কুষ্টিয়ার সদর উপজেলায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ষাটোর্ধ্ব এক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তের নাম বিশা (৬০)। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতবররা সালিস ডেকে অভিযুক্তকে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় দিয়ে বিষয়টি ‘মীমাংসা’ করার চেষ্টা করেন বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার (১১ জুন) সকালে। এরপর শিশুটি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির শারীরিক ও মানসিক অবস্থা গুরুত্বসহকারে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
শিশুটির মা জানান, “ঘটনার দিন সকালে আমি আমার মাকে বাড়িতে এগিয়ে দিতে যাই। সেই সময় প্রতিবেশী বিশা দাদা আমার মেয়েকে তার ঘরে ডেকে নেয়। কিছুক্ষণ পর সে খুঁড়িয়ে আসতে দেখে আমি জিজ্ঞেস করি কী হয়েছে। তখন সে বলে, বিশা দাদা খারাপ কাজ করেছে।”
পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে গ্রামে সালিসি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় সমাজপ্রধান রহিম মণ্ডল ও ইউপি সদস্য মতিউর রহমান লিটন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সালিসে অভিযুক্তকে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় দেওয়ার পর বিষয়টি ‘মিটমাট’ ঘোষণা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
শিশুটির মা আরও বলেন, “মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে থানায় যাইনি। মেম্বার আর সমাজপ্রধান বলেন, আগে চিকিৎসা নিন, পরে আইনি ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করা হবে। আমিও মামলা করব।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির পরিবার প্রথমে আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে গ্রাম্য মাতবররা তা ‘সমাধানের আশ্বাসে’ স্থগিত রাখেন।
এ বিষয়ে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতাল সূত্রে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হতে পারে।
বিশ্লেষণ ও প্রেক্ষাপট:
শিশু ও নারী নির্যাতনের মতো গুরুতর ঘটনায় গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে ‘মীমাংসা’র প্রচেষ্টা বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও বিচারব্যবস্থার পরিপন্থী। এ ধরনের ঘটনা আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীরা।