মানিকগঞ্জে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে ৩ বছরের শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চান টাঙ্গাইল জজ কোর্টের আইনজীবী চিত্তরঞ্জন দাস নুপুর।
সোমবার রাতে যৌন নিপীড়নের বিষয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে খোঁজ নিতে যান কয়েকটি মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
এর সত্যতা পেয়ে সাংবাদিকরা ফেরার সময় আইনজীবী চিত্তরঞ্জন দাস নুপুর মুঠোফোনে ডিবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক সোহেল তালুকদারকে ফোন করে নিউজ না করতে চাপ প্রয়োগ করেন।
ফোনে আইনজীবী চিত্তরঞ্জন দাস নুপুর বলেন, নারী শিশু কোর্টের বিচারক অথবা টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারকে বলে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে। কোন মামলা যাতে না হয়, সেই বিষয়টিও আমি দেখছি।
বিষয়টি এতো সহজে মীমাংসা করা যায় কিনা উল্টো প্রশ্ন করলে বিভিন্ন আইন দেখানোর চেষ্টা করেন তিনি।
এ দিকে ঘটনার শাস্তি দাবি করলেও অস্বস্তি প্রকাশ করে সাংবাদিকদের সামনে আসেনি শিশুটির মা ও বাবা।
এর আগে গত শুক্রবার মানিকগঞ্জে বিয়ের দাওয়াতে গিয়ে ওই শিশু ১৪ বছরের এক স্কুল ছাত্রের মাধ্যমে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়।
বিষয়টি ওই শিশুর মা টের পেয়ে টাঙ্গাইল চলে আসেন। রোববার শিশুটিকে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
সেখানে শিশুকে চিকিৎসক দেখার পর সোমবার উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পরে শিশুটিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
শিশুরটি মা ক্যামেরার সামনে কথা না বললেও তিনি জানান, বিয়ের অনুষ্ঠানের রাতে শিশুটির সাথে অন্যায় কাজ করা হয়।
পরে মেয়ে আমাকে জানায় সে গোপনাঙ্গে ব্যাথা অনুভব করছে। পরে ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারি আমার মেয়ের সাথে আমাদেরই আত্মীয়ের ১৩ বছরের একটি ছেলে খারাপ কাজ করেছে।
বিষয়টি নিয়ে পারি পারিবারিকভাবেও অশান্তিতে আছি।
এ বিষয়ে ডিবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক সোহেল তালুকদার বলেন, বিজ্ঞ আইনজীবি ধর্ষকের পক্ষে এক জন গণমাধ্যমকর্মীকে সংবাদ না করার জন্য হুমকি দিতে পারেন এটাই বিষ্মিত করেছে।
তিনি এই ঘটনা মিমাংসা করতে পারেন কিনা এমন কথায় ওই আইনজীবি বলেন, আদালতের জজ ও পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলে সমাধান করবেন তিনি।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে দায়িত্বরত নার্সরা বলেন, শিশুটির সাথে খুবই অন্যায় করা হয়েছে।
ধর্ষণের আলামত সংগ্রহের জন্য সোয়াব টেষ্ট করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক ডা. সাদিকুর রহমান জানান, গোপানাঙ্গের বাইরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
প্রাথমিক ভাবে এটিকে ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সোয়াব টেষ্ট করা হয়েছে। সেটির রিপোর্ট পাওয়া গেলে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।