বাগেরহাট প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ :
স্থানীয় বিরোধকে কেন্দ্র করে রক্তাক্ত সহিংসতা, পুলিশ মোতায়েন
বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলায় ঈদের দিনে দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন এবং নারীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (৭ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার চুনখোলা ইউনিয়নের সিংগাঁতি গ্রামের উত্তরপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় পর্যায়ের দীর্ঘদিনের গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব এবং আধিপত্য বিস্তারের জেরে সংঘর্ষ শুরু হয় বলে পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
নিহত দুজন হলেন—উত্তরপাড়ার বাসিন্দা মোশারেফ চৌধুরীর পুত্র আজিজুল চৌধুরী (৪০) এবং একই এলাকার এরশাদ চৌধুরীর পুত্র মোরসালিন চৌধুরী (৩০)। তাঁরা পরস্পরের চাচাতো ভাই।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, ঈদের দিন দুপুরে কোরবানির মাংস বিতরণকে কেন্দ্র করে প্রথমে কথাকাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় সন্ধ্যার দিকে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় এবং একপক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা চালায়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে মোল্লাহাট, গোপালগঞ্জ ও খুলনার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতদের মধ্যে আজিজুল চৌধুরীকে মোল্লাহাট হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই গোপালগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মোরসালিন চৌধুরী।
প্রতিপক্ষের বক্তব্য পাওয়ার চেষ্টা করা হলেও সংঘর্ষে জড়িত কেউই প্রকাশ্যে কথা বলতে চাননি। ঘটনার পর থেকে সংশ্লিষ্টরা আত্মগোপনে রয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে যাতে নতুন করে সংঘর্ষের আশঙ্কা না থাকে। তিনি বলেন, “প্রায় ৫০ বছর ধরে ওই দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। গতকালের ঘটনায় দুজন নিহত ও বহু আহত হয়েছেন। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।”
এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সতর্ক রয়েছে।