প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দঘন সময় কাটিয়ে আবারও কর্মজীবনে ফিরতে শুরু করেছেন রাজধানীমুখী মানুষ। মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল থেকে ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকায় দেখা গেছে ফিরতি যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। কেউ ফিরছেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে, কেউবা একা; সবার মুখেই ঈদের তৃপ্তি আর দায়িত্বে ফেরার প্রস্তুতির ছাপ।
এদিকে, ঈদের কোরবানির ব্যস্ততা শেষ করে কেউ কেউ ঢাকা ছাড়ছেন পর্যটন কিংবা পারিবারিক প্রয়োজনে। কেউ কেউ আবার ঈদের ছুটির সময় কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করায় এখন ছুটিতে যাচ্ছেন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে ঘুরে দেখা গেছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একে একে ঢাকায় প্রবেশ করছে ট্রেন। প্রতিটি ট্রেনেই ছিল ফিরতি যাত্রীদের ভিড়। যাত্রীরা জানিয়েছেন, ঈদের আগে বাড়ি যাওয়ার তুলনায় ফিরতি যাত্রা তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক ছিল।
সিলেট থেকে ঢাকায় ফেরা বেসরকারি চাকরিজীবী শামীম আহমেদ বলেন, “পরিবারের সঙ্গে কটি দিন কাটিয়ে মানসিক প্রশান্তি পেয়েছি। এবার একটু আগেই ফিরেছি যেন কাজ নিয়মিতভাবে শুরু করতে পারি। ট্রেনে ভিড় ছিল, তবে বড় কোনো ভোগান্তি হয়নি।”
বিমানবন্দর রেলস্টেশনেও ময়মনসিংহ, জামালপুর, রংপুর ও বগুড়া থেকে আগত ট্রেনগুলোতে যাত্রীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। স্টেশন এলাকায় নেমেই অনেক যাত্রী বাসস্ট্যান্ড কিংবা রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
ঢাকা রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, ফিরতি পথে ট্রেন চলাচলে কোনো সংকট নেই। আজ মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ২৫টি ট্রেন ঢাকায় প্রবেশ করবে। যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে স্টেশন কর্তৃপক্ষ সজাগ রয়েছে।
তিনি আরও জানান, রাজধানীমুখী যাত্রীদের চাপ সোমবার থেকেই বাড়তে শুরু করেছে। তবে বুধবার (১১ জুন) থেকে চাপ আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন।
একইসঙ্গে, মাওয়া ও পাটুরিয়া ফেরিঘাটে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী মানুষের স্রোত এবং গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনালে যাত্রীদের ব্যস্ততা লক্ষ্য করা গেছে। সড়ক, রেল ও নৌপথ মিলিয়ে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা মানুষজন ধাপে ধাপে রাজধানীতে ফিরছেন।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এবার ফিরতি যাত্রায় পূর্বপ্রস্তুতি ও ছুটির সময় বণ্টনের কারণে সামগ্রিক পরিস্থিতি ছিল অনেকটাই স্বস্তিদায়ক। তবু যাতায়াতে ভিড় ও সময়সূচি মানার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আরও সমন্বয় প্রয়োজন বলে তারা মত দিয়েছেন।