বিএনপি নেতাসহ প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন
নাটোরের লালপুর উপজেলার দিয়ার বাহাদুর মৌজায় বৈধভাবে ইজারা নেওয়া একটি বালুঘাটকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি, নদীপথে বাধা সৃষ্টি ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী ও ইজারাদারদের দাবি, এসব অনিয়মের পেছনে রয়েছে ঈশ্বরদীর একটি প্রভাবশালী মহল, যার সঙ্গে রাজনীতিক সংশ্লিষ্টতা এবং প্রশাসনের একাংশের সখ্যতার অভিযোগও রয়েছে।
সরকার অনুমোদিতভাবে ২০২৪ সালের শুরুতে প্রায় ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকায় বালুমহালটির ইজারা নেয় মোল্লা মোল্লা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তবে অভিযোগ রয়েছে, ইজারার পর থেকেই একটি প্রভাবশালী চক্র প্রতিদিন প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ‘চাঁদা’ দাবি করে আসছে। দাবি পূরণ না করায় একাধিকবার বিভিন্ন ধরনের হয়রানির ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে রয়েছে নৌকার মাঝিদের মারধর, মিথ্যা মামলার ভয় দেখানো, এবং ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজানোর অভিযোগ।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়েও এলাকায় প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, পূর্বে জেলা গোয়েন্দা শাখায় দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তিনি ঈশ্বরদীতে কর্মরত ছিলেন এবং দায়িত্ব নেওয়ার পরই সংশ্লিষ্ট চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন। অভিযোগ রয়েছে, নিরস্ত্র দিনমজুরদের ‘অস্ত্র উদ্ধার’ মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টায় তিনি সহযোগিতা করেছেন।
বালু পরিবহনের সময় নৌপথে বাধা সৃষ্টি ছাড়াও প্রত্যেক নৌকা থেকে ‘নৌপুলিশ পাহারাদারি ফি’ নামে ১ হাজার টাকা করে আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মাঝি ও নৌকার মালিকরা। এতে বৈধ ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং সাধারণ শ্রমিকরা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।
আরও অভিযোগ রয়েছে, ঈশ্বরদীর ভেড়ামারা ফেরিঘাট এলাকায় একটি প্রভাবশালী মহল নদীর ব্রিজের নিচ থেকে বালি উত্তোলন করে তা অবৈধভাবে বিক্রি করছে। স্থানীয় সূত্র বলছে, এসব কার্যক্রম দিনের বেলাতেই পরিচালিত হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কার্যত নীরব ভূমিকা পালন করছে।
এ অবস্থায় ব্যবসায়ী মহলসহ সাধারণ জনগণ দ্রুত নিরপেক্ষ ও স্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, একটি বৈধ ইজারা ও রাষ্ট্রীয় রাজস্ব ব্যবস্থাকে ঘিরে এমন পরিস্থিতি ভবিষ্যতে সারা দেশের বৈধ বালুমহালগুলোর ক্ষেত্রেও উদ্বেগ তৈরি করবে।