শাহিন আলম
সাংবাদিকের পরিচয়পত্র গলায়, মুখে ধর্মভীরু ভাব—এই ছদ্মবেশের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইয়াবা সরবরাহ করছিলেন আব্দুস সালাম মোল্লা (৫৪)। চট্টগ্রাম রেলস্টেশন এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) অভিযানে রবিবার (১১ মে) অবশেষে ধরা পড়লেন তিনি। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ পিস ইয়াবা।
অভিযানটি পরিচালনা করেন উপপরিদর্শক গোপাল কৃষ্ণ দাস, অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ের উপপরিচালক হুমায়ূন কবির খন্দকারের তত্ত্বাবধানে।
সালাম মোল্লার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার দয়াকান্দা, নয়াপাড়া, মোল্লা পাড়া গ্রামে। পিতার নাম মৃত আবদুল তাহের মোল্লা এবং মাতার নাম রাজুমন বেগম।
আটকের সময় তার কাছ থেকে পাওয়া যায় ,ন্যাশনাম’ নামক একটি সাংবাদিক সংগঠনের পরিচয়পত্র, যার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। তবে পুরনো সেই কার্ড গলায় ঝুলিয়ে তিনি নির্বিঘ্নে পার হয়ে যেতেন যেকোনো চেকপোস্ট। চলাফেরায় এমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতেন যেন তিনি কোনো ধর্মীয় নেতা বা সমাজসেবক।
তদন্তে জানা গেছে, সালাম মূলত কক্সবাজারের কলাতলী এলাকা থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করতেন এবং সরবরাহ করতেন ঢাকার কামরাঙ্গিরচর, কেরানীগঞ্জ, বগুড়া, মাদারীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। প্রথম দিকে প্রতি পিস ইয়াবা ৪৫ টাকায় কিনলেও বর্তমানে তা কিনছেন ১২০ টাকায়। এতে স্পষ্ট, দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই অবৈধ ব্যবসায় গভীরভাবে জড়িয়ে আছেন।
আরও জানা যায়, কক্সবাজারের হোটেলে অবস্থান করে সকালে সৈকতের ভিড়ে ইয়াবার চালান বুঝে নিতেন তিনি, যাতে কারো সন্দেহ না হয়। তার পরহেজগার ভাব, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীর পরিচয়—সবই ছিল প্রতারণার অংশ।
ডিএনসি জানিয়েছে, আব্দুস সালাম মোল্লার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও তদন্ত চলছে।
এই ঘটনায় ফের প্রমাণ হলো, ছদ্মবেশ যতই নিখুঁত হোক না কেন, আইনের চোখ এড়ানো যায় না।