অনলাইন প্রতিবেদন
চট্টগ্রামে এবারের কোরবানিতে পশুর চামড়ার প্রত্যাশিত দাম পাননি কোরবানি দাতারা। একইভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নগরী ও আশপাশের এলাকায় কোরবানির পশুর চামড়া প্রতি পিস ১৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে হয়েছে সাধারণ কোরবানিদাতাদের। তবে দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে আতুরার ডিপো এলাকার আড়তগুলোতে প্রতি পিস গরুর চামড়া ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় কেনা হলেও, রাত ৯টার পর দাম কমতে থাকে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে ট্রাকে করে আসা বিপুল সংখ্যক চামড়া রাতভর নগরীর আড়তগুলোতে জমা হতে থাকে। তখন একেকটি চামড়া মাত্র ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায় কেনা হয়।
রাউজানের পাহাড়তলী এলাকার মৌসুমি ব্যবসায়ী রফিক জানান, গণমাধ্যমে চামড়ার উচ্চমূল্যের খবর দেখে তিনি প্রত্যাশা করেছিলেন, এবার প্রতিটি চামড়া অন্তত এক হাজার টাকায় বিক্রি হবে। সেই আশায় তিনি ৩২০টি চামড়া ৪০০-৫০০ টাকায় কিনেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে আড়তে গিয়ে প্রতি পিস মাত্র ৪৫০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হন। এতে তার ব্যাপক লোকসান হয়।
নুরুল হক নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, “৫০টি বড় গরুর চামড়া ৬০০ টাকা করে কিনেছি। ভাবছিলাম অন্তত ৮০০ টাকা পাবো। কিন্তু আড়তদাররা সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা পর্যন্ত দিয়েছে। ফলে প্রতিটি চামড়ায় আমার ২০০ টাকা করে ক্ষতি হয়েছে।”
শনিবার (৭ জুন) দিবাগত রাত ১২টার পরও নগরীর আতুরার ডিপো এলাকায় ট্রাকে করে আনা প্রায় ৫০ হাজারের বেশি চামড়া বিক্রির জন্য অপেক্ষায় ছিল। এ অবস্থায় অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী চরম হতাশায় ভুগছেন।
অন্যদিকে ছাগলের চামড়া গ্রহণ না করায় বিপাকে পড়েছেন অনেক কোরবানিদাতা ও বিক্রেতা। আড়তদাররা ছাগলের চামড়া নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চামড়াগুলোর দুর্গন্ধও পরিবেশে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
এ বিষয়ে আড়তদার কামাল উদ্দিন বলেন, “অনেক মৌসুমি বিক্রেতা লবণযুক্ত ও কাঁচা চামড়ার দামের পার্থক্য বোঝেন না। ফলে বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা না করে বেশি দামে চামড়া কিনে শেষে লোকসানে পড়েছেন।”
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মুসলিম উদ্দিন বলেন, “মৌসুমি বিক্রেতাদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। সরকার নির্ধারিত দাম শুধু লবণযুক্ত চামড়ার জন্য প্রযোজ্য। কাঁচা চামড়ার কোনো নির্ধারিত দাম নেই। একটি বড় চামড়া সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিবহন ও আড়ত পর্যন্ত আনতে খরচ পড়ে প্রায় ৫০০ টাকা। এছাড়া ট্যানারি কর্তৃপক্ষ প্রতিটি চামড়ার ২০ শতাংশ বাদ দিয়ে মূল্য নির্ধারণ করে।”
তিনি আরও জানান, এবার তারা প্রায় তিন লাখ কাঁচা চামড়া সংগ্রহের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। কিছু কিছু স্থান থেকে এখনও চামড়া আসছে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রামে কোরবানির চামড়ার বাজারে এবারও ব্যবস্থাপনার ঘাটতি, মূল্য নির্ধারণে স্বচ্ছতার অভাব এবং মৌসুমি ব্যবসায়ীদের যথাযথ দিকনির্দেশনার অভাবে চামড়ার সম্ভাবনাময় বাণিজ্য হতাশায় রূপ নিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এস এম নজরুল ইসলাম
সহ-সম্পাদকঃ আবুল কাশেম
বার্তা সম্পাদকঃ রাফসান জাহান
অফিসঃ ৫৬/৫৭ শরীফ ম্যানশন(৪র্থ তলা)মতিঝিল কমার্সিয়াল এলাকা,ঢাকা-১০০০।রেজিস্ট্রি অফিসঃ চৌকস ভবন,চরকালিগন্জ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা -১৩১০
ফোনঃ ০২২২৬৬৩৯৮৪৭
মোবাইলঃ ০১৬০০-৭২২২২৯,০১৯২০-০০৩০৮১
ইমেইলঃchoukasinfo@gmail.com,dainikchoukos@gmail.com
Copyright © 2025 দৈনিক চৌকস. All rights reserved.