নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামে ‘সংশপ্তক’ নামের একটি এনজিও সংস্থা গ্রাহকের কাছ থেকে বিভিন্ন লোভনীয় অফার দিয়ে টাকা জমা নেয়ার পর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও গ্রাহকদের টাকা না দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি, প্রতারণা টাকা আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। প্রতারণার অভিযোগে চট্টগ্রাম চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রেমিটেন্সযোদ্ধা হারুনুর রশীদ নামের এক গ্রাহক বাদী হয়ে ওই সংস্থার কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নং সিআর ১৫১২/ ২০২৪ কোতোয়ালী।
খবর নিয়ে জানা গেছে, ব্যাংকের মতোই লেনদেন করে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ‘সংশপ্তক’ নামক একটি এনজিও। অথচ ব্যাংক লেনদেনের কোন অনুমোদনও নেই তাদের। হাতিয়ে নেয়া ওই এনজিও’র পরিচালক লিটন চৌধুরী কোটি টাকার গাড়ীতেও চড়ে। চট্টমেট্রো গ -১১৫৩১২ গাড়ীতে চড়ে পরের ধনে পোদ্দারী করে। পাসপোর্টে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে ভ্রমনের তথ্যও আছে।ভারতে বাড়ী করলেও সে কাউকে ঠিকানা দেয় না। শহর ও গ্রামে গ্রাহকের টাকা মেরে জায়গাও কিনেছে।
দেখা গেছে, প্রতিদিন ‘সংশপ্তক’ সংস্থার নগরীর কোতোয়ালী থানাধিন শিব বাড়ির অরবিট ভবনে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকরা ভিড় জমায়। মামলা হওয়ার পর সংস্থার লোকজন অধিকাংশ আত্মগোপনে চলে যান রাতের আধাঁরে কেউ কেউ এসে অফিস থেকে কাগজ পত্র নিয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে। আদালতে দায়েরকৃত মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ারা উপজেলার বোয়ালিয়া এলাকার মৃত আয়ুব আলীর পুত্র প্রবাসী মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ(৪৮), বিগত ২০১৭ সালের ২০ জুন সংশপ্তক এনজিও স্ংস্থার প্রধান নির্বাহী ও কো-অডিনেটর লিটন চৌধুরী এবং কো-অডিনেটর উৎপল বড়ুয়া তাদের সংস্থায় টাকা জমা রাখার প্রস্তাব দেন। ৭ বছরে টাকার দ্বিগুন দেবে বলে স্ট্যাম্পে চুক্তি করে। তাদের কথামত একসাথে নগদ ৫ লাখ টাকা জমা করেন ওই প্রবাসী। ১০ লাখ টাকার ‘সংশপ্তক’র নামে প্রধান নির্বাহী লিটন চৌধুরী ও কো-অডিনেটর উৎপল বড়ুয়া যৌথ স্বাক্ষরে চেক দেন।চুক্তিমতে গত ২০ জুন ২০২৪ তারিখে ৭ বছর মেয়াদ শেষ হয়। মেয়াদ শেষে ১০ লাখ টাকার চেক ব্যাংকে জমা দিলে ব্যাংক চেকটি টাকা নেই মর্মে ডিজওনার করে। তখনই প্রবাসী হারুনুর রশিদ বুঝতে পারেন তিনি প্রতারকের খপ্পরে পড়েছেন।
আমাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ‘সংশপ্তক’ নামক প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের টাকা জমা ও ৭ বছর পর দ্বিগুন টাকা দেবার কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। নেই বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনও। কিছুদিন পর পর তারা অফিস ও বাসা পরিবর্তন করে থাকে। লালখানবাজার, সদরঘাট হয়ে এখন অফিস করেছে ফিরিঙ্গিবাজারে। বর্তমানে অক্সিজেন এলাকায় নতুন আরো একটি অফিস নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে যে থানার ওসির সাথে সম্পর্ক ভালো থাকে সে এলাকায় অফিস ভাড়া নেয় ও প্রতারণার ফাঁদ বিস্তার করে। দুই নম্বরী কিছু এনজিও পরিচালকও তাদের এসব প্রতারণার কাজে সহায়তা করে থাকে। যে কোন মূর্হুতে ফিরিঙ্গিবাজার অফিসও ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে পারে বলে অনেকে আশংকা করেছে।
জানা গেছে, গ্রাহকের সঞ্চিত টাকা দিয়ে লিটন চৌধুরী ও উৎপল বড়ুয়া আনোয়ারার পারকী সমুদ্র সৈকত, আনোয়ারা সদর ও বোয়ালখালীতে জায়গা কিনেছে। গ্রাহকের টাকা মেরে দিলেও তারা এখন পরের ধনে পোদ্দারী করে চলেছে। লিটনের ভারতে চিকিৎসার নামে যাতায়াত দিয়ে গ্রাহকদের বহু টাকা পাচার করছে। পাসপোর্ট চেক করলে এসব তথ্যের সত্যতা মিলবে।