ক্রাইম রিপোর্টার,মোঃ রাজিব খান
বাংলাদেশে চলমান পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়ার পেছনে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে দাবি করেছে নওগাঁ জেলা পুলিশ।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে জেলার বদলগাছী উপজেলার কোলা ইউনিয়ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, যাদের একজন সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একজন কর্মরত সদস্য।
আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন—মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন (৩২), পিতা: মৃত সেকান্দার মন্ডল এবং মোহাম্মদ খায়রুল সরকার (৩০), পিতা: মোহাম্মদ সিরাজুল সরকার। উভয়েরই স্থায়ী ঠিকানা বদলগাছী উপজেলার কোলা হুদ্রাকুড়ী গ্রামে। পুলিশ বলছে, খায়রুল সরকার নিজেকে একটি রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের স্থানীয় নেতৃত্বের পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন এর আগেও বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীকে ‘নিশ্চিত নিয়োগ’-এর আশ্বাস দিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি নিজেকে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দাবি করে, প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। এই কাজে তাকে সহায়তা করতেন খায়রুল সরকার, যিনি রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে প্রার্থীদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করতেন।
নওগাঁ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। পুলিশের দাবি, এই দুজন এক চাকরিপ্রার্থীর অভিভাবকের সঙ্গে ৮ লাখ টাকার বিনিময়ে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর্থিক লেনদেনের চুক্তি করেছিলেন।
৩টি ব্যাংকের স্বাক্ষরিত ফাঁকা চেক
৩টি স্বাক্ষরিত ১০০ টাকার মূল্যমানের নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প
আরও ৬টি ফাঁকা ব্যাংক চেক
৯টি স্বাক্ষরিত নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প
পুলিশ ধারণা করছে, এসব দলিল প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত হতো।
নওগাঁর পুলিশ সুপার এক বিবৃতিতে জানান, “চলমান কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও মেধাভিত্তিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এতে কোনো ধরনের তদবির বা আর্থিক লেনদেনের সুযোগ নেই।”
তিনি আরও বলেন, “নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কেউ যদি প্রতারণার ফাঁদে পড়েন, তাহলে আইনগত সহায়তা নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
পুলিশ জানায়, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং এ ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।