শাহিন আহমেদ
চট্টগ্রাম সিইপিজেডের গার্মেন্টস কারখানা ‘থিয়ানিস অ্যাপারেলস লিমিটেড’ এর শ্রমিকদের বকেয়া বেতন না পাওয়ায় ফের ফুঁসে উঠেছেন। সোমবার (৭ জুলাই) সকাল থেকে শতাধিক শ্রমিক ফ্যাক্টরি বন্ধ থাকা সত্ত্বেও বেপজা জোন অফিসের সামনে জড়ো হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা একত্র হয়ে স্লোগান দেন বেতন দাও, জীবন বাঁচাও। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই কর্মসূচির একপর্যায়ে দুপুরে বেপজা কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেয়, আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে বেতন পরিশোধ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
কিন্তু হতাশ শ্রমিকরা সেই প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখতে পারেননি। পরে তারা বেপজার সামনে থেকে মিছিল বের করে ফ্রি পোর্ট মোড়ে গিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। এর ফলে আগ্রাবাদ থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।
থিয়ানিস অ্যাপারেলসের ৬৯৩ জন শ্রমিকের মধ্যে বেশিরভাগই গত মে ও জুন মাসের বেতন পাননি। শ্রমিকদের অভিযোগ, গত ২৬ জুন ও ২ জুলাই বেতন দেওয়ার কথা বলেও কর্তৃপক্ষ তা দেননি। বেতন না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে দুর্বিষহ সময় পার করছেন তারা।
এর আগেও ১৬ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত টানা তিনদিন আন্দোলন করেও কোনো কার্যকর সমাধান পাননি শ্রমিকরা। প্রতিশ্রুতির জালে বন্দি হয়ে পড়েছে তাদের স্বপ্ন ও সংগ্রাম।
সিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুস সোবহান জানান, বর্তমানে কারখানাটি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য কাজ চলছে।
সূত্র জানায়, কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে এবং কোনো নতুন ওয়ার্ক অর্ডারও নেই। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বেপজার কাছে প্রায় ৩২ কোটি এবং কাস্টমসের কাছে প্রায় ৫৫ কোটি টাকার দেনা রয়েছে। বকেয়া বেতন পরিশোধ না হওয়ায় বেপজা কর্তৃপক্ষ কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেছে।
শ্রমিকদের বিক্ষোভ যেন আর বেশি উত্তপ্ত না হয়, সেই লক্ষ্যে মাঠে রয়েছেন পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠে রয়েছে।
শেষ খবর অনুযায়ী, পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে থাকলেও শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ও উদ্বেগ বাড়ছে। তাদের একটাই দাবি ,যেন দ্রুত বকেয়া বেতন পরিশোধ করে তাদের অনিশ্চয়তা দূর করা হয়।