল্লেখ আছে। এতদিন গোপন থাকলেও পাঁচদিনের মাথায় সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে মামলার বিষয়টি জানাজানি হয়।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, দুস্কৃতকারীরা থানা কম্পাউন্ড ও পার্কিং শেডে থাকা সরকারি, বেসরকারি এবং ব্যক্তিগত যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ভস্মীভূত করে লুটপাট করে। ইপিজেড থানায় আক্রমণের সময় আক্রমণকারীদের মধ্যে আনুমানিক দুই হাজার সদস্য একই সময় সিইপিজেড পুলিশ ফাঁড়ি এবং নিউমুরিং পুলিশ ফাঁড়িতে একইভাবে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে সরকারি এবং ব্যক্তিগত মালামাল নিয়ে যায়। এছাড়া দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে থানার রেজিস্ট্রারপত্র, সরকারি ও বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এবং মালামাল পুড়ে যায়। এ ঘটনায় অনেক পুলিশ সদস্যও আহত হন।
সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ জানান, ইপিজেড থানায় হামলা-ভাংচুর ও অস্ত্র লুটের অভিযোগে অজ্ঞাতনামা ২৫ থেকে ৩০ হাজার জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে লুণ্ঠনকৃত অস্ত্র, গুলি ও অন্যান্য মালামাল জমা না দেয়ায় সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজ ও অন্যান্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হোছাইন জানান, গত ৫ আগস্ট বিকেলে ইপিজেড থানায় দুষ্কৃতকারীরা থানায় হামলা করে। থানায় তারা লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে গুরুত্বপূর্ণ নথি ও বিভিন্ন মামলার আলামত নষ্ট করেছে। এ সময় থানার অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট হয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ২৫ থেকে ৩০ হাজার জনকে আসামি করে ১৮৬০ সালের পেনাল কোড আইনের বিভিন্ন ধারায়, বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে, ২৪ আগস্ট রাতে কোতোয়ালি থানায় হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ হাজার জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন কুমার দাশ বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর চট্টগ্রাম নগরীর ১১টি থানা আক্রান্ত হয়। আগুন দেয়া হয় আটটি থানায়। ছয়টি থানা থেকে লুট করে নেয়া হয় অস্ত্র। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কোতোয়ালি, পতেঙ্গা, ইপিজেড, সদরঘাট ও ডবলমুরিং থানা।