মাহমুদুল হাসান মেমন
নাটোরের বড়াইগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধার নিজের বোন পরিচয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও পেনশন ভাতাদি সহ সকল সুযোগ-সুবিধা আত্মসাতের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলার জোয়ারী এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল জলিল সিপাহীর পরিবার।
রবিবার (২৯ জুন) দুপুরে ওই মুক্তিযোদ্ধার একমাত্র বোন আমেনা বেগমের বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ভুক্তভোগী পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল জলিল সিপাহীর পরিবারের পক্ষ থেকে তার ভাগ্নীর ছেলে (নাতি) মোঃ রফিকুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার নানা (মায়ের মামা) উপজেলার জোয়ারী গ্রামের মৃত সারাফত উল্লার সন্তান শহীদ আব্দুল জলিল সিপাহি বাংলাদেশে সেনাবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩ নং সেক্টরের অধীনে সম্মুখ যুদ্ধে পাক হানাদারের গুলিতে শহীদ হন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তাঁর ব্যক্তিগত পরিচিতি নং- ৩৯৩৯৩৭৩, সশস্ত্র বাহিনী শহীদ গেজেট নং -৫৫২। শহীদ সেনাসিপাহী আব্দুল জলিল মৃত্যু কালে বিধবা মা মোছাঃ সবজান বেওয়া ও একমাত্র বোন মোছাঃ আমেনা বেগম কে রেখে যান। বর্তমানে তারা দুজনেই মৃত। শহীদ আব্দুল জলিল সিপাহীর মা ১৯৭৩ সালে তৎকালীন সেনা সদর দপ্তর থেকে প্রমান পত্রের মাধ্যমে এককালীন এক হাজার টাকা প্রাপ্ত হন। বিধবা মা মারা যাওয়ার পর শহীদ সিপাহীর একমাত্র বোন আমেনা বেগমের পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে তিনিও মারা যান। তৎকালীন উপজেলা কমান্ড থেকে আমাদের জানানো হয়, কিন্তু প্রয়োজনী নথিপত্র স্বল্প সময়ের মধ্যে দিতে আমরা ব্যর্থ হই, এই সুযোগে অসৎ কোন ব্যক্তির সাহায্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল জলিলের ভুয়া বোন পরিচয়ে একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী কৈডিমা গ্রামের মৃত সরাফাত আলী ও গোলাপজান বেগমের কন্যা মোছাঃ পরিনা বেগম নামের এক প্রতারক দীর্ঘ সময় ধরে মুক্তিযোদ্ধা ও পেনশন ভাতার অর্থ এবং যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছে। তিনি প্রতারক পরিবারকে রাষ্ট্রদ্রোহী আখ্যা দিয়ে আরো বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করেছে প্রতারক ওই পরিবার, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, আমরা ইতিপূর্বে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট সহ ডিসি অফিস, ইউএনও অফিসে লিখিত আবেদন জানিয়েছি। সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দপ্তরে ঘুরেছি কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারণে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও আমরা কোন সমাধান পায়নি।
এসময় তারা ভূয়া প্রতারক ওই পরিবারের নামে বরাদ্দকৃত ভাতা ও সকল সুবিধা বন্ধের আশু পদক্ষেপ গ্রহণসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল জলিলের সঠিক অংশীদার নির্ধারণ ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর নামে নিজ গ্রামে স্মরণীয় নিদর্শন বা নাম করনের জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ওই গ্রামের আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুমিয়া বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল জলিলের একমাত্র বোন আমেনা বেগম। সুবিধা ভোগকারী পরিনা বেগমকে আমরা চিনি না, দেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা অসুবিধা শহীদ পরিবারের স্বজনদের পাওয়া উচিত বলে মনে করি।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল জলিলের একমাত্র বোন আমেনা বেগমের দুই ছেলে মোঃ খোদা বক্স ও আব্দুল মজিদ , প্রবীণ গ্রামবাসী মোঃ আফাজ উদ্দিন খামারু, মোঃ আব্দুল আউয়াল, মোঃ আব্দুস সামাদ সরদার ও পরিবারের অন্য সদস্যরা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এস এম নজরুল ইসলাম
সহ-সম্পাদকঃ আবুল কাশেম
বার্তা সম্পাদকঃ রাফসান জাহান
অফিসঃ ৫৬/৫৭ শরীফ ম্যানশন(৪র্থ তলা)মতিঝিল কমার্সিয়াল এলাকা,ঢাকা-১০০০।রেজিস্ট্রি অফিসঃ চৌকস ভবন,চরকালিগন্জ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা -১৩১০
ফোনঃ ০২২২৬৬৩৯৮৪৭
মোবাইলঃ ০১৬০০-৭২২২২৯,০১৯২০-০০৩০৮১
ইমেইলঃchoukasinfo@gmail.com,dainikchoukos@gmail.com
Copyright © 2025 দৈনিক চৌকস. All rights reserved.