বাবুল রানা, বিশেষ প্রতিনিধি, মধুপুর, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা ও ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত ১০৬ একর জুড়ে বিস্তৃত সন্তোষপুর রাবার বাগান। এই বাগান শুধু রাবার গাছের সারি সারি মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের জন্যই নয়, বরং শত শত বানরের অবাধ বিচরণের কারণে দর্শনার্থীদের কাছে একটি ব্যতিক্রমী আকর্ষণ হিসেবে পরিচিত।
বাগানটি মধুপুর গড় বনাঞ্চলের একটি অংশ, এবং এর সঙ্গেই যুক্ত রয়েছে একটি ঘন বন। এই বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও বানরের সরব উপস্থিতি প্রতিদিন শত শত পর্যটককে আকর্ষণ করে। অনেকেই একে "বানরের রাজ্য" হিসেবে অভিহিত করেন।
মধুপুর থানা মোড় থেকে অটোরিকশা বা ব্যক্তিগত যানবাহনে বাগানবাড়ি চৌরাস্তা হয়ে মাত্র ৩০-৩৫ মিনিটেই পৌঁছে যাওয়া যায় এই বাগানে। পৌঁছেই চোখে পড়ে সারি সারি রাবার গাছ আর তার মাঝে খেলতে থাকা বানরের দল।
রাবার বাগান পেরিয়ে যে গহীন বনের দেখা মেলে, সেখানে রয়েছে বন বিভাগের কার্যালয়। তবে স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, শাল ও গজারির বড় বড় গাছ কিছুটা হ্রাস পাওয়ায় এলাকাটি এখন একটি উন্মুক্ত মাঠে পরিণত হয়েছে, যা বিনোদনের নতুন কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে।
খাদ্য সংকটের কারণে বনের ভেতর থেকে অনেক বানর এখন প্রায়শই পর্যটকদের কাছাকাছি চলে আসে। তাদের আচরণ সাধারণত বন্ধুসুলভ—কেউ কাঁধে, কেউ কোলে উঠে খাবার চায়। খাবার পাওয়ার পরই তারা আবার বনাঞ্চলের দিকে ফিরে যায়।
পর্যটকদের অভিযোগ, বন বিভাগের খাবার বরাদ্দ থাকলেও তা যথাযথভাবে বানরদের কাছে পৌঁছাচ্ছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বর্তমানে বানরদের খাদ্য নির্ভরতা মূলত দর্শনার্থীদের ওপরেই বেশি।
বনের আশেপাশে কিছু ভ্রাম্যমাণ দোকান গড়ে উঠেছে, যারা বানরের খাবার ও অন্যান্য পণ্য বিক্রি করে। তবে অনেক দর্শনার্থীর অভিযোগ, এখানে কিছু দোকান মালিক অতিরিক্ত মূল্য আদায় করছেন, যা নিয়ন্ত্রণের দাবি জানানো হয়েছে।
দর্শনার্থীদের জন্য কিছু নির্দেশনা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। গহীন বনে একা বা দুই-তিনজন মিলে প্রবেশ না করাই উত্তম। ভেতরের অনেক রাস্তা দেখতে একরকম হওয়ায় দিকভ্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পাশাপাশি, নিরাপত্তার স্বার্থে সন্ধ্যার আগেই বনের এলাকা ত্যাগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সন্তোষপুর রাবার বাগান শুধু একটি প্রকৃতিক ভ্রমণ গন্তব্য নয়, বরং মানুষের ও প্রাণীর এক অনন্য সহাবস্থানের প্রতীক। বন, বন্যপ্রাণী ও পর্যটনপ্রেমীদের জন্য এটি হতে পারে স্বল্প খরচে একটি প্রশান্তিময় ভ্রমণের সেরা ঠিকানা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এস এম নজরুল ইসলাম
সহ-সম্পাদকঃ আবুল কাশেম
বার্তা সম্পাদকঃ রাফসান জাহান
অফিসঃ ৫৬/৫৭ শরীফ ম্যানশন(৪র্থ তলা)মতিঝিল কমার্সিয়াল এলাকা,ঢাকা-১০০০।রেজিস্ট্রি অফিসঃ চৌকস ভবন,চরকালিগন্জ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা -১৩১০
ফোনঃ ০২২২৬৬৩৯৮৪৭
মোবাইলঃ ০১৬০০-৭২২২২৯,০১৯২০-০০৩০৮১
ইমেইলঃchoukasinfo@gmail.com,dainikchoukos@gmail.com
Copyright © 2025 দৈনিক চৌকস. All rights reserved.