শাহিন আলম
চট্টগ্রামের হালিশহরে এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র মো. সাব্বির হত্যাকাণ্ড ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী, সহপাঠী ও স্বজনদের অংশগ্রহণে বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় হালিশহর থানার সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। তারা হত্যার ঘটনায় জড়িতদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে থানা ঘেরাও করেন।
সাব্বিরের জানাজা শেষে শতাধিক মানুষ একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে থানার সামনে জড়ো হয়। তারা ‘সাব্বির হত্যার বিচার চাই, কিশোর গ্যাং নির্মূল করো’ এই ধরনের স্লোগানে থানা প্রাঙ্গণ প্রকম্পিত করে তোলে। এ সময় থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান ঘটনাস্থলে এসে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
জানা গেছে, সাব্বির গত ২১ মে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি হালিশহর আইডিয়াল টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র এবং নয়াবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. ইসহাক কন্ট্রাক্টরের একমাত্র সন্তান।
হামলার আগে সাব্বির এক সাংবাদিককে জানায়, ‘বড়ভাই’ না মানায় স্থানীয় কিশোর গ্যাং নেতা আবিদের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জনের একটি দল তার ওপর হামলা চালায়। ছুরিকাঘাত করে আতাউল নামের একজন। এ ছাড়া বিজয় ও রাফসান নামে আরও দুইজনের জড়িত থাকার তথ্যও তিনি দেন।
সাব্বিরের মামা মো. শফিকুল অভিযোগ করে বলেন, গত ১৬ মে শুক্রবার নামাজ শেষে চা খাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে সাব্বিরকে নতুন বাজার বিশ্বরোড এলাকায় নির্মমভাবে ছুরিকাঘাত করা হয়।
স্থানীয় সূত্র বলছে, আবিদ, আতাউল, বিজয় ও রাফসান মিলে একটি সক্রিয় কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মারামারি ও অস্ত্র প্রদর্শনের অভিযোগ থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা এখনো চোখে পড়েনি।
হালিশহর থানার ওসি বলেন, এলাকায় কয়েকটি কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে, দোষীদের ধরতে অভিযান চলছে।
এই হত্যাকাণ্ড কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। স্থানীয়রা দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে, যেন এমন নির্মমতা আর না ঘটে।