প্রতিবেদক খুলনা:
খুলনার রুপসা নদী পারাপারে চলাচলকারী নৌযানগুলোতে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি অর্থ নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় যাত্রীরা। এতে করে প্রতিদিন নদী পারাপারে নির্ভরশীল সাধারণ মানুষ, বিশেষত শ্রমজীবী শ্রেণি, চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।
নির্ধারিত নীতিমালা অনুযায়ী, রুপসা নদীর এক পাশ থেকে অন্য পাশে পারাপারের ভাড়া ২ টাকা হলেও বর্তমানে যাত্রীদের কাছ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সরকারি নির্দেশনা না থাকা সত্ত্বেও এই অতিরিক্ত আদায় নিয়ে কেউ কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না।
প্রতিদিন যাতায়াত করা এক যাত্রী বলেন, “রোজ অফিসে যাওয়ার সময় এই ঘাট ব্যবহার করি। আগে ২ টাকা দিতাম, এখন হঠাৎ করেই ৪ টাকা নিচ্ছে। জিজ্ঞেস করলে মাঝিরা বলে, নদী উত্তাল, খরচ বেড়েছে—কিন্তু এসব তো সরকারি সিদ্ধান্ত ছাড়া করা যায় না।”
এই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ছাড়াও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নৌ-নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি ট্রলারে সর্বোচ্চ ২৫ জন যাত্রী বহনের অনুমতি থাকলেও বর্তমানে অনেক ট্রলারেই ৩৫ জনেরও বেশি যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন অনেকে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “শুধু ভাড়াই না, ট্রলারে এত যাত্রী তোলা হয় যে দাঁড়িয়ে থাকতেও জায়গা থাকে না। একদিন যদি ট্রলার উল্টে যায়, কেউ দায় নেবে?”
নৌযান পরিচালনাকারীদের একাংশ দাবি করেছেন, নদীতে প্রতিকূল অবস্থা ও জ্বালানি তেলের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে তারা নিরুপায় হয়ে ভাড়া বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনো প্রশাসনিক অনুমতি আছে কি না জানতে চাওয়া হলে তারা তা নিশ্চিত করতে পারেননি।
রুপসা থানা ও নৌপুলিশের দৃষ্টি এড়িয়ে চলা এই সমস্যাটি এখন স্থানীয় জনজীবনের এক বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা বলছেন, অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ এবং নিয়মিত তদারকির ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি, যেন নৌ চলাচল নিরাপদ ও নিয়মতান্ত্রিক হয়।