শাহারিয়ার রহমান,স্টাফ রিপোর্টারঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তার মিলির বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ উঠছে। স্বাধীনতা দিবসের দিন সাংবাদিকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের পর অঙ্গীকার দিলেও তিনি পুনরায় বিতর্কিত ঘটনায় জড়িয়েছেন।
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে সাংবাদিক শেখ মামুন উর রশিদের সঙ্গে অসদাচরণ ও স্যান্ডেল দিয়ে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অঙ্গীকারনামা দেন প্রধান শিক্ষিকা। তাতে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ভবিষ্যতে আর এমন আচরণ করবেন না। কিন্তু এর পরই নতুন এক ঘটনায় তিনি সমালোচনার মুখে পড়েন।
অভিযোগ উঠেছে, প্রধান শিক্ষিকা এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র প্রদানের শর্তে ছয় হাজার টাকা দাবি করেন। এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানালে সহকারী শিক্ষক মঈনুল ইসলামকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করেন। বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারী অভিযোগ করেছেন, প্রধান শিক্ষিকা তার রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে বিদ্যালয়ে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার করছেন এবং নিয়মবহির্ভূতভাবে অর্থ লেনদেনসহ নানা অনিয়মে জড়িত।
বিদ্যালয়ের সাবেক নৈশপ্রহরী আব্দুর রহমানের পরিবার অভিযোগ করেছেন, তার বকেয়া বেতন এবং পেনশনের অর্থও আটকে রাখা হয়েছে। প্রধান শিক্ষিকা অর্থ না দিলে প্রয়োজনীয় নথিতে স্বাক্ষর করবেন না বলে জানিয়েছেন।
এসব অভিযোগ নিয়ে প্রধান শিক্ষিকার বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, “প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগ তদন্তের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শফিক আশরাফ এ প্রসঙ্গে বলেন, “শিক্ষকরা সমাজের দর্পণ। তাদের আচরণ ও পেশাদারিত্ব শিক্ষার্থীদের ও সমাজের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। এমন অনৈতিক আচরণ শিক্ষকের মর্যাদার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।”
শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।